প্রেস ওয়াচ রিপোর্ট:২৯ মে,২০২৪, বুধবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ বিষয়ক সেমিনারের ৯২৯ তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। জানিপপ কর্তৃক আয়োজিত জুম ওয়েবিনারে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জানিপপ-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন হাজীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পি এইচ ডি গবেষক অধ্যক্ষ মো: মাসুদ আহমেদ।
সেমিনারে গেস্ট অফ অনার হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ এর কেন্দ্রীয় নেত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর কেন্দ্রীয় মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য মিসেস সংগীতা বিশ্বাস।
সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার শারমিন সুলতানা শিমু ও মো: শাকিব হোসেন।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকার ও নাট্যব্যক্তিত্ব সন্দীপন কুমার বিশ্বাস, জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার সাদিয়া হালিমা ও ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর একদল শিক্ষার্থী।
সভাপতির বক্তব্যে ড.কলিমউল্লাহ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সবসময় জনস্বার্থকেই গুরুত্ব দিয়েছেন।
সেমিনারের প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ জনাব মাসুদ আহমেদ বলেন , আমাদের সংবিধানের মূল চারটি স্তম্ভ হলো জাতীয়তাবাদ , ধর্মনিরপেক্ষতা, গনতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র। এই চারটি দিকই বঙ্গবন্ধু তার জীবনে ধারণ করেছিলেন।
প্রথমত, বঙ্গবন্ধু একজন জাতীয়তাবাদ নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন মানুষের নেতা , গণমানুষের নেতা। তিনি কখনই বলতেন না বাংলাদেশের মানুষ। বলতেন -” আমার মানুষ , ভাইয়েরা আমার”।
এতে প্রমানিত হয় বঙ্গবন্ধু জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী এবং তা ধারণ করতেন।
দ্বিতীয়ত, ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু ধর্মভীরু ছিলেন , তবে অন্যের ধর্মের প্রতি তিনি উদার ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কাছে
জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত হতো। তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো – ১৯৪৯ সালে যখন পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয় তখন সেখানে মুসলিম ব্যতীত অন্য ধর্মের সদস্যও ছিলো।
বঙ্গবন্ধু যখন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হলেন তখন সকল ধর্মের রাজনৈতিক ব্যক্তির কথা চিন্তা করে মুসলিম শব্দটি তুলে দেন। এতে প্রমাণিত হয় বঙ্গবন্ধু ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন।
তৃতীয়ত, বঙ্গবন্ধু বরাবরই গণতান্ত্রিক নেতা। জাতির পিতা রাজনৈতিক পদ পেয়েছেন গণতান্ত্রিকভাবে। বঙ্গবন্ধু ১৯৫০ সালে সংখ্যা গরিষ্ঠের মতামতে আওয়ামী লীগের সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। তৎকালে বঙ্গবন্ধু সকল তৃণমূল রাজনৈতিক পদ নির্বাচন নিশ্চিত করেছিলেন গণতান্ত্রিকভাবে।
চতুর্থত, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জন্য সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে করছিলেন। বঙ্গবন্ধু কমিউনিস্ট ছিলেন না তবে সমাজতান্ত্রিক ছিলেন। তিনি শোষিত , নিপিড়ীত মানুষের পক্ষে কথা বলতেন। কথা বলতেন কৃষকের পক্ষে , মেহনতি মানুষের পক্ষে। বঙ্গবন্ধু সম্পদের বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলতেন, সম্পদের সুসম বন্টনের কথা বলতেন। ১৯৬৪ সালে আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের ম্যানিফেস্টতে সমাজতন্ত্রের কথা সন্নিবেশ করেছিলেন।
সেমিনারের গেস্ট অব অনার শিক্ষক নেত্রী সঙ্গীতা বিশ্বাস বলেন, বঙ্গবন্ধু ছোট বেলা থেকেই শিশুদের খুব ভালবাসতেন। বঙ্গবন্ধুর মনে হতো শিশুদের সান্নিধ্যে থাকলে তার সকল অবসাদ ও ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। আগামী প্রজন্মকে এগিয়ে নেয়ার জন্য আজকের শিশুদের সম্প্রীতির শিক্ষায় আগ্রহী করে তুলতে হবে।
সেমিনারে যুক্ত জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার শারমিন সুলতানা শিমু বলেন, বঙ্গবন্ধুর নিঃস্বার্থ মানবপ্রেমের আদর্শ আমারা সবসময়ই মেনে চলবো। তবেই মানবিক পৃথিবী তৈরি সম্ভব হবে।
সেমিনারে যুক্ত জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার
শাকিব হোসেন বলেন, ২৮ আগষ্ট ১৯৫৩ সালে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেছিলেন যে , সরকার প্রদেশের বিদ্যালয়গুলোতে উর্দুকে বাধ্যতামূলক করার যে হীন চেষ্টা করছে তা থেকে বিরত না হলে , পূর্ব পাকিস্তানে উর্দু বর্জন করা হবে । এই বক্তব্যের মাধ্যমে জাতির পিতার প্রতিবাদী চেতনা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীন মনোভাব ফুটে উঠেছে।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন, গোপালগঞ্জস্থ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক প্রশান্ত কুমার সরকার।