![](https://dailypresswatch.com/wp-content/uploads/2020/07/indian-loan.jpg)
বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সাড়ে ১১ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে ভারত। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৯শ ৭৮ কোটি টাকা।
২০১৭ সালের অক্টোবরে ভারতের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বাংলাদেশ সফরে এলে তৃতীয় এলওসি চুক্তি সই হয়। এর আওতায় মোট ঋণের প্রতিশ্রুতি ছিল ৪৫০ কোটি ডলার।
জানা গেছে, ভারত সরকার ভারতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (আইএসইজেড) প্রতিষ্ঠার প্রকল্পে ঋণ দিতে নীতিগত সম্মতি দিয়েছে। বাংলাদেশে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে আগেই অনুমোদন পেয়েছে।
শুরুতে ভারত কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ৪শ ৬০ একর ও বাগেরহাটের মোংলায় ১১০ একর জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার আগ্রহ নিয়ে এগোচ্ছিল। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার আগ্রহ দেখায়। এখন আর বাকি দুই প্রকল্পে ভারতের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। কাজ হচ্ছে শুধু মিরসরাই ঘিরে। মিরসরাই, ফেনী ও সীতাকুণ্ড মিলিয়ে ৩০ হাজার একর জমিতে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে চলছে। মিরসরাইয়ে ভারতের জন্য জমি রাখা হয়েছে এক হাজার একরের মতো।
২০১০ সাল থেকে ভারত লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় বাংলাদেশকে তিন দফায় ৭শ ৫০ কোটি ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে এ অর্থায়নের আওতায় প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন ও ঋণের অর্থ ছাড়করণে ধীরগতি রয়েছে।
আরো পড়ুন: হংকং ইস্যুতে যুক্তরাজ্যকে নাক না গলানোর হুঁশিয়ারি চীনের
ভারতীয় এই ঋণের শর্ত মোটামুটি এ রকম যে প্রকল্পে ভারতীয় ঠিকাদারেরা কাজ পাবে। ঋণের টাকায় পূর্তকাজের প্রকল্প হলে ৬৫ শতাংশ মালামাল ভারত থেকে আনতে হবে। অন্য প্রকল্পে ৭৫ শতাংশ মালামাল ও সেবা ভারত থেকে আনতে হবে। প্রকল্পভেদে শর্তের ভিন্নতা রয়েছে। সুদের হার ১ শতাংশ আর প্রতিশ্রুতি মাশুল আধা শতাংশ। ৫ বছরের রেয়াতকাল সহ ঋণ পরিশোধের সময় ২০ বছর।
বাংলাদেশ শুধু ভারতের নয়, জাপান ও চীনের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে। জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজারে। দুই ধাপে সেখানে মোট জমি দাঁড়াবে এক হাজার একরের মতো। আর চীন চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৭৮৩ একর জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে।
তিন দেশের জন্য এই অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য হলো, ওই সব দেশ থেকে বিনিয়োগ আনা। আর তিন দেশই নিজ নিজ দেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশকে ঋণ দিচ্ছে।
ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্পটির জন্য ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ রয়েছে ৪০ কোটি টাকার কিছু বেশি। যার একটি অংশ ভারতীয় ঋণের টাকা। প্রকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী, ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন কাজ আগামী বছর জুনে শেষ হবে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে তা পেছাতে পারে বলে জানিয়েছেন বেজার কর্মকর্তারা।