করোনাকালীন নিউ নরমাল সময়ে গঠণমূলক কর্মকান্ড চালু রাখার এক অনন্য উদাহরণ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়।”

তানিয়া নুসরাতঃ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালে। নতুন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাতারাতি উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে যাবে তা সম্ভব নয়। নানান চড়াই-উৎরাই, উৎকণ্ঠা পার করে বিশ্ববিদ্যালয়টি বর্তমানে স্থিতিশীল অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। যার হাত ধরে এখানে আধুনিকায়ন ঘটেছে তিনি হলেন মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যার যিনি তার যোগ্যতার আসনে স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল।

মাননীয় উপাচার্য স্যার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর – এ যোগদান করেছেন ২০১৭ সালের ১৪ জুন। যোগদানের পর থেকেই তিনি রেখেছেন দায়িত্বশীলতা, একাগ্রতা ও সততার স্বাক্ষর। প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক সংকট নিরসন, প্রতিটি দপ্তরকে ডিজিটালাইজ্ড করা, শিক্ষার্থীদের যানবাহন সমস্যা নিরসন, দেশ ও দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমঝোতা স্বাক্ষর, জ্ঞানার্জন ও গবেষণার ক্ষেত্র প্রসারের লক্ষ্যে উন্নত যন্ত্রপাতিসহ ল্যাব ও ল্যাংগুয়েজ ক্লাব প্রতিষ্ঠা-এছাড়া আরও অনেক ক্ষেত্রে তার অবদান অনস্বীকার্য।

বর্তমানে আমরা সবাই এক মহামারীর মাঝে দিন পার করছি। করোনার ভয়াবহতার কারণে যেখানে পুরো সমাজব্যবস্থা স্তম্ভিত, সেখানে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর এ নেই কোন স্থবিরতা বা প্রশাসনিক জটিলতা যা শুধুমাত্র সম্ভব হয়েছে উপাচার্য স্যারের কর্মপিপাসু মানসিকতার কারণে।

সম্প্রতি করোনা মহামারীর মাঝেই পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রয়োজনীয় ল্যাব অ্যাপারেটাস সরবরাহ করা হয়েছে কোন রকম দীর্ঘসূত্রিতা ছাড়াই। এ সব অ্যাপারেটাস শিক্ষার্থীদের গবেষনার জন্য অত্যাবশ্যক। করোনা ভয়াবহতার মধ্যে এরূপ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য স্যার এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। পরিবহন পুলে ব্যবহার্য দুটি মাইক্রোবাস ক্রয়, আনসার ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা, শিক্ষকদের পারিতোষিক ও প্রজেক্টরের জন্য বরাদ্দ বিল যথাসময়ে প্রদান-প্রতিটি কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে এই করোনাকালেই। এছাড়াও দৃষ্টি নন্দনের জন্য প্রতিটি একাডেমিক ভবনের সামনে সুবিশাল চত্বর সংস্কারের কাজ চলছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বৃক্ষরোপন কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে যা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে নতুন করে ভালো লাগার সৃষ্টি করবে।

শুধু একাডেমিক উন্নয়ন নয়, প্রশাসনিক জটিলতা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্ত এবং পুরো ক্যাম্পাসকে সৌন্দর্যমণ্ডিত ও নিরাপদ করার বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন মাননীয় উপাচার্য স্যার যা নি:সন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে।

চলমান আরেকটি ঘটনা উল্লেখ না করলেই নয়, সেটি হল শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক স্থাপন। মাননীয় উপাচার্য স্যার সেই দাবি পূরণের যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছেন। খুব কম সময়ের মধ্যে ফটকের জন্য একটি নকশা নির্বাচন করা হয় এবং সেটি নির্মাণের জন্য টেন্ডার কল করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের নানান প্রতিক্রিয়া তুলে ধরে। এ নিরিখে উপাচার্য স্যার সেই নকশা বাতিল করেন এবং সকল শিক্ষার্থীদের কাছে গেটের নকশা আহবান করেন, যা ১২ আগস্ট পর্যন্ত চলমান থাকবে। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের পছন্দ অনুযায়ী নকশা নির্বাচন করা হবে। এ থেকে বোঝা যায়, মাননীয় উপাচার্য স্যার কতটা শিক্ষার্থীবান্ধব মানুষ, শিক্ষার্থীদের মতামতের কতটা মূল্য দেন তিনি।

একজন উপাচার্য তার সময়কালে সকল উন্নয়ন সম্পন্ন করতে পারবেন তা আশা করা ভুল। কারন, সময়ের একটি ধরাবাঁধা নিয়ম আছে। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যে নৈতিকতা ও সততার মাধ্যমে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহন ও তা প্রতিষ্ঠা করা সত্যিই বিরল। আর তা করে দেখাতে সমর্থ হয়েছেন মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যার।

প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক উন্নয়ন কারোর একার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন মাননীয় উপাচার্য স্যারের পাশে থেকে একসাথে কাজ করা। মাননীয় উপাচার্য স্যার এমন একজন ভার্সেটাইল মানুষ যিনি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী কাউকেই হতাশ করেননি।

তানিয়া নুসরাত
প্রভাষক,
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ,
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।

Share: