সহকর্মীর দৃষ্টিতে একজন দূরদর্শী উপাচার্য এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
কোভিড- ১৯ মহামারীর কারণে সারা বিশ্ব এখন বিপদগ্রস্ত, এ সংকট-কালীন সময়ে পৃথিবীর প্রায় সকল কাজ চলছে অনলাইনের মাধ্যমে। আজকের পৃথিবীতে প্রযুক্তি ছাড়া একটা মুহূর্তও চলা সম্ভব নয়। শিক্ষা এবং অফিসিয়াল কাজে প্রযুক্তি আরও বেশি প্রয়োজন। প্রসঙ্গত মনে পড়ছে আমাদের বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যারের কথা। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এ যোগদানের পর থেকেই অনলাইনের মাধ্যমে কাজ করা শুরু করেন। মাননীয় উপাচার্য স্যার এ ব্যাপারে সব সময় গুরুত্ব দিয়েছেন বলেই আমরা ক্লাস বা অফিসে আগের চেয়ে অনেক বেশি সফলতা অর্জন করতে পেরেছি। সারা পৃথিবী এখন আমাদের হাতের মুঠোয়। আমরা যেকোনো কাজের জন্য অনলাইন ব্যবহার করে সফলতা দেখতে পাচ্ছি।
এটা হয়ত আমরা কখনই বিশ্বাস করতাম না যদি না আমাদের সামনে করোনার মত এমন মহামারী এসে হাজির হত। কিছুদিন আগেও আমাদের অনেকে প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যারের অনলাইন ভিত্তিক দূরদর্শন মূলক এ সকল কাজকে একধরণের গলা বাজি করে, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ও বিভিন্নভাবে হেয় করে নেতিবাচক ভাবে শিক্ষার্থী ও দেশবাসীর কাছে প্রচার করেছে। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশ এখন প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যারের অনলাইন ভিত্তিক কর্মকাণ্ডের দিকেই যাচ্ছে শুধু নয়, অলরেডি চলে গেছে। এখন এ বাস্তবতাকে এড়িয়ে চলার কোন সুযোগ নেই। আমরা হয়তো আর আগের জায়গায় কখনোই ফিরে যেতে পারব না। ধীরে ধীরে আমরা এখন প্রমাণ পাচ্ছি অনলাইন ভিত্তিক কার্যক্রম চালু করা কতটা দূরদর্শী চিন্তা ছিল।
এ প্রসঙ্গে একটি কথা প্রণিধানযোগ্য আমরা হয়তো পরিবর্তিত এ পৃথিবীর সাথে এত দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারতাম না যদিনা আমাদের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যার নতুন নিয়োগকৃতদের জন্য গঠনমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না করতেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে একজন প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে এসকল প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে পেরে সম্মানিত বোধ করি এবং এটি আমার তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেছে। আমি আমার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে যেসকল জ্ঞান অর্জন করেছি এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সে জ্ঞান আরও সমৃদ্ধ হয়েছে।
যদিও এ ধরণের প্রশিক্ষণ বাংলাদেশের মধ্যে আমাদের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এ প্রথম। এ প্রশিক্ষণ আমাদের জন্য শুধু জ্ঞান বৃদ্ধিই করেনি বরং এটা আমাদেরকে শিখিয়েছে একজন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীর আচার, আচরণ কেমন হওয়া উচিত। কি তার দায়িত্ব কর্তব্য, কোন ধরণের চেইন অব কমান্ড সে অনুসরণ করবে। প্রথম দিকে একটু অস্বস্তিদায়ক মনে হলেও দিন যত গড়িয়েছে আমি বুঝেছি এটা কতটা দরকারি ছিল।
বুনিয়াদী প্রশিক্ষণের কিছু বিষয় যেটা আমার কাছে একজন মেয়ে অংশগ্রহণকারী হিসেবে প্রচণ্ড রকমের ভালো লাগা কাজ করেছে সেটা হল আমাদের প্রশিক্ষকগণ অফিস এ্যাটিকেট, ম্যানার, ফুড হ্যাবিট, খাবারের কায়দা-কানুন, অফিস ব্যবস্থাপনা, সাধারণ জ্ঞান, ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন সহ যাবতীয় সবকিছু হাতে-কলমে শিখিয়েছেন। এক্ষেত্রে একটি কথা সর্বাগ্রে প্রণিধানযোগ্য যে, আমাদের শ্রদ্ধেয় উপাচার্য স্যার সবসময় আপডেট নিতেন কখনও ভার্চুয়ালি আবার কখনও নিজে ক্লাসে উপস্থিত থেকে। উপাচার্য স্যার এর এমন মনিটরিং এর কারণে আমাদের প্রত্যেককে সতর্ক থাকতে হয়েছে, কোথাও কোনো ভাবে ফাঁকি দেওয়ার উপায় তিনি রাখেননি।
আমাদের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যার তদারকির মাধ্যমে এবং তার নিজ পর্যবেক্ষণে আমাদের জন্য কোন ধরণের প্রশিক্ষণ দরকার সেই অনুযায়ী বিস্তারিত বিচার বিশ্লেষণ করে রোস্টার ভিত্তিতে বাংলাদেশের নামি-দামি বরেণ্য ব্যক্তিদেরকে রিসোর্স পার্সন হিসেবে এনেছেন এবং আমাদের ক্লাস করিয়েছেন । সত্যি কথা বলতে জীবনে হয়তো এমন মানুষের ছাত্র হতে পারবো এমন আশাও আমরা করিনি। সবচেয়ে বড় কথা, স্যার আমাদের সব কাজ নিজে নিজে করার বা করতে পারার তাগিদ দিয়েছেন এবং করিয়েছেন। যেমন প্রতি মাসে বেস্ট পার্টিসিপেন্ট অনুষ্ঠান আয়োজন করা। মজার বিষয় হচ্ছে এখানে খাবারের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা সবকিছু আমাদের নিজেদেরই করতে হয়েছে।
এ প্রশিক্ষণ থেকে আমার ব্যক্তিগত যে উন্নয়ন ঘটেছে সেটি হল সময় জ্ঞান। এখানে যেহেতু সময় মত উপস্থিত থেকে লিখিত ও ভার্চুয়ালি রিপোর্ট করতে হতো এটা এক ধরণের জবাবদিহিতাও শিখিয়েছে। এছাড়াও স্যার আমাদের বাংলাদেশের ঐতিহাসিক অনেক স্থান ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান দেখিয়েছেন। যা আমরা একা একা দেখতে পারতাম না। আমার এখন নিজেকে অনেক সমৃদ্ধ মনে হয়। আমি মনে করি, প্রশিক্ষণ ছাড়া কর্মক্ষেত্রে সফল হওয়া সম্ভব নয়। সেজন্য এটাই সত্য যে, মাননীয় উপাচার্য স্যারের এ সকল অসাধারণ উদ্যোগের কারণে আমরা প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে যে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করেছি এটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্র্যান্ডিং সম্বৃদ্ধ ও পৃথিবী খ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। মাননীয় উপাচার্য স্যার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে আলোকিত ভুবন এর অভিমুখে নিয়ে যাচ্ছেন। নিজেকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ দেবার জন্য মাননীয় উপাচার্য স্যারকে আমার পক্ষ থেকে জানাই অসীম শ্রদ্ধা এবং স্যালুট।
যিনাতুন নেসা,
অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স সেল (আই কিও এ সি),
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।