বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় ভারত এবং এটি কখনোই হ্রাস পাবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নতুন ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশান অ্যাভিনিউয়ে ভারতীয় দূতাবাসে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
হাইকমিশনার বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র উপস্থাপনের পরপরই আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা আমার জন্য সম্মান এবং সৌভাগ্যের।
তিনি বলেন, প্রথমত, আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই যে, বাংলাদেশ সবসময় ভারতের অত্যন্ত বিশেষ অংশীদার ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আমাদের বন্ধুত্ব কৌশলগত অংশীদারিত্বের অনেক ঊর্ধ্বে। কারণ এ বন্ধুত্ব রচিত হয়েছে অভিন্ন ত্যাগ, ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং আত্মীয়তার অনন্য সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে। বাংলাদেশকে ভারত সর্বোচ্চ স্তরের গুরুত্ব দেয় এবং এটি কখনোই হ্রাস পাবে না।
তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত, আমাদের অংশীদারিত্বের উৎস পারস্পরিক শ্রদ্ধা। ঐতিহাসিক জনযুদ্ধের মাধ্যমে নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয়ের ভিত্তিতে একটি জাতিকে রূপদানকারী হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের চেতনার প্রতি আমরা গভীরভাবে প্রশংসা ও সম্মান জানাই। আপনারা অসংখ্য মৃত্যু ও মা-বোনদের প্রতি বর্বর নির্যাতন উপেক্ষা করে অনন্য সাহস এবং বীরত্বের সঙ্গে নিজেদের ওপর হওয়া অত্যাচার ও কঠোরতার মুখোমুখি হয়েছিলেন।
বিক্রম বলেন, আপনাদের মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বের অন্যতম অনুপ্রেরণা। মুক্তিযুদ্ধে আপনাদের সহায়তা করতে পারা আমাদের জন্য সবসময়ই সম্মানের হয়ে থাকবে যেমনভাবে, প্রায় ৫০ বছর পরও আপনাদের সাহসের প্রতি ভারতে আজও আমরা সম্মান জানাই। সামাজিক সূচকে উল্লেখযোগ্য উন্নতির জন্য বাংলাদেশ আজ সমানভাবে সম্মানিত।
তিনি বলেন, এই চেতনায় এবং মুজিববর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং আমাদের দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীর স্মরণীয় বছরগুলোর স্বীকৃতি হিসেবে আমি মুক্তিযুদ্ধের বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই অংশীদারিত্বের জন্য সেবা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই আমি আখাউড়া স্থলসীমান্ত থেকে সরাসরি ধানমন্ডিতে তার স্মৃতিবিজড়িত জাদুঘর পরিদর্শন করে বঙ্গবন্ধুর উজ্জ্বল নেতৃত্বের প্রতি বিনীত ও আন্তরিক শ্রদ্ধা নিবেদন এবং আমি আগামীকাল সাভারে যাচ্ছি বাংলাদেশের সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।
হাইকমিশনার বলেন, আমি স্বীকার করি নিকটতম সম্পর্কেরও পরিচর্যা করা প্রয়োজন। ভারত সরকার আমাকে ঠিক তাই করার নির্দেশ দিয়েছে। আমি এবং আমার সহকর্মীরা এই অংশীদারিত্বকে সর্বস্তরে প্রচার করতে কোনো সুযোগই ছাড়ব না। আমরা উভয় পক্ষের সংশ্লিষ্ট সব মাধ্যমে এই অংশীদারিত্বের পক্ষে সর্বোচ্চ সমর্থন জানাব।
তিনি বলেন, এ কারণেই করোনা মহামারির মধ্যেও আমাদের পররাষ্ট্র সচিব বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক ভ্রমণ স্থগিতের পরে বাংলাদেশকে তার প্রথম সফরের গন্তব্য হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। আমরা শিগগিরই বিমান চলাচল শুরুর জন্য একটি বিশেষ ‘এয়ার বাবল’ ব্যবস্থা চালু করব। আমরা কোভিড মোকাবিলায় যৌথভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, আমরা যতই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, আমাদের নেতারা আমাদের সম্পর্কের জন্য তাদের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দেবেন। আমাদের এই প্রচেষ্টায় গণমাধ্যমের বন্ধুদের সবসময় সহায়তা কামনা করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রত্যাশা পূরণে আমি এবং আমার সহকর্মীরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব।