বিশিষ্টজনদের রয়েল ইউনিভার্সিটি পরিদর্শন।। কথাশিল্পী শওকত ওসমান নির্দ্বিধায় সত্য আর সুন্দরের কথা বলতেন- অধ্যাপক ড. কাশেম মজুমদার 

।।বিশিষ্টজনদের রয়েল ইউনিভার্সিটি পরিদর্শন।।

কথাশিল্পী শওকত ওসমান নির্দ্বিধায় সত্য আর সুন্দরের কথা বলতেন- অধ্যাপক ড. কাশেম মজুমদার 

স্টাফ রিপোর্টার: রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা’র উপাচার্য ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক সদস্য অধ্যাপক ডক্টর এম আবুল কাশেম মজুমদার বলেছেন,কথাশিল্পী শওকত ওসমান নির্দ্বিধায় সত্য আর সুন্দরের কথা বলতেন।সমাজের সব জঞ্জাল, অন্যায় ও অনিয়মের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার। তাঁর আধুনিক আর বাস্তবধর্মী লেখনি অবহেলিত নিষ্পেষিত মানুষের কথা বলতো।

বাংলা সাহিত্যের অমর কথাশিল্পী শওকত ওসমানের কনিষ্ঠ পুত্র বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক অধ্যাপক জা-নেসার ওসমান এবং ফেনী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান শিল্পপতি ডক্টর এ কে এম সহিদ এর সম্মানে আয়োজিত সভায় একথা বলেন তিনি।বুধবার বিকেলে রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা’র তেজগাঁওয়ে নবনির্মিতব্য ভবন পরিদর্শন করেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা অধ্যাপক জা-নেসার ওসমান ও ডঃ এ কে এম শহীদ‌। অতিথিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পৌঁছালে রয়েল ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার ডক্টর জামিল আহমেদ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান। অতিথিদ্বয় পরে রেজিস্ট্রার ডক্টর জামিল আহমেদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ডঃ দিপু সিদ্দিকীকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী ও বিভিন্ন ক্লাসরুম পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। অতিথিদ্বয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে সুপরিসরে রয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস দেখে অভিভূত হন তারা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর এম আবুল কাশেম মজুমদার রয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পিত ৩০তলা ভবন সম্পর্কে বিভিন্ন দিক অতিথিদের সামনে তুলে ধরেন। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির আদলে রয়েল ইউনিভার্সিটি নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা দেখে অতিথি এবং উপস্থিত শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অভিভাবকরা উচ্ছ্বসিত হন। তারা আশা প্রকাশ করেন রয়েল বিশ্ববিদ্যালয় একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নদ্রষ্টা ডাক্তার এইচ বি এম ইকবালের ভূয়সি প্রশংসা করেন।

পরিদর্শন শেষে সংক্ষিপ্ত পরিসরে আয়োজিত এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর আবুল কাশেম মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ডঃ জামিল আহমেদ। সভার শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে জা-নেসার স্যার ওসমানকে উত্তরীয় পরিয়ে সম্মান জানান উপাচার্য মহোদয় এবং ডক্টর কে এম শহীদকে উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. জামিল আহমেদ।

অতিথির অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে জা-নেসার ওসমান, রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকার উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের প্রশংসা করেন। তিনি আরো বলেন,নিঃসন্দেহে কালোত্তীর্ণ ও প্রশংসাযোগ্য কাজ করে চলেছেন ডাক্তার এইচবিএম ইকবাল ‌। একটি সুন্দর এবং অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণ করে শিক্ষার পরিবেশ তৈরির মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান তিনি।

ডক্টর কে এম শহিদ বীরমুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার এইচ বি এম ইকবালের ভূয়ষী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন দেশ মুক্ত করে তিনি ক্ষান্ত হননি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। একটি সুশিক্ষিত এবং অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। তিনি অলাভজনক খাতে বিনিয়োগ করছেন শুধুমাত্র একটি সুশিক্ষিত জাতি গঠন করার জন্য। এইজন্য তিনি আন্তরিক অভিনন্দন এবং শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডক্টর এইচবিএম ইকবালকে।

ডক্টর কে এম শহীদ কে উত্তরীয় পরিয়ে দিচ্ছেন রয়েল ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার ড. জামিল আহমেদ

ডক্টর জামিল আহমেদ বলেন শুধু পুঁথিগত বিদ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীরা আগামী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবে না ‌। জা-নেসার ওসমান এবং ডঃ কেএম শহীদদের মতো অভিজ্ঞ এবং বাস্তবধর্মী ব্যক্তিত্বদের কে আমরা শিক্ষার্থীদের মাঝে হাজির করতে চাই।

ডক্টর দিপু সিদ্দিকী বলেন, পৃথিবী থেকে একজন জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তির প্রস্থান হলে একটি জীবন্ত লাইব্রেরীর পতন হয়। তাঁরা বেঁচে থাকতেই তাদেরকে তাদেরকে, তাদের জ্ঞানকে শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থিত করতে হবে। তাদের লব্ধ অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান নতুন প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারণ করতে হবে।

জহরত আরা বলেন, এ ধরনের গুণীজনদের আরও বেশি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণ জানাতে হবে।

ডক্টর মলয় সরকার বলেন, অতিথিদের দেখে আমরা উৎসাহিত। আমাদের শিক্ষার্থীরা আনন্দিত।

সাহিদুর রহমান খান বলেন, শওকত ওসমানের মতো মনীষীরা শত বছরে একবারই পৃথিবীতে আসেন। আজ তাঁর আত্মজ জা-নেসার ওসমান স্যার আমাদের মাঝে এসেছেন এটা একটা ইতিহাস। তাঁকে পেয়ে আমরা আনন্দিত এবং অনুপ্রাণিত।

মালবিকা মজুমদার বলেন, দুজন খ্যাতিমান এবং সফল ব্যক্তিত্বের আগমন আমাদেরকে এবং আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে আরো বেশি অনুপ্রাণিত করবে।

সভাটি সঞ্চালনা করেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডক্টর দিপু সিদ্দিকী। অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন কলা অনুষদের ডিন ডঃ দিপু সিদ্দিকী, বাণিজ্য অনুষদের ডিন শাহিদুর রহমান খান, প্রক্টর মলয় সরকার, ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান জহরত আরা, ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান সালমা হানি, সহকারি অধ্যাপক মালবিকা মজুমদার, মার্কেটিং এন্ড ব্র্যান্ডিং ডিপার্টমেন্টের তাসনিমা ক্রোরি।

 

সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার দেলোয়ার হোসেন সহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

অতিথিদের আগমনে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অতিথিদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়।

অতিথিদের আন্তরিকতা এবং উৎসাহ মূলক বক্তব্য শুনে উপস্থিত সবাই আপ্লুত হন এবং আবারও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার জন্য আগাম আমন্ত্রণ জানান।

Share: