একজন সৎ ও যোগ্য নেতা আশরাফ আলী খান খসরু

মেহেদী মাসুদঃ


 লড়াই ও সংগ্রাম যাকে কখনও কাবু করতে পারেননি তিনিই  হচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু ।নেত্রকোণা জেলা শহরের এক সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৪৯ সালের ২২ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম নূরুল ইসলাম খান (এন আই খান) এবং মাতা মরহুমা হেনা ইসলাম। তিনি নেত্রকোণা সরকারি কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তার স্থায়ী ঠিকানা- এন আই খান ভবন, মোক্তার পাড়া, নেত্রকোনা। আপাদমস্তক তিনি একজন রাজনীতিবিদ। তার নিজস্ব চিন্তা চেতনায় সবসময়  বহমান রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আদর্শ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব গুনাবলী। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাবাজন হিসেবেই  নিজেকে  ইতোঃমধ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু। যার ফলশ্রুতিতে তিনি আজ  হয়েছেন একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী। গত ৭ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেন এই রাজনীতিক।


তিনি ১৯৬৪ সালে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে কারাভোগ করেন। তিনি ১৯৬৬-৬৮ সাল পর্যন্ত নেত্রকোনা মহকুমা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক,  ১৯৬৮-৬৯ পর্যন্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৬৯-৭০ সাল পর্যন্ত নেত্রকোণা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

তিনি ১৯৭১ সালে কম্পানী কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭২-৭৩ সাল পর্যন্ত নেত্রকোনা জেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৬ সালে সামরিক সরকারের জরুরি অবস্থাকালীন এক বৎসর কারাভোগ করেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বদান করেন।

তিনি ১৯৯৭-২০০৪ সাল পর্যন্ত নেত্রকোণা জেলা আওয়ামীলীগের  যুগ্মসাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত নেত্রকোণা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কর্তৃক পুনরায় তিনি নেত্রকোণা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে এখন পর্যন্ত স্বপদের দায়িত্বপালন করছেন। ২০০৫ সালে বিএনপি কর্তৃক তার বাড়িঘরে হামলা এবং পুলিশি নির্যাতন করা হয়।

তিনি নেত্রকোনা সদরের চল্লিশাস্থ হেনা ইসলাম মহাবিদ্যালয়, নেত্রকোনা সদরের রৌহা ইউনিয়নস্থ মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুধকুড়াস্থ কামরুন্নেছা আশরাফ প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রতিষ্ঠাতা এবং নেত্রকোণা পৌরসভাস্থ দি হলি চাইল্ড কিন্ডার গার্টেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, নেত্রকোণা পাবলিক লাইব্রেরি, নেত্রকোণা রাইফেলস ক্লাব এবং শিল্পকলা একাডেমির আজীবন-সদস্য।

তার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম নুরুল ইসলাম খান (এন আই খান) ১৯৬৩ সালে পুনর্গঠিত আওয়ামীলীগের নেত্রকোনা মহকুমা আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৬৪ সালে সম্মিলিত বিরোধীদল (কপ) এর আহবায়ক ছিলেন। ১৯৬৪ সালে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নেত্রকোনা পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। ১৯৭১ সালে ২৩ মার্চ নেত্রকোনা মুক্তারপাড়া মাঠে জয়বাংলা বাহিনী কর্তৃক সালাম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭১ সালে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বাঘমারা ইউথ ক্যাম্পের ক্যাম্প ইনচার্জ ছিলেন। তিনি ১৯৮০ সালে মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত নেত্রকোনা মহকুমা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ছিলেন।

জনাব খসরুর মাতা হেনা ইসলাম নেত্রকোনা মহকুমা আওয়ামীলীগের মহিলা সম্পাদিকা ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঘমারা রিফুজি ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবিকা হিসেবে কাজ করেন তিনি। ১৯৯৩ সালে মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত জেলা আওয়ামীলীগের মহিলা সম্পাদিকা ছিলেন।

তার সহধর্মিনী কামরুন্নেছা আশরাফ দীনা নেত্রকোনা জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি। নেত্রকোণা জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সদস্য। তিনি দি হলি চাইল্ড কিন্ডার গার্টেন এর অধ্যক্ষ। তিনি নেত্রকোনাস্থ বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ডায়েবেটিক সমিতি, পাবলিক লাইব্রেরি, রাইফেলস ক্লাব এবং শিল্পকলা একাডেমীর আজীবন-সদস্য।

মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু ২০০৮ সালেও ১৫৮ নেত্রকোনা-২ (নেত্রকোনা সদর ও বারহাট্টা) এর জাতীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি দ্বিতীয়বারের মতো ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদের একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ৭ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেন। তথ্যসূত্রঃ  মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ওয়েবসাইট

Share: