তৎকালীন প্রশাসন ও বিচার বিভাগ ২১ শে আগস্টের ঘটনার দায় এড়াতে পারে না।বিএনপি সরকারের ভূমিকা ছিলো নিন্দনীয় ও প্রহসনমূলক-ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর এমপি।।২১ শে আগস্টের ঘটনা জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার প্রচেষ্টা : ড. কলিমউল্লাহ

আইরিন নাহার/ডেইলি প্রেস ওয়াচ রিপোর্ট: জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদের (জানিপপ) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৫ আগস্টে ঢাকায় অবস্থানরত পরিবারের সদস্যদেরসহ হত্যা করে ঘাতকরা ক্ষান্ত হয়নি। তাঁর পরিবারের বাকি দুইজনকে হত্যার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। অবশেষে ঘাতকরা ২১ শে আগস্টে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য জঘন্যতম বোমা হামলা চালায়।

শনিবার (২১ আগস্ট) জানিপপের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভার একাংকাশ। ডেইলি প্রেস ওয়াচ ।

শনিবার (২১ আগস্ট) জানিপপের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় ড. কলিমউল্লাহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।

আলোচনা সভায় ভারত থেকে সংযুক্ত হয়ে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন টিভি ব্যক্তিত্ব, কলামিস্ট ও গবেষক পিনাকী ভট্রাচার্য। তিনি বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালী জাতির জন্য স্বাধীনতা অর্জনের দিকনির্দেশক হিসেবে তুলনা করেন। এছাড়াও তিনি বঙ্গবন্ধু এবং নেতাজী সুভাসচন্দ্র বসু কর্তৃক স্বজাতির জন্য তাঁদের যে অবদান তার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেন।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্তরাস্ট্রের বস্টন থেকে বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাবেক সফল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ২১ শে আগস্টের নারকীয় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর এমপি। তিনি বলেন, তৎকালীন প্রশাসন ও বিচার বিভাগ ২১ শে আগস্টের ঘটনার দায় এড়াতে পারে না। এছাড়াও বিএনপি সরকারের ভূমিকা ছিলো নিন্দনীয় ও প্রহসনমূলক। এ জঘন্য ঘটনার বিচারকার্য সুচারুরূপে পরিচালনা করার জন্য মাননীয় হাইকোর্টের এ্যাপিলিয়েট ডিভিশনের যে অনুমোদন প্রয়োজন তা দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করার জন্য আইনমন্ত্রী কর্তৃক উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, এ বিচারকার্য বিলম্ব হলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। তিনি এ বিচারের আওতায় যারা শাস্তি পাবেন তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জোর দাবি জানান।
আলোচনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ভারত থেকে সংযুক্ত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শচীন কর্মকার। তিনি বলেন, ২১ শে আগস্টের ঘটনা ছিলো রাষ্ট্রব্যবস্থাকে নৎসাত করার ষড়যন্ত্র। বিচার বিভাগকে দ্রুত সময়ে ২১ শে আগস্টের বিচারকার্য সম্পন্ন করার জোর দাবি পেশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও সিটি এডিটর মধূসুদন মন্ডল মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী। তিনি ২১ শে আগস্টে নিহত ২৪ জন শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সব সময় সর্তক থাকতে হবে বলে তিনি জানান।
রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা’র  সহযোগী অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান দিপু সিদ্দিকী  বলেন, বঙ্গবন্ধু কখনো নীতির সাথে আপোষ করেননি। তিনি বাঙালী জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু সৈনিক মো. মাসুদ আলম মিল্টন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ২য় বিপ্লব কতিপয় মানুষ বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে ১৫ আগস্টের ক্ষেত্র তৈরি করেছে এবং বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারকে হত্যা করে। এ ঘটনার ঘাতকদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ইউএন ডিজএবিলিটি হিউম্যান রাইটস্ চ্যাম্পিয়ন আব্দুস সাত্তার দুলাল বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন উদার মানুষ। তিনি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাকে গুরুত্ব না দিয়ে বাঙালীকে বিশ্বাস করেছিলেন। এ বিশ্বাসই তাঁর জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানিপপ ন্যাশনাল ভলেনটিয়ার মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ১৫ আগস্ট ও ২১ শে আগস্ট বাঙালী জাতির জন্য দুইটি বিভীষিকাময় অধ্যায়।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. রশিদুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্বনেতা এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
জানিপপ ন্যাশনাল ভলেনটিয়ার, লেখক ও গবেষক মোহাম্মদ হাবিবুর বলেন, ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের ঘটনা বাংলাদেশে প্রতিহিংসার রাজনীতির সূচনা করার পাশাপাশি রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে কুলষিত করেছে।
জানিপপ ন্যাশনাল ভলেনটিয়ার আফসানা সনি বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
আজকের আলোচনায় সকল আলোচককে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অর্ণব মুর্শেদ। এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য উপস্থাপন করেন জানিপপ ন্যাশনাল ভলেনটিয়ার ও তার্কিক আসাদুজ্জামান আবির। আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জানিপপ ন্যাশনাল ভলেনটিয়ার ও গবেষক নাজমুল হক শ্রেয়াস এবং ভারত থেকে সংযুক্ত ছিলেন শ্রীমতি অপরূপা মিত্র, চন্দ্রবালী সেন, দীপতেষ ঘোশ, উর্বশী গুপ্তা এবং সুমাবা বরুড়া।
Share: