৫১ বিলিয়ন ডলারের আন্তর্জাতিক ঋণ পরিশোধ করতে অপারগ শ্রীলঙ্কা। মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) শ্রীলঙ্কার অর্থ মন্ত্রণালয় দেশটিকে খেলাপি ঘোষণা করেছে।
শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে। চলমান এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন সব শ্রেণিপেশার মানুষ। তাদের অভিযোগ রাজাপক্ষে সরকার শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী। অর্থনীতির উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আজ দেশটির এমন দুর্দশা বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, দুর্নীতিবাজ রাজাপক্ষে সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থামাব না। তাদের কারাগারে যেতে হবে এবং আমাদের অর্থ ফেরত দিতে হবে।
তবে দেশবাসীকে বিক্ষোভ থামানোর আহ্বান জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। সোমবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, দেশকে বাঁচাতে চাইলে সবাইকে বিক্ষোভ থামাতে হবে, ধৈর্য ধরতে হবে। দেশটিতে জনরোষ কমাতে এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাখ্যা দিতেই এই ভাষণ দেন তিনি।
মাহিন্দা রাজাপক্ষে আরও বলেন, আমি ও আমার ভাই দু’জনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি পরিস্থিতি সামাল দিতে। বিরোধী দলগুলোকে আমাদের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছিলাম। তারা রাজি হয়নি। সব দায়-দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হচ্ছে। আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। তবে দুই তিনদিনের মধ্যেই সমাধান সম্ভব না হলেও যত দ্রুত সম্ভব আমরা পরিস্থিতির উন্নতির চেষ্টা করব।
করোনা মহামারি ঠেকাতে দেওয়া লকডাউনকেই বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী করেছন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি আরও বলেন, লকডাউনের কারণেই দেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়েছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বিদ্যুৎ সংকট শিগগিরই সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তবে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী যতই দ্রুত সংকট সমাধানের আশ্বাস দেন না কেনো, ৫১ বিলিয়ন ডলারের আন্তর্জাতিক ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার অর্থ মন্ত্রণালয় দেশটিকে ঋণ খেলাপি বলে ঘোষণা দেয়। পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে শ্রীলঙ্কা সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ঋণ পাওয়া জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে ক্ষমতাসীন জোট সরকারের শরিক দল প্রস্তাব দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের। যেখানে সব দলের প্রতিনিধিই থাকবে। তবে এ বিষয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট কেউ কোনো মন্তব্য করেননি।