ঢাকার ৪৫ শতাংশ এবং ঢাকার বস্তিগুলোর ৭৪ শতাংশ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে

জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে শতকরা ৮২ শতাংশের কোনও লক্ষণ-উপসর্গ ছিল না, ছয় শতাংশ ছিল লক্ষণ-উপসর্গযুক্ত আর বাকী ১২ শতাংশ ছিল মৃদ্যু লক্ষণযুক্ত। আবার লক্ষণযুক্ত এই রোগীদের মধ্যে ১৫ শতাংশ রোগীর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। গবেষণাতে অংশ নেওয়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে একজন রোগী মারা গেছেন।

করোনায় রাজধানী ঢাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ আক্রান্ত বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। সোমবার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)-এর এক যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণা প্রকাশ শীর্ষক আয়োজনে জানানো হয়, অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় পাওয়া গেছে ঢাকার ৪৫ শতাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

আর এর মধ্যে শতকরা ২৪ শতাংশ মানুষের বয়স ৬০ বছরের বেশি আর ১৫ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে রয়েছে শতকরা ১৮ শতাংশ। আজ সোমবার ( ১২ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে গবেষণা  প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

একইসঙ্গে দেশে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং এর জিন রূপান্তর নিয়ে করা এই গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, ঢাকার বস্তিগুলোতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪ শতাংশ মানুষ। অর্থ্যাৎ ঢাকার ৪৫ শতাংশ মানুষের শরীরে ইতোমধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। অপরদিকে, ঢাকার বস্তিগুলোর ৭৪ শতাংশ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। আর তাদের শরীরেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যারা ইতোমধ্যেই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এ গবেষণাতে রাজধানী ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫টি ওয়ার্ডে এই জরিপ চলে। প্রতিটি ওয়ার্ডের মধ্যে একটি মহল্লা বাছাই করে ১২০টি  খানাতে এই জরিপ চালানো হয়। জরিপ চলে জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত।গবেষণায় আর্থিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে শতকরা ৮২ শতাংশের কোনও লক্ষণ-উপসর্গ ছিল না, ছয় শতাংশ ছিল লক্ষণ-উপসর্গযুক্ত আর বাকী ১২ শতাংশ ছিল মৃদ্যু লক্ষণযুক্ত। আবার লক্ষণযুক্ত এই রোগীদের মধ্যে ১৫ শতাংশ রোগীর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। গবেষণাতে অংশ নেওয়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে একজন রোগী মারা গেছেন বলে জানানো হয় অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে গবেষকরা বলেন, এই গবেষণা করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, রোগীদের চিকিৎসা এবং ভবিষ্যতে ভ্যাক্সিন দেওয়ার ক্ষেত্রে কাজে লাগবে।

অনুষ্ঠানে জুমের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমরা দ্রুত পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, যার সুফল দেশের মানুষ পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ভালো করেছে, ভালো আছে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত ১ থেকে ১০৯টা ল্যাব হয়েছে, সেন্ট্রাল অক্সিজেন,  হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলাসহ অন্যান্য সবকিছুর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনটি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন, আইইডিসিআরেরর রোগতত্ত্ববিদ ডা. মাহবুবুর রহমান এবং আইসিডিডিআর’বি-র প্রধান বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরি।

এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

Share: