শেক্সপিয়রের একমাত্র ছেলের নামে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা ‘হ্যামনেট’ উপন্যাসের জন্য ম্যাগি ও’ফ্যারেল এ বছরের ‘উইম্যানস প্রাইজ ফর ফিকশন’ জিতেছেন।
আইরিশ এই লেখক হিলারি ম্যানটেল, বার্নার্ডাইন এভারিস্টো এবং আরও তিনজন লেখককে পেছনে ফেলে ৩০,০০০ পাউন্ডের এ পুরস্কার জিতেছেন ম্যাগি।
উপন্যাসটি ১৫৯৬ সালে ১১ বছর বয়সে মারা যাওয়া হ্যামনেটের জীবনকে আশ্রয় করে লেখা হয়েছে।
উইম্যানস প্রাইজ ফর ফিকশন-এর বিচারকদের প্রধান মার্থা লেইন ফক্স উপন্যাসটি নিয়ে প্রশংসা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘মানব জীবনের গভীর অভিজ্ঞতা উঠে এসেছে বইটিতে।’
তিনি আরও বললেন, ‘চূড়ান্ত নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে বইটি নিয়ে আমাদের সবার মধ্যেই একটা চরম উত্তেজনা বিরাজ করেছে।’
১৯৯৬ সালে এই পুরস্কারটি শুরু হয়েছিলো ‘অরেঞ্জ প্রাইজ ফর ফিকশান’ নামে। ও’ফেরেল এই পুরস্কারের ২৫তম বিজয়ী। এর আগে এমার ম্যাকব্রাইড, আলী স্মিথ, জেইডি স্মিথ এবং আন্দ্রেয়া লেভি পুরস্কারটি পেয়েছেন।
বিবিসি’র সাহিত্য প্রতিবেদক রেবেকা জোনস তার প্রতিবেদনে লিখেছেন, লিস্টে থাকা ‘দ্য বুকার প্রাইজ’ পাওয়া দুইজন লেখক হিলারি ম্যানটেল এবং বার্নাডাইন এভারিস্টোদের মধ্যে থেকে বিজয়ীকে চূড়ান্ত করাটা খুবই কঠিন কাজ ছিলো। কিন্তু সত্যিকার অর্থেই পুরস্কারটি ম্যাগী ও’ফ্যারেলের প্রাপ্য।
শোক এবং দুঃখকে নিয়ে লেখা এ উপন্যাসে রান্নাঘর থেকে ভেসে আসা রুটির ঘ্রাণ থেকে শুরু করে মৌচাকে মৌমাছির দলের দৃশ্য দিয়ে ষোড়শ শতকের ইংল্যান্ডকে নিখুঁতভাবে তুলে আনা হয়েছে।
উপন্যাসটি একজন নারী এবং তার তিন সন্তানদের নিয়ে লেখা হয়েছে এবং এমনভাবেই লেখা হয়েছে, মনে হবে তাদের জীবন যেন পাঠকের কাছে প্রাণবন্তভাবে ফুটে উঠেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, এই উপন্যাসে শেক্সপিয়রের কথা একবারও বলা হয়নি আর সেটাই যেন লেখকের সবথেকে বড় মুনশিয়ানা।
হ্যামনেট ১৫৯৬ সালে প্লেগ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়—এই উপন্যাসে প্লেগ কীভাবে পুরো ইউরোপে বিস্তার লাভ করে তা নিয়ে একটি অধ্যায় রয়েছে।
প্লেগের বিস্তারের জন্য বানিজ্য এবং ভ্রমণকেই দায়ী করা যায়। বর্তমান সময়ের মহামারির সঙ্গে সেই সময়ের মহামারী একটি সমান্তরাল সম্পর্ক আছে, যেটা এড়িয়ে যাওয়াটাও অসম্ভব।
গত বছরের বুকার প্রাইজে মার্গারেট এ্যাটউডের ‘দ্য টেস্টামেন্টস’-এর সঙ্গে বার্নার্ডাইন এভারিস্টোর ‘গার্ল, উইম্যান, আদার’ পুরস্কার পেয়েছিলো। উইম্যানস প্রাইজ ফর ফিকশন পুরস্কারের বেলায় এভারিস্টোর এই বই শর্টলিস্টে স্থান পেলেও বিজয়ী হতে পারলো না।
এ বছরের ‘উইম্যানস প্রাইজ ফর ফিকশন’ গত জুনের তিন তারিখে প্রদান করার কথা ছিলো। কিন্তু করোনাভাইরাস ঘটিত পরিস্থিতির কারণে সেটি পিছিয়ে যায়।
পরবর্তিতে একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ী হিসেবে ম্যাগি ও’ফ্যারেলের নাম ঘোষণা করা হয় এবং পুরস্কারটি তার নিজ বাসায় গিয়ে প্রদান করা করে পুরস্কার কর্তৃপক্ষ।
সূত্র : বিবিসি