নিভৃত পল্লীতে শিক্ষার আলো: ডা. মমতাজ বেগম ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির পথচলা

ড. এমাদুল ইসলাম, ড. দিপু সিদ্দিকী : শিক্ষা কেবলই বইয়ের জ্ঞান অর্জনের মাধ্যম নয়, এটি একটি জাতির উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার। আধুনিক বিশ্বে উচ্চশিক্ষার প্রসার এবং গুণগত মানোন্নয়নে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ডা. মমতাজ বেগম ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (মাস্ট) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ডা. এইচ বি এম ইকবাল শিক্ষা ক্ষেত্রে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। ঢাকার কোলাহল থেকে দূরে, ভৈরব উপজেলার বাঁশগাড়ী গ্রামে তিনি একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ শিক্ষা নগরী গড়ে তুলেছেন, যা নিঃসন্দেহে একটি সাহসী উদ্যোগ।

ডা. এইচ বি এম ইকবালের স্বপ্ন ও বাস্তবায়ন

ডা. এইচ বি এম ইকবাল একজন সফল শিল্পপতি, রাজনীতিবিদ এবং উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিত্ব। তিন যুগ আগে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের উচ্চশিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে হবে। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি ২০০৩ সালে রয়েল ইউনিভার্সিটি অফ ঢাকা প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরে এর স্থায়ী ক্যাম্পাস ঢাকায় স্থানান্তর করেন। এরপর, তিনি তাঁর গ্রামের আশপাশ জেলার সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য আরও বড় পরিসরে উচ্চশিক্ষার সুযোগ তৈরির সংকল্প গ্রহণ করেন এবং তারই ফলস্বরূপ গড়ে ওঠে “ডা.মমতাজ বেগম ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (মাস্ট)”। বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধাসহ প্রিমিয়ার ব্যাংকের একটি শাখা। যেখান থেকে শুধু শিক্ষার্থী নয় গ্রামবাসীরাও ব্যাংকিং সেবা লাভ করছেন। বিদ্যালয়টির পাশেই রয়েছে স্বনামধন্য জেড রহমান প্রিমিয়ার ব্যাংক স্কুল এন্ড কলেজ। একাধিকবার জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থান লাভ করেছে। আধুনিক শিক্ষা সরঞ্জামসহ অত্যাধুনিক ল্যাবের সুবিধা নিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের জীবন গড়ার তীর্থস্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে বিদ্যালয়টিকে। দরিদ্র এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেয়া হচ্ছে স্কলারশিপ সুবিধা।

ডা. এইচবিএম ইকবাল শিক্ষা ভুবন :

ডা. এইচ বি এম ইকবাল শুধুমাত্র একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাই নন, তিনি বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের অন্যতম রূপকারও। দেশের স্বাধীনতার জন্য অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে আনার পর তিনি উপলব্ধি করেন, প্রকৃত স্বাধীনতা তখনই অর্থবহ হবে যখন দেশ সুশিক্ষিত, দক্ষ ও আত্মনির্ভরশীল মানবসম্পদ তৈরি করতে পারবে। তাই তিনি শিক্ষার প্রসার ও মানোন্নয়নকে নিজের আজীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেন।

তাঁর এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যই মূলত তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। এবং ঢাকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রমনা- তেজগাঁও সংসদীয় এলাকায় বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় মূলত তাঁর সংসদীয় এলাকার শতশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন এবং আধুনিক সুবিধা সম্বলিত শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করেন। বাংলাদেশের বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিকারুন্নেসা স্কুল এন্ড কলেজ আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, উইলস লিটিল ফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজসহ নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিত্তি তাঁর হাত দিয়ে গড়ে ওঠে। তিনি একজন পরীক্ষিত এবং সফল ব্যবসায়ীও বটে। তার প্রতিষ্ঠানগুলোতে হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটি ব্যবসায় তিনি সফল হয়েছেন তাঁর সততা নিষ্ঠা এবং কর্মগুণে। তিনি অধিকতর অর্থের উৎসের দিকে মনোযোগ না দিয়ে তিনি তাঁর কাঙ্খিত স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নতি করার কাজে পূর্ণ মনোনিবেশ করেন। সেই লক্ষ্যে তিনি ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে তেজগাঁও শিল্প এলাকায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে গড়ে তুলেন রয়েল ইউনিভার্সিটি অফ ঢাকা এবং ঢাকার অদূরে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে নিভৃত পল্লীতে প্রতিষ্ঠা করেন  ডা. মমতাজ বেগম ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি।  প্রত্যন্ত এলাকার সুবিধা বঞ্চিত নারী শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে বৃত্তিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। শিশু শ্রেণী থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কারিগরি স্বাস্থ্য খেলাধুলা খাতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছেন বিস্তৃত পরিসরে। সেই লক্ষ্যে গড়ে তুলেছেন ‘ডাক্তার এইচ বি এম ইকবাল শিক্ষা ভুবন”কোলাহলমুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশের নিবিড় সান্নিধ্যে শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের এক অপার সম্ভাবনাময় ক্যাম্পাস গড়ে তুলেছেন ভৈরবে।

শিক্ষা প্রসারে নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা

কয়েকশত একরজুড়ে ছায়াসুনিবিড়, পরিকল্পিত প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে ওঠা এই শিক্ষা কমপ্লেক্সের যাত্রা শুরু হয় “জেড রহমান প্রিমিয়ার ব্যাংক স্কুল এন্ড কলেজ” প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। এটি দ্রুতই জেলার শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় এবং এখনো সেই সাফল্য ধরে রেখেছে। আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের জন্য উন্মুক্ত। দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুবিধা, এবং যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা সংযুক্ত করে তিনি শিক্ষার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টির পাশেই গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে উইমেন মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট সহ আরো কয়েকটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পাঠ্যক্রম তৈরি করা হয়েছে, যা বিশ্ব নাগরিক তৈরির উপযোগী। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অধ্যয়নরত এবং প্রবাসী বাংলাদেশি খ্যাতিমান শিক্ষাবিদদের নিয়ে গঠিত ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি অ্যাডভাইজরি বোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক কাঠামো ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন।

বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাত্রা

শুধু স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে সীমাবদ্ধ না থেকে ডা. এইচ বি এম ইকবাল উচ্চশিক্ষাকে আরও বিস্তৃত পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেন। এই লক্ষ্যেই প্রতিষ্ঠা করেন “ডা. মমতাজ বেগম ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি” এবং ঢাকার তেজগাঁওয়ে সুবিশাল পরিসরে গড়ে তোলেন “রয়েল ইউনিভার্সিটি অফ ঢাকা“।

শিক্ষাকে বাণিজ্যের ঊর্ধ্বে রেখে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের জন্য উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ডক্টর ইকবাল একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার সংকল্প করেন। সে লক্ষ্যে তিনি তাঁর জন্মস্থান কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার বাঁশগাড়ি গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন  “ডক্টর এইচ বি এম ইকবাল শিক্ষা ভুবন”

কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা ও শিক্ষার বাস্তবায়ন

শুধু ডিগ্রি প্রদানই নয়, শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা প্রদানেও তিনি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। প্রিমিয়ার গ্রুপ এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরির নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে একটি বিপ্লবী উদ্যোগ, যা শিক্ষাকে কর্মমুখী ও বাস্তবমুখী করতে সহায়ক হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান ও চ্যালেঞ্জ

ঢাকা থেকে প্রায় ৭০-৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি অনুমোদন পেতে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন, এত দূরে শিক্ষার্থীরা আসবে কিনা। সকল বাঁধা এবং সংশয় উপেক্ষা করে ডাক্তার এইচবিএম ইকবাল শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বাস্তব রূপদান করেছেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস, প্রশান্ত পরিবেশ এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলার মাধ্যমে এটি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। উল্লেখ্য ডাক্তার ইকবাল ঢাকার তেজগাঁও রমনা এলাকার সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তার সংসদীয় এলাকার স্কুল কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছেন। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় তার রয়েছে গভীর অভিজ্ঞতা। ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল এন্ড কলেজ সহ স্বনামধন্য শতশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁরই হাত ধরে আধুনিক শিক্ষাকেন্দ্র রূপান্তরিত হয়।

ডা. এইচ বি এম ইকবাল সাহেবের এই উদ্যোগ ও বাস্তবায়নের প্রায় দুই যুগ পরে হলেও সম্প্রতি অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খানের মতামত এখানে প্রতিধানযোগ্য। তিনি প্লেটোর দর্শনের উদ্ধৃতি টেনে বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় শহরের বাইরে হলে কোলাহল ও রাজনীতির প্রভাব থেকে মুক্ত থেকে নির্মোহ জ্ঞানচর্চা সম্ভব। ডাক্তার ইকবাল তাঁর কর্মের মাধ্যমে এই দৃষ্টিভঙ্গির যথার্থতা প্রমাণ করেছেন। তিনি যে একজন বহুমুখী মেধাবী ব্যক্তিত্ব তাই নয় তিনি একজন অগ্রগামী আধুনিক চিন্তাবিদ। দুই যুগেরও বেশি সময় পূর্বে তিনি যে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করছিলেন তার গুরুত্ব এত দিনে আমরা অনুধাবন করতে পারছি। শিক্ষা নিয়ে আমাদের অবহেলা এবং অদূরদর্শিতার কারণে আমরা এখনো পিছিয়ে আছি। তাঁর মতো উদ্যোক্তারা যদি শুধু শহরকেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন না করে সারাদেশে এভাবে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রে রূপান্তর করতে সক্ষম হতেন তাহলে নিঃসন্দেহে এতদিনে আমরা শিক্ষা ও গবেষণায় উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলাতে সক্ষম হতাম।

এক নজরে MUST :

 

ডা. মমতাজ বেগম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও লক্ষ্য

সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:

প্রতিষ্ঠা: ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠিত।

প্রতিষ্ঠাতা: বিশিষ্ট উদ্যোক্তা ও সমাজসেবক ডা. এইচ বি এম ইকবাল সাবেক সংসদ সদস্য।

অবস্থান: বাঁশগাড়ি, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ।

প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য:

বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (STEM) শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া।

অনগ্রসর ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা।

মেধা পাচার (Brain Drain) রোধ করে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা।

মূলনীতি ও আদর্শ:

শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশের প্রথম সম্পূর্ণ আবাসিক প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।

পরিবেশবান্ধব শিক্ষা ব্যবস্থা ও ১০০% প্লাস্টিকমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা।

গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা।

সমাজ ও অর্থনীতির উন্নয়নে সরাসরি অবদান রাখা।

প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য:

STEM শিক্ষায় বিশ্বমানের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।

সকল শিক্ষার্থীর জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশবান্ধব শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা।

২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করা।

MUST-এর মূলমন্ত্র:

“Discover, Develop, Deliver” (অন্বেষণ, উন্নয়ন, অর্জন)।

একাডেমিক প্রোগ্রাম সমূহ :

১. ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (BBA)

২. কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE)

৩. ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE)

৪. বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি

৫. ফার্মেসি

৬. ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন সায়েন্স

 

প্রতিষ্ঠাতার দৃষ্টিভঙ্গি ও লক্ষ্য:

MUST শুধুমাত্র একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়; এটি একটি আশার বাতিঘর, উদ্ভাবনের কেন্দ্র, এবং জাতীয় অগ্রগতির প্রতীক।

শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করা, গবেষণায় উৎসাহ প্রদান, এবং সামাজিক দায়বদ্ধ নাগরিক তৈরি করা MUST-এর অন্যতম লক্ষ্য।

প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ, পরিবেশ সচেতনতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার সংমিশ্রণে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

MUST তার উচ্চশিক্ষা কৌশল ও উন্নয়ন পরিকল্পনার মাধ্যমে বাংলাদেশকে

২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

 

১. সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা – নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীদের জন্য সহজলভ্য ও মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করা।

২. গবেষণা ও উদ্ভাবনের প্রসার ঘটানো – শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী শিক্ষা দিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া।

৩. প্রকৃত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা – রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, মুক্ত চিন্তাধারার ভিত্তিতে শিক্ষার ব্যবস্থা করা।

৩. আউট-কাম বেজড লার্নিং নিশ্চিত করা – শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শেখানোর জন্য বাস্তবভিত্তিক শিক্ষানীতি গ্রহণ করা।

৪. বিশ্ববাজারের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষার্থী তৈরি করা – টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (SDG) অনুসারে কর্মমুখী শিক্ষা প্রদান করা।

আউট কাম-বেজড লার্নিং

বিশ্ববিদ্যালয়টি গবেষণার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। উন্নত শিক্ষা নিশ্চিত করতে একাডেমিক কোর্সের পাশাপাশি গবেষণার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আধুনিক ল্যাব, ডিজিটাল লাইব্রেরি ও ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া সংযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া, উদ্যোক্তা উন্নয়ন কেন্দ্র (Entrepreneurship Development Center) প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনাও রয়েছে।

সুযোগ-সুবিধা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

আধুনিক ক্যাম্পাস: অত্যাধুনিক শ্রেণিকক্ষ, গবেষণা ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাব এবং লাইব্রেরির সুবিধা।

হোস্টেল সুবিধা: দূরবর্তী শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা।

ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম: ব্লেন্ডেড লার্নিং কৌশলের মাধ্যমে অনলাইন ও অফলাইন ক্লাসের সংমিশ্রণ।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশিক্ষণ: নিয়মিত শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা আয়োজন।

জাপানের মত একটি উন্নত দেশের শিক্ষাবিদদের সংযুক্ত করা হচ্ছে। বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোলাবারেশন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে জাপানের একটি স্বনামধন্য উচ্চশিক্ষা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক অধ্যাপক এমাদুল ইসলাম প্রিমিয়ার গ্রুপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছেন। তিনি প্রিমিয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ডা. এইচবিএম ইকবাল সাহেবের বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা। তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় মতামত পরামর্শ গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়টি ধাপে ধাপে এগিয়ে চলছে। দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দুজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

রয়্যাল ইউনিভার্সিটি অফ ঢাকা ‘র উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর এএনএম মেশকাত উদ্দিন এবং ডা. মমতাজ বেগম ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি তে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ আজিজুল হক।

ডা. মমতাজ বেগম ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি  বর্তমানে ছয়টি প্রোগ্রামে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে : বিবিএ, সিএসই,ইইই, ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকিউলার বায়োলজি, ডিপার্টমেন্ট অফ ফুড এন্ড নিউট্রিশন সাইন্স।

অপর দিকে ঢাকা তেজগাঁও শিল্প এলাকায় স্হায়ী ক্যাম্পাসে রয়েল ইউনিভার্সিটি অফ ঢাকায় বিবিএ, এমবিএ, বিএসসি ইন সিএসই, এমএসসি ইন সিএসই, ইইই(প্রক্রিয়াধীন), বিএ অনার্স ইন ইংলিশ, ব্যাচেলর্স এন্ড মাস্টার্স প্রোগ্রাম ইন হোটেল ট্যুরিজম এন্ড ম্যানেজমেন্ট, এমএসসি ইন লাইব্রেরী ম্যানেজমেন্ট এন্ড ইনফরমেশন সাইন্স, ব্যাচেলার অফ এডুকেশন ( বিএড), মাস্টার অফ এডুকেশন (এম এড) প্রোগ্রামসমূহে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন খুব শীঘ্রই রয়্যাল ইউনিভার্সিটি অফ ঢাকা এবং ডা. বেগম মমতাজ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয় দুইটি আন্তর্জাতিকমানের বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হবে।

ডা.মমতাজ বেগম ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি এবং রয়াল ইউনিভার্সিটি অফ ঢাকা নিছক দুইটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়;  বরং একটি দৃষ্টিভঙ্গি, একটি আদর্শ। এটি একটি প্রমাণ যে, যদি সঠিক পরিকল্পনা ও দৃষ্টিভঙ্গি থাকে, তবে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা সম্ভব। ডা. এইচ বি এম ইকবাল তাঁর স্বপ্নের শিক্ষানগরী “ডা. এইচ বি এম ইকবাল এডুকেশন ওয়ার্ল্ড” বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব হলো, তাঁর এই উদ্যোগকে সফল করতে গবেষণামুখী শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির সুনাম ছড়িয়ে দেওয়া।

 

এক নজরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটোগ্যালারী:

 

 

 

 

 

 

লেখক:  ড. এমাদুল ইসলাম, ইন্টারন্যাশনাল স্কলার ও উপদেষ্টা- মাস্ট এন্ড আর ইউ ডি। অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক (দিপু সিদ্দিকী) ডিন – কলা অনুষদ রয়েল ইউনিভার্সিটি অফ ঢাকা। email: a.siddique@royal.edu.bd

Share: