বেরোবি সংবাদদাতা :সম্প্রতি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত দুদকের মামলায় তিন কর্মকর্তাকে বরখাস্তের করায় আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝে স্বস্তি দেখা দিলেও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতায় এবং এবং কতিপয় বেরোবি সংবাদদাতাদের দায়িত্বহীন এবং রহস্যজনক আচরণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে মুজিবপন্থী বলে পরিচিত নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ।পরিষদের আহ্বায়ক সুমাইয়া তাহসিন হামিদা এবং সদস্য সচিব মোঃ খালিদ হাসান রিয়েল এক যুক্ত বিবৃতিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর বাংলা নিউজ২৪কম সংবাদদাতা মাহফুজ ইসলাম বকুল ,দৈনিক যুগান্তরের রাব্বি হাসান সবুজ, মানবজমিনের ইভান চৌধুরী এবং ঢাকা টাইমস ২৪ কম ও ইত্তেফাকের মোবাশ্বের আহমেদ এর বিরুদ্ধে দায়িত্বের অপব্যবহার এবং ও অগঠনমূলক কার্যক্রমের অভিযোগ তুলেছেন ।বিবৃতিতে গত বৃহস্পতিবার দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত তিন কর্মকর্তাকে বরখাস্তের ঘটনায় উল্লিখিত চার সংবাদদাতার উদ্দেশ্যমূলক আচরণকে অনভিপ্রেত বলে উল্লেখ করেন।

সদস্য সচিব মোঃ খালিদ হাসান রিয়েল ডেইলি প্রেসওয়াচকে বলেন,অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে আংশিক প্রকাশ বা ক্ষেত্রবিশেষে তথ্য লুকানো কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংবাদ এড়িয়ে যাওয়ার মতো বিষয় আমাদের পরিলক্ষিত হয়েছে।উল্লিখিত সংবাদদাতাদের এহেন অপেশাদার মূলক তথা দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ড জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে বলে পরিষদের নেতৃবৃন্দ মনে করেন। যা দুর্নীতিবাজদের পরোক্ষভাবে সহযোগিতা শামিল। যখন একজন দক্ষ সুযোগ্য উপাচার্যের নেতৃত্বে সফলভাবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে তখন স্বনামধন্য গণমাধ্যমে দায়িত্বহীন কর্মীদের অশোভনীয় আচরণ উন্নয়নে বাধাগ্রস্থকারীদের উস্কে দিচ্ছে।তাই নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ এর বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে । পাশাপাশি এদের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে বিবৃতিতে উল্লেখিত চারজনকে ক্যাম্পাস সংবাদদাতার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং গনমাধ্যমের সম্পাদকদের সুদৃষ্টি কামনা করছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপাচার্যের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামাল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার আসামি হয়ে জামিনে থাকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা দুদকের মামলার আসামি হয়েও তথ্য গোপন করে পদোন্নতি পেয়েছিলেন।
সাময়িক বরখাস্তকৃতরা হচ্ছেন, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এটিজিএম গোলাম ফিরোজ, উপ-রেজিস্ট্রার মোর্শেদ-উল আলম রনি ও উপ-পরিচালক (বাজেট) খন্দকার আশরাফুল আলম।
নোটিশ সূত্রে জানা যায়, দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫২(২) ধারায় মামলা হওয়ায় সে মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয় এবং সেসময় চাকরি থেকে তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর বিজ্ঞ স্পেশাল জজ, রংপুর উক্ত মামলার অভিযোগ হতে অব্যাহতি দিলে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি দুদকের বিচারিক আদালতে এই আদেশের বিরুদ্ধে রুল জারি করে হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির হয়ে জামিনপ্রাপ্ত হন তারা।
দুদকের মামলায় জামিনে থাকার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত হওয়ায় সরকারি চাকরিবিধি (পার্ট-১)- এর বিধি ৭৩ এর নোট (২) অনুসারে চাকরি হতে অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে সাময়িক বরখাস্তকালীন বিধি মোতাবেক খরপোষ ভাতাপ্রাপ্ত হবেন। এই আদেশ আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উল্লেখিত কর্মকর্তাগণ ওই মামলার আসামি হিসেবে নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন লাভ করেন। হাইকোর্টে ক্রিমিনাল রিভিশন মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। ওই কর্মকর্তারা উচ্চ আদালতে পরবর্তী বিচারিক কার্যক্রম কৌশলে গোপন রেখে অব্যাহতির কাগজ দেখিয়ে তারা পদোন্নতিপ্রাপ্ত পদে যোগদান করে অদ্যাবধি কর্মরত রয়েছেন, যা চাকরি বিধির পরিপন্থী।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ডেইলি প্রেসওয়াচকে বলেন, এটা সাবেক উপাচার্য জলিল সাহেবের আমলের সমস্যা। দীর্ঘদিন পরে সকল কাগজপত্র হাতে এসেছে। এজন্য চাকরি বিধি অনুযায়ি তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক সুমাইয়া তাহসিন হামিদা বলেন, দুর্নীতির দায়ে জেল খাটা পূর্ববর্তী উপাচার্যের আত্মীয়-স্বজন ও অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া সুবিধাভুগীরা সব সময় অপ তৎপরতায় লিপ্ত। এদের মদদে কতিপয় সংবাদকর্মীরাও সুযোগের অপব্যবহারে মেতে উঠছে।এ বিষয়ে দেশ প্রেমিক সকলকে সজাগ থাকতে হবে। অপসাংবাদিকতাকে রুখে দিতে হবে।