বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, বিএনপি জনসম্পৃক্ততাহীন ও নেতৃত্বহীন হয়ে এখন বিদেশি প্রভুর দিকে তাকিয়ে আছে। জনগণ তাদের থেকে দূরে সরে গেছে। তাদের দলে কোনো নেতৃত্ব নেই। তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দণ্ডিত আসামি তারেক রহমান লন্ডনে বসে ভার্চুয়ালি সন্ত্রাসীদের নিয়ে কমিটি দেয়। সে নিজে একজন সাজাপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী। তাদের দলের চেয়ারপার্সন একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তাই তারা এখন বিদেশি প্রভুর হাত ধরে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে।
শনিবার (০৫ মার্চ) সকালে পিরোজপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়ালের সভাপতিত্বে ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ হাকিম হাওলাদারের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি নেতা কে হবে, নির্বাচিত হলে তাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবে এবং দেশ কে চালাবে তা নিয়ে তাদের কোনো চিন্তা বা দিক নির্দেশনা নেই। আগামী নির্বাচনে তারা মনোনয়ন বাণিজ্য করবে না একথা তারাও বলতে পারছে না। তারা মনোনয়ন বাণিজ্য করে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের সমর্থন দেবে না। তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে দেশের জনগণ তাদের ওপর কোনো আস্থা রাখতে পারছে না। তারা প্রতিবার ভোটে অংশগ্রহণ করে পরে যখন বুঝতে পারে হেরে যাবে এবং জনগণ তাদের চায় না তখন তারা ভোটের আগের দিন তা প্রত্যাহার করে নেয় অথবা ভোটের দিন তা বর্জন করে।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন কমিশন মানে না। তারা সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করতে চায়, তারা নির্বাচনকালীন অনির্বাচিত সরকার চায়। বাংলাদেশে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচিত সরকার রয়েছে। আর উনাদের আস্থা অনির্বাচিত সরকারে। তাদের মাথাব্যথা যেন-তেন ভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য।
বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুল আর সাজাপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানদের ক্ষমতায় বসিয়ে দিলে তাদের মাথাব্যথা কমে যাবে। বাংলাদেশের মানুষের মাথা ব্যথা সৃষ্টি করে ওনাদের মাথাব্যথা কমাতে হবে। এ দায়িত্ব কি বাংলাদেশের ১৭ কোটি জনগণ নেবে? জনগণ যখন নেবে না তাহলে ওনাদের মাথা ব্যথা হলেও কী আর না হলেও কী। বিএনপি নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো মাথা ব্যথা নেই। যাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি আস্থা নেই, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির দিকে কোনও দৃষ্টি নেই, যাদের চেতনায় হলো অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা দখল করা, যে কোনও মূল্যে ক্ষমতায় বসা তাদের নিয়ে আমরা ভাবতে চাই না।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি প্রতিদিন আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটায়। কয়েকদিন পর পর তারা বলে দল গঠন করার জন্য আমরা এখন মনোযোগী হয়েছি। দলকে গঠন করে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটবে। ১৩ বছর ধরে তারা শুধু দল গঠন করে যাচ্ছে। তাদের আন্দোলন আর হচ্ছে না। আমরা বলতে চাই লন্ডনে বসে দল গঠন করে, দুর্নীতিবাজদের উৎসাহিত করে সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। এই অপশক্তির কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া যাবে না। সুযোগ পেলে এরা দেশে তালেবানি শাসন কায়েম করবে এবং আইএস সৃষ্টি করবে। তারা বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে শান্তি নষ্ট করতে চায়। এই অপশক্তির কাছ থেকে ১৭ কোটি মানুষকে রক্ষা করতে হলে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। আমাদের সকলের ব্যক্তিগত দলাদলি রেষারেষি বাদ দিতে হবে। আমাদের দলকে শক্তিশালী করতে হবে। আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হলে দেশের জনগণ শক্তিশালী হবে।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমরা যদি নীতি আদর্শ ঠিক রাখি তাহলে তাদের সকল ষড়যন্ত্র আমরা রুখতে পারব, সেটা যে কোন ষড়যন্ত্রই হোক। বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানোর যে চেষ্টা করছে আমরা কখনই সেটা করতে দিব না। বিএনপি’র ষড়যন্ত্রকে দেশের মানুষ আর সমর্থন করে না। তাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে আরও শক্তিশালী করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী সব সময় কাজ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে জাতির পিতার সোনার বাংলাদেশ গড়বো।
বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আনিসুর রহমান, মো. গোলাম রব্বানী চিনুসহ পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সকল স্তরের নেতৃবৃন্দ।