
“কিরে, ভাই হঠাৎ প্রেমে ছ্যাকা খাইলেননি? দুনিয়ার ব্যেবাগ মাইয়্যাগো চরিত্রে কালি ল্যেপতাছেন?”
“ওই স্বর্ণগর্দভ, জানিস এইটা কার স্বগোক্তি?”
“কার আবার আপনের। কাহিণী কী, ভাবী কি আইজকাল গভীর রাইত কইরা বাড়ী ফিরতাছে? নাকি পিরাইই সেলুলার ফোনের মডেল চেঞ্জ করতাছে?”
“তোরা আছিস তোদের, ওই পরকীয়ার সুড়সুড়ি নিয়ে। কোথায় কার স্ত্রী’কার সাথে তার পুরানো প্রেমিক রস সিঞ্চন করছে!! আরে. বুড়বক আমি বলছিলাম পৃথিবীর, সর্ব কালের, সর্ব শ্রেষ্ঠ কবি নাট্যকার ষোড়শ-শ’তকের মহান লেখক, উইলিয়াম শেক্সপীয়ারের কথা।”
“এইডা কি কন, আমাগো শরৎ চন্দ্রের মতো, মহাকবি শেক্সপীয়ার আবার কবে দুই’নাম্বার মাইয়াগো লগে টাইম পাশ করলো!! না আইজ পর্যন্ত আমি কুনো নাটক নভেল প্রবন্ধে তো হুনি নাই পৃথিবীর, সর্ব কালের, সর্ব শ্রেষ্ঠ কবি নাট্যকার ষোড়শ শ’তকের মহান লেখক, উইলিয়াম শেক্সপীয়ার ছেরীগো লগে…”
“আসলে ভাই তোর মতো অশিক্ষিত গাড়লদের কিছু বলতে যাওয়া মানে অসীম ধৈর্য্যের পরীক্ষা দেওয়া। র্ধৈয্যং স্মরণং গচ্ছামী…”
“আমি আবার কখন র্ধৈয্যচুত্যি ঘটাইলাম?? আপনিই কইলেন “মেয়ে মানেই দুই’নাম্বর” আপনে কোন এই কথা কোইলেন জানতে গেলেই আমি, গাড়ল,
অশিক্ষিত, চ্যাঁড়াল আরো কোতো কিছু কোইবেন কে জানে?”
“আরে. ভাই এটা পৃথিবীর, সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ কবি নাট্যকার লেখক, উইলিয়াম শেক্সপীয়ারের হ্যামলেট নাটকের প্রথম অঙ্কের, দ্বিতীয় দৃশ্যে নায়ক হ্যামলেটের প্রথম স্বগোক্তি,” ফ্রেইলটী দাই নেম ইজ উওম্যান…” এটার বাংলা করলে দাঁড়ায় “নারী মানেই ব্যাভিচারী…”
“তো হঠাৎ ডেনমার্কের, যুবরাজ হ্যামলেট দু’নিয়ার ব্যেবাগ মাইয়ারে, ছিনাল নারী কোইলো ক্যান? তায়লে তো হ্যের, মায়েভী ছিনাল নারীগো. দলে নাম লিখাইবো??”
“জ্বী, তোর কথাই ঠিক, হ্যামলেটের, পিতার মৃত্যুর পর হ্যামলেটের মা, যখন চল্লিশার আগেই মাত্র ত্রিশ দিনের মাথায়, হ্যামলেটের আপন চাচা ক্লদীয়াকে বিয়ে করলো, তখন হ্যামলেট বড় বেদনায় কাতর হয়ে বলে উঠলেন, “ফ্রেইলটা দাই নেম ইজ উওম্যান…” অর্থাৎ” নারী মানেই ব্যাভিচারী…।”
“হেঃ হেঃ আমি অনেক ঘরের বৌ’রে, দেখছি পোলারে. স্কুলে দিয়া চট্ কইরা একটু ঘুইরা আয়া পড়ে… হিঃ হিঃ হিঃ”
“থাক থাক তোমাকে আর বাংলার আদিরসের ফিরিস্তি দিতে হবেনা। “ফ্রেইলটী দাই নেম ইজ উওম্যান… বলতে এখানে শ্রদ্ধেয় নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপীয়ার তোর ভাষায় শুধু আদিরসের কথা বলেননি, “ফ্রেইল” এই ইংরেজী শব্দটার আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে,” ভঙ্গুর, দূর্বল, পলকা,
নৈতিক দুর্বলতাগ্রস্ত, অথর্ব, অক্ষম, তাই শুধু শুধু নারীদের, কেবল দৈহিক চাহিদার কথা ভাবলে হবে না! “ফ্রেইলটী দাই নেম ইজ উওম্যান…” এই কথার ব্যাপ্তি অনেক সুদূর, প্রসারী।”
“ওম্মায়ো এইডা আপনে কি কন! আমি তো আজীবন ভাবতাছি “ফ্রেইলটা দাই নেম ইজ উওম্যান…” মানে মহাকবি হুদা হুদি ছেরীগো উরুসন্ধির গল্প
করতাছে অহন তো দেহী না সারা দুনীয়া এই “ফ্রেইলটীর ভিতর হান্দায়া গেছে গা!!”
“এ আবার কী, সারা পৃথিবী “ফ্রেইলটীর” ভেতরে, মানে কী?”
“মাইনে তো অক্করে, সিম্পেল, হালায় যেই ব্যাডা টাকার প্রতি দূর্বল, মানে “ফ্রেইল”। যেমন, খামীর হুচেন খামু, হুমুন্দির, পুত খাটের নিচে বস্তা বস্তা ট্যাকা থুয়াদিছে, মাইনে হালায় ট্যাকার প্রতি “ফ্রেইল” দূর্বল। তারপর দ্যেখেন নাই, ওই যে খাল কাটতে যায়া শুভ্র, লাল গালিচা বিছায়া ড্রেজার দিয়া প্যাঁক উঠাইতেছে, মাইনে উপদেষ্টারা লাল গালিচার প্রতি দূবর্ল মানে, “ফ্রেইল”।”
“থাক থাক এ’নিয়ে মানে” ফ্রেইলটী দাই নেম ইজ উওম্যান…” নিয়ে বেশি কথা বলিসনা তোকে না আবার ভুল বুঝে, মহিলা উপদেষ্টারা এ্যারেষ্ট ম্যারেষ্ট করে।”
আরে, না উনারা উচ্চ শিক্ষিত উনারা বুঝবেন, যে “ফ্রেইল” মানে তাগোরে ব্যাক্তিগত ভাবে বলা হয় নাই।”
” “বলা তো যায়না, মানুষ মাত্রেরই ভুল হয়। মহিলা উপদেষ্টারা তোকে এ্যারেষ্ট করতে পারে। এ্যাকসিডেন্ট ইজ এ্যাকসিডেন্ট।”
“আরে. যাউকগা হোগো কথা ছাড়েন, আমিতো ভাবতাছি অন্যকথা, আপনে যে মিয়া কোইলেন “ফ্রেইল” মানে ভঙ্গুর, দূর্বল, পলকা, ব্যাভিচারী, নৈতিক দুর্বলতাগ্রস্ত, অথর্ব, অক্ষম, জরাগ্রস্ত, ক্ষণস্থায়ী, অসতী…”
“আরে. এটা আমি বলবো কোনো, এটা শৈলেন্দ্র বিশ্বাসের সম্পাদনায় “সংসদ ইংলিশ বাংলা ডিক্সেনারি”র শব্দার্থ যা আজথেকে প্রায় অর্ধশতাব্দী পূর্বে প্রকাশিত!!”
“আপনে যাই কন ভাই, ডাক্তার সাঁব যদি বুইজ্বালায় যে আপনে হোরে, অথর্ব, অক্ষম, জরাগ্রস্ত, ক্ষণস্থায়ী বইল্লা বুলি করতাছেন! তায়লে কোইলাম খবর আছে, ওই হালায় হ্যামলেট কন আর পৃথিবীর, সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ কবি নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপীয়ার কন কেউই আপনেরে বাঁচাইতে পারবোনা।” “ধাৎ তোর যা কথা। উনি নিজে বলেছেন আপনারা বেশি বেশি সমালোচনা করুন আমরা ভুল শোধরাবার সুযোগ পাবো। তাছাড়া উনি এক মহান ব্যক্তিত্ব যিনি গরীবের খুব কাছের লোক। উনি গরীবের দুঃখ বুঝেন, তাই বলেছিলেন পৃথিবীর দারিদ্র যাবে জাদুঘরে। উনি গরীবের খুব আপনরে গরীবের খুব আপন।”
“কথাটা ঠিকই কোইছেন পৃথিবীতে সবচেয়ে আপন লোকটাই আপনের পিছন থ্যেইক্কা ছুরি মারে। মনে নাই জুলিয়াস সিজাররে, যখন তার পালিত পুত্র ব্রুটাস ডেগার দিয়া পাড় দিলো, তখন গ্রেট সিজার কোইছিলো, “দাউ টু ব্রুটাস…”
“আরে.না বর্তমান সরকার, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মতো বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুম খুন কিছুই করছে না। কান চাপাতিতে থাপ্পড় মেরে কার্টুনিষ্ট মারছেনা। তাই তোরা মনের আনন্দে সরকারের বাক স্বাধীনতা এনজয় কর…”
“ঠিক আছে ঠিক আছে, আপনে আপনের বাক স্বাধীনতা এনজয় করেন আমি যাই লাল-গালিচা নদীর পাড় থ্যেইক্কা শুবাতাস সেবন কইরা আসি, যাই…
বাই…