করোনার কঠিন সময়েও বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি হবে না : এফএও

করোনার প্রভাবে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হলেও বাংলাদেশের জন্য আশাব্যঞ্জক বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তারা বলছে, বিশ্বে খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা থাকলেও বাংলাদেশে তা থাকবে না। বরং এই কঠিন সময়েও শস্যের উদ্বৃত্ত উৎপাদন হবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এফএও কার্যালয়

গত এপ্রিলের খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা নিয়ে বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে তারা। ‘র‌্যাপিড অ্যাসেসমেন্ট অব ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন সিকিউরিটি ইন দ্য কনটেক্সট অব কোভিড-১৯ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষ ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে চলতি অর্থবছরে চালের চাহিদা থাকবে প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ টন এবং গমের চাহিদা থাকবে ৫৫ লাখ টন। সব মিলিয়ে দানাদার খাদ্যশস্যের চাহিদা থাকবে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টন। এপ্রিলের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরে উৎপাদন দাঁড়াবে ৩ কোটি ৯৯ লাখ টন। ফলে ২৪ লাখ টন শস্য উদ্বৃত্ত থাকবে।

শ্রম সংকট, কাটা ও মাড়াই করার মতো সমস্যা থাকলেও নির্বিঘ্নে বোরো ধান কাটার কারণেই করোনা পরিস্থিতিতেও খাদ্যশস্যের নিরাপত্তা বিদ্যমান। এরই মধ্যে কৃষকের ঘরে উঠেছে দুই কোটি বোরো ধানের চাল। আমনের গত মৌসুমেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয়েছে। আর এবার বোরো মৌসুমে আবাদের ৯৫ শতাংশের বেশি ধান কাটা হয়েছে। সব মিলিয়ে চালের উৎপাদন পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় দেশে দানাদার খাদ্যশস্য উদ্বৃত্ত থাকতে যাচ্ছে।

সার্বিক আমদানি পরিস্থিতিও বেশ ভালো বলে উঠে এসেছে এফএও’র প্রতিবেদনে। করোনার মধ্যে এপ্রিল পর্যন্ত ৫৮ লাখ টন দানাদার খাদ্যশস্য আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে চার লাখ টন হয়েছে সরকারিভাবে।

তবে সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, খাদ্য ও কৃষিপণ্যের সরবরাহ ও বিপণন ব্যবস্থা ঠিক রাখা, কৃষকের পণ্যের দাম ও উপকরণ সহায়তা নিশ্চিত করা ছাড়াও বেশকিছু চ্যালেঞ্জ সামনের দিনে বাড়তে পারে।

এছাড়া ভুট্টা, তেল ও ডালজাতীয় শস্যের উৎপাদন পরিস্থিতিও লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশ ভালো রয়েছে। কিন্তু সরবরাহ ও পরিবহন সংকট ভোক্তা পর্যায়ে পণ্যের দাম বৃদ্ধি আবার কৃষক পর্যায়ে পণ্যের দাম কমার কারণ হতে পারে।

এফএও প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এরই মধ্যে মে মাসের শেষের দুই সপ্তাহে প্রায় সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম ২৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ডিএএমের তথ্য বিশ্লেষণ করে তারা দেখিয়েছে, ২৬ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে বেশকিছু পণ্যের দামে পার্থক্য ছিল।

Share: