ফ্রান্সকে ঘিরে চলমান অস্থিরতায় কোনও পক্ষ নেবে না বাংলাদেশ। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ধর্ম নিয়ে মন্তব্যকে নিন্দা জানাবে না সরকার এবং অন্যদিকে চলমান ফ্রান্সবিরোধী সমাবেশ নিয়ে সহিষ্ণু আচরণ প্রদর্শন করা হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশে ফ্রেঞ্চ দূতাবাস, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ ও ফ্রেঞ্চ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া দেশে অবস্থিত ফ্রেঞ্চ নাগরিকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।’
চলমান ফ্রান্সবিরোধী সমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাবেশ হচ্ছে এ বিষয়ে সরকার কোনও ভূমিকা নেবে না।’
এদিকে ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় মদতে ‘ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের’ মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের প্রতিবাদে বাংলাদেশে আলেমদের প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। বুধবার রাজধানী ঢাকার কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভ করেন কওমি মাদ্রাসার আলেম-শিক্ষার্থীরা এবং বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক সংগঠন। বায়তুল মোকাররম এলাকায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। তবে এই বিষয়ে বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।
ইউটিউবে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ফ্রান্সবিরোধী ভিডিও প্রকাশ করছে। এগুলো ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে এনেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে গেলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে নিতে হবে। কিন্তু ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়ে আপত্তি আছে ইউরোপিয়ান দেশগুলোর।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টিকে আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হিসেবে দেখছি এবং কোনও ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া আমাদের কাছে অগ্রাধিকার বিষয় নয়।’
এদিকে ফ্রান্স বাংলাদেশসহ আরও কয়েকটি দেশে তাদের নাগরিকদের সাবধানে চলাফেরা করার জন্য উপদেশ দিয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ‘ফ্রান্স ব্যঙ্গচিত্র দেখানো বন্ধ করবে না’ বলার প্রতিক্রিয়ায় তুরস্ক, সৌদি আরবসহ অন্যান্য অনেক মুসলিম দেশ এই ঘটনার জন্য নিন্দা জানিয়েছে এবং ফ্রেঞ্চ পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে।