স্বচ্ছতার প্রশ্নে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা
– ড. জা-দিয়া-জাগরী
সম্প্রতি সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক আইজিপি, রাষ্ট্রদূত ও সচিব জনাব নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এবং তার দেওয়া কৈফিয়ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। তার প্রকাশিত সম্পদ বিবরণী জনমনে কৌতূহল ও সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। যদিও আইনগতভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত এ ধরনের তথ্যের কোনো কার্যকারিতা নেই, তবে এটি রাষ্ট্রীয় স্বচ্ছতা ও আইনের শাসন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির অসহায়ত্ব এবং মৌলিক নাগরিক অধিকার প্রশ্নে জনমনে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে।

সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলোকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানহানিকর বলে দাবি করেছেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, অতীতের মতো এবারও রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা হচ্ছে। অতীতে এ ধরনের নজির দেখা গেছে, যেখানে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এমন ঘটনা শুধু ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়, বরং সামগ্রিকভাবে ন্যায়বিচারের ধারণাকে দুর্বল করে দেয়।
আমাদের রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে দুর্নীতি একটি স্বীকৃত বাস্তবতা। সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ ব্যক্তি—সবাই কমবেশি এই ব্যবস্থার অংশ হতে বাধ্য হন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আমরা কি এই পরিস্থিতির পরিবর্তন চাই? যদি চাই, তবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির সংস্কৃতি গড়ে তোলাই হবে মূল লক্ষ্য।
সরকারের দায়িত্ব হলো, কোনো অভিযোগকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ না দেওয়া এবং একইসঙ্গে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা। বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করাই একমাত্র উপায়, যাতে জনগণের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা বজায় থাকে। ন্যায়বিচারের স্বার্থেই নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত, কিন্তু সেটি হতে হবে পক্ষপাতহীন ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
জনগণ চায়, প্রতিটি দুর্নীতির অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। একইসঙ্গে, অভিযোগের নামে কাউকে সামাজিকভাবে হেয় করা কিংবা রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা যেন রাষ্ট্রীয় নীতির অংশ না হয়। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করাই হবে একটি গণতান্ত্রিক সমাজের প্রকৃত লক্ষণ।
১৭ জুলাই তার ভেরিফাইড ফেসবুক থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে ছিল নিন্মরূপ:”জীবন ক্ষণস্থায়ী,অথচ কত বর্ণময় !
পালাক্রমে চলে শান্তি আর অশান্তির খেলা….
এক একটা পাগলা মুহূর্ত আসে মানুষের জীবনে যখন অগ্র-পশ্চাৎ বিবেচনায় থাকে না।
মার খেলে জড়তা, লজ্জা,সংকোচ,ভয় কেটে যায়।
দূর্বল মানুষ আর সবল মানুষ।
আমি নিজকে দূর্বল ভাবি না।সারাজীবন যা ভালো মনে হয়েছে তাই করার চেষ্টা করেছি ,যখন যেখানে যাদের সাথে কাজ করেছি তাঁরা বলতে পারবেন।নিজস্বার্থে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কোন কাজ করিনি, জ্ঞানত কারো ক্ষতি করিনি – ন্যায়-অন্যায়বোধ ছিলো সামনে।
ইদানীং এই যে অপপ্রচার চলছে ….. কার বাড়ি,কার ঘর,কার ভবন,কার জমি আমার বলে চালিয়ে দিচ্ছে এই অমানুষের বাচ্চাগুলো !
অনেককিছুই মনে হয়,আন্দাজও করতে পারি – বয়স তো এখন ৭০এর কোটায় ! ”