দিনাজপুরের বীরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে অভিনব প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এক মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে ৬২ হাজার ২০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্রটি। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার দুপুরে বীরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রতারিত মুক্তিযোদ্ধা।
উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত গ্রামপুলিশ মদন মোহন বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি মোবাইল নম্বর (০১৮৭২৮৪৮৩৯৮) থেকে আমার মোবাইলে ফোন আসে। ফোনে ওই ব্যক্তি নিজেকে বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আপনার এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের এই ফোন নম্বরেই জরুরি ভিত্তিতে যোগাযোগ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। বিষয়টি এখনই জানিয়ে দেন।’ ওনার নির্দেশনা মোতাবেক আমার এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল আজিজকে না পেয়ে তার ছেলেকে ইউএনও পরিচয়দানকারী ব্যক্তির মোবাইল নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলি। পরে রাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল আজিজ জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিচয় দানকারী ব্যক্তি অনুদান প্রদানের কথা বলে ওনার কাছে টাকা চেয়েছেন।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘মোবাইল ফোনে আমার ছেলের কাছে বিষয়টি অবহিত হয়ে নম্বরটিতে ফোন দিই। ফোনে তিনি নিজেকে বীরগঞ্জ উপজেলার নতুন ইউএনও পরিচয় দিয়ে জানান, ১২ জন মুক্তিযোদ্ধার নামে জনপ্রতি ২ লাখ ৯৫ টাকা এককালীন অনুদান এসেছে। তবে প্রত্যেকের নামে অ্যাকাউন্টে সাড়ে ৬২ হাজার টাকা জমা দেখাতে হবে। এই টাকাটা কি আপনি দিতে পারবেন। আমি তাকে জানিয়ে দিই, এ মুহূর্তে আমার এত টাকা নেই। প্রত্যুত্তরে আজ আমি ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছি বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন। আমি অবাক হয়ে বলি, সেই টাকা খরচ হয়ে গেছে বলে ফোনটি কেটে দিই। বিষয়টি আমার সন্দেহ হলে আমি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার অধ্যাপক কালিপদ রায়কে অবহিত করি।’
একই কথা জানিয়ে সুজালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মৃত জয়নন্দ রায়ের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফুল্ল চন্দ্র রায় বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিচয় দিয়ে অনুদানের বিষয়টি বলার কিছুক্ষণ পর এক ব্যক্তি ০১৮৬২৪৪৫৮৮৪ নম্বর থেকে আমাকে ফোন দিয়ে নিজেকে সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার পরিচয় দেন। পরে তিনি বলেন, আপনি টাকা পাঠাতে চাইলে কষ্ট করে ব্যাংকে আসার দরকার নেই। আমার মোবাইল ব্যাংকিং চালু আছে, আমার এই নম্বরে টাকা পাঠিয়ে দেন। আপনার নামে ইউএনও বরাবর জমা হয়ে যাবে। আমি ওনার কথামতো টাকা পাঠিয়ে দিয়ে ফোন করে অবহিত করতে গেলে ফোন বন্ধ পাই। পরে রাতে উপজেলা পরিষদে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করি। পরে ওনার পরামর্শে বীরগঞ্জ থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছি।’