বাবু মশাই কহিলেন…
আচ্ছা জনার্দন…
সারাদিন এতো কষ্ট করো…
তবুও মুখে প্রশান্তির হাসি লেগে থাকে…
কেন… ?
কি সুখের তরে এমন হয় বলো…?
জনার্দনের ঠোঁটে মৃদু বাঁকা হাসি…
বাবুমশাই… তোমার বুঝি হাসি হারিয়ে গেছে…?
তুমি বুঝি হাসতে জাননা…?
না জনার্দন… সারাদিন শুধু কাজ আর কাজ…
এতো ব্যস্ততা… হাসি আসার সময় কোথায়…?
আচ্ছা বাবু মশাই…
তুমি কি রাস্তার ধারে বসে মাটির ভারে কখনও চা খাও…?
না…
তুমি কি… বেশি করে কাঁচা ঝাল দিয়ে… কুচি করে পেঁয়াজ কেটে…
খুব করে সরিষার তেল দিয়ে ঘটি গরম খেয়েছ…?
না… সে আবার কি…?
সকালে উঠে… ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা জলে ফেলে
কাঁচা কিম্বা শুকনো লংকা দিয়ে…
সাথে থাকে বাংলার কাঁচা পেঁয়াজ…
পান্তা ভাত খেয়েছ কি কখনও…?
উহঃ সে কি খাওয়া যায়…?
কাগজের ঠোঙ্গায় দশ টাকার বাদাম কিনে
প্রিয়তমার হাত ধরে… এক মাইল হেটে গিয়ে
শান্ত কোন জলাশয়ের পাশে…
কিম্বা কোন গাছের ছায়ায় বসে…
গুটি গুটি চিনে বাদাম প্রিয়ার হাতে তুলে দিয়েছ কি…?
সময় কোথায় জনার্দন…?
হায়রে বাবু মশাই…
কি হবে এই জীবনে…?
ছুটছো… শুধু ছুটেই চলেছো…
যদি সুখই না পেলে…?
কিসের তরে এতো ছোটা…?
আচ্ছা বাবু মশাই…
তুমি কাজ থেকে ফিরে এলে
তোমার বউ কি কখনও তার শাড়ীর আঁচলে
তোমার মুখের ঘাম মুছিয়ে দেয়…?
না আমিতো ঘামাই না…
এসি গাড়ীতে যাওয়া আসা করি…।
কিন্তু বাবুমশাই আমি যখন মাঠ থেকে ফিরি
ঘামে ভেজা থাকে আমার মুখ… আমার শরীর…
আমার বউ এসে তার ঘামে ভেজা গন্ধ শাড়ীর আঁচলে
আমার মুখ মুছিয়ে দেয়…
সে গন্ধ তোমরা সহ্য করতে পারবেনা…।
পারফিউমের ঘ্রাণে… তোমরাতো জীবন্ত গন্ধকে ঢেকে দাও…
কিন্তু ঐ শাড়ীর আঁচলে… আমি গন্ধ পাইনা…
আমি পাই ভালোবাসার ছোঁয়া…।
তাকিয়ে থাকে বউ… আমার মুখ পাণে…
তার ঐ জোড়া চোখে আমার শ্রমের কষ্ট থাকে…
সুখ কোথায় বলেছিলে না…?
ঐ চোখেই আমার সব সুখ…
ঐ চোখই আমার ভালোবাসা…
ঐ চোখই আমার সকল সুখের ঠিকানা…
আমার জীবনের প্রশান্তি…।
ভালোবাসা আর সুখ প্রিয় জনের কাছে খুঁজে নিতে হয়…।