সাধ ও সাধ্যের সমন্বয়ে মানসম্পন্ন উচ্চ শিক্ষার একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠানের রূপকার উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ

ভৌগোলিক অবস্থান, ইতিহাস-ঐতিহ্য, বিদ্যমান অবকাঠামো ইত্যাদির দরুন প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর-ও নিজস্ব স্বতন্ত্রতা নিয়ে গড়ে উঠেছে। ২০০৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রশাসনিক উন্নয়ন ও শিক্ষার গুণগত মানের প্রশ্নে আপোষহীন রয়েছে। এ সব কিছুর নেপথ্যে রয়েছেন বেরোবি, রংপুর- এর বর্তমান মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যার। ২০১৭ সালের ১৪ জুন স্যার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরে যোগদান করেছিলেন। তারপর থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক পরিবর্তনের কর্ণধার হিসেবে সমাদৃত।

একটি বিশ্ববিদ্যালয় এর সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল দক্ষ ও যোগ্য জনশক্তি। মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যার এখানে এমন একটি যোগ্য ও দক্ষ কমিউনিটি তৈরি করেছেন যারা আগামী দিন গুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। একাডেমিক, প্রশাসনিক ও গবেষণা কাজে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরির লক্ষ্যে মাননীয় উপাচার্য স্যার সদ্য নিয়োগপ্রাপ্তদের জন্য দেশি-বিদেশি পাঠ্যক্রমের সমন্বয়ে গঠিত ‘বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ’ প্রদানের ব্যবস্থা করেন। সময়োপযোগী এই পদক্ষেপের জন্য তিনি সবার কাছেই প্রশংসিত। এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের তত্ত্বীয়, ব্যবহারিক ও অনুশীলনমূলক জ্ঞান প্রদান করা হয়, যা যথাযথ প্রক্রিয়ায় মূল্যায়নের ব্যবস্থা রয়েছে। শিক্ষক ও গবেষক হিসেবে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, রক্ষণাবেক্ষণ, বিশ্লেষণ থেকে শুরু করে অনলাইনে পাঠদান প্রায় সব রকমের কাজের জন্যই এই প্রশিক্ষণ সহায়ক। মাননীয় উপাচার্য স্যার এর উদ্যোগে পরিচালিত বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ-এর মাধ্যমে নিয়মিত গবেষণা চর্চা এবং তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক ট্রেইনিং অব্যাহত রয়েছে। এ প্রশিক্ষণে বহুমুখী জ্ঞান অর্জনের ফলে সংশ্লিষ্টরা নিজের কাজ ও দায়িত্ব সম্পর্কে সক্রিয় হয়ে নিষ্ঠার সাথে কাজ করে, যা বেরোবি, রংপুর এর উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন মানেই উচ্চশিক্ষায় প্রবেশ করা, নতুন জ্ঞান তৈরি করা। একটি দেশ এবং দেশের সংস্কৃতি, সভ্যতা, উত্থান-পতন ও সমৃদ্ধির ইতিহাস রচনার সবচেয়ে কার্যকরী স্থান হলো বিশ্ববিদ্যালয়। শুধু দেশ নয়, বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বজনীন জ্ঞান চর্চার ক্ষেত্র। জ্ঞানচর্চার জন্য তাই প্রয়োজন নিয়মমাফিক গবেষণা। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আমাদের সেই গর্ব এবং অহঙ্কারের জায়গা। মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যার এর উদ্যোগে বর্তমানে বেরোবি, রংপুর থেকে অসংখ্য মানসম্পন্ন গবেষণা জার্নাল প্রকাশিত হয়েছে। এজন্য ২০১৯ সালে গবেষণা ক্ষেত্রে বেরোবি, রংপুর দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে ড. ওয়াজেদ রিসার্চ এন্ড ট্রেইনিং ইন্সটিটিউট-কে নিয়ে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যারের সুদূরপ্রসারী চিন্তা-চেতনা রয়েছে। ড. ওয়াজেদ রিসার্চ এন্ড ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট-এর কার্যক্রম শুরু করার ফলে উচ্চতর পড়াশোনা ও গবেষণায় এক নতুন যুগের উন্মোচন হয়েছে। বর্তমানে এ ইনস্টিটিউট-এর অধীন এমফিল ও পিএইচডি কোর্স চালু আছে। করোনাকালীন এই দুর্যোগপূর্ণ সময়েও ড. ওয়াজেদ রিসার্চ এন্ড ট্রেইনিং ইন্সটিটিউট এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে। এছাড়াও স্যারের পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন দেশি-বিদেশি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর বিশ্বজনীন জ্ঞান অর্জন এর ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ, আধুনিক শ্রেণীকক্ষ, আধুনিক সকল শিক্ষা উপকরণ ও শিক্ষকদের মানসম্মত লেকচার প্রদানের ব্যবস্থা ইত্যাদি বেরোবি, রংপুর এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যার ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাগ্রহণের সুবিধার্থে বেরোবি, রংপুর ক্যাম্পাস কে ওয়াইফাই সুবিধার আওতায় নিয়ে এসেছেন, চাহিদা অনুযায়ী ল্যাব, ভার্চুয়াল ক্লাসরুম সহ বিভাগেগুলোতে স্মার্ট বোর্ড স্থাপন করেছেন। স্যার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রথম প্রশাসনিকভাবে ক্যাম্পাস রেডিও স্থাপন করেছেন যার ফলে সঠিক তথ্য গ্রহণ ও বিতরণের মাধ্যমে তিনি শিক্ষার্থীদের জ্ঞানানুরাগী করে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়াও, মাননীয় উপাচার্য স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য বর্ধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। উল্লেখ্য, স্যারের উদ্যোগে বেরোবি বৃক্ষায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধন কমিটি গঠিত হয়েছে। বর্তমান করোনাকালীন সময়েও এ কমিটির মাধ্যমে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন সহ ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ অব্যাহত রেখেছেন মাননীয় উপাচার্য স্যার। ফলে শিক্ষার্থীরা এখানে স্বতস্ফূর্তভাবে শ্রেণীকক্ষে এবং শ্রেণীকক্ষের বাইরেও ক্যাম্পাসের মনোরম পরিবেশে ব্যক্তিগত বা দলীয়ভাবে পড়াশুনা করতে পারে যা উচ্চ শিক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কল্যাণমুখী কাজের জন্যও কিভাবে একনিষ্ঠ ও সংকল্পবদ্ধ হতে হয় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ বর্তমান মাননীয় উপাচার্য স্যার। এখানে শিক্ষার্থীদের বিভিন্নখাতে বৃত্তি এবং প্রয়োজন সাপেক্ষে টিউশন ফিতে বিশেষ ছাড় দেয়া হয়। মাননীয় উপাচার্য স্যারের উদ্যোগে করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের হলের সিট ভাড়া মওকুফ করা হয়েছে।

বেরোবি, রংপুর কে দেশের একটি অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার লক্ষ্যে মাননীয় উপাচার্য স্যার কর্তৃক বেশ কিছু স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম এ প্রতিনিয়ত যুগোপযোগী সংশোধন ও পরিমার্জন করা হচ্ছে। মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যার একজন প্রশাসনিক নীতিবীর (Policy hero); যাঁর বিশ্বাস, সংকল্প ও সাহসিকতায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর দীর্ঘ সময় নানা ধরণের উন্নয়নমূলক সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তিনি শুধুমাত্র একজন যুক্তিশীল ব্যক্তিই নন বরং দুঃসাহসী মানুষও। যার ফলে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানামুখী উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে। মাননীয় উপাচার্য স্যারের হাত ধরেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর-এ শুদ্ধ প্রাণের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য তৈরির প্রক্রিয়াটি অনেক দীর্ঘ এবং দুরূহ। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়াটি দুরদর্শিতার সাথে শুরু হওয়াটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কোন একটি ধাপে একটি ভুল সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে। মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যার এই দুরূহ এবং দীর্ঘ কাজটিকে সাবলীলভাবে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্যারের গৃহীত উদ্যোগই তা প্রমাণ করে। স্যারের উদ্যোগেই বেরোবি, রংপুর তৈরি হয়েছে সাধ ও সাধ্যের সমন্বয়ে মানসম্পন্ন উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করার একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান।

ইয়াসমিন সুলতানা
প্রভাষক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
নির্বাহী সদস্য, নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।

Share: