পিবজা অধ্যয়ন -ড.দিপু সিদ্দিকী

পিবজা অধ্যয়ন -ড.দিপু সিদ্দিকীপ্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে গণমাধ্যমকে প্রাতিষ্ঠানিকরণ এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে এর ভূমিকা অনন্য। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত গণমাধ্যম বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং প্রোগ্রাম পরিচালনায় ইতোমধ্যেই প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ পিআইবি সুনাম অর্জন করেছে। সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত বিষয়ে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের সুনামধন্য অধ্যাপক দ্বারা প্রশিক্ষণ এবং প্রোগ্রাম পরিচালনা করা হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে টানা চতুর্থবারের মতো মহাপরিচালক পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন একুশে পদপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক  কবি জাফর ওয়াজেদ।পিআইবি থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গণমাধ্যম কর্মীরা স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রে উৎকর্ষ সাধন করেছেন। শুধু গণমাধ্যম কর্মীরাই ডিগ্রী নিয়েছেন তা নয় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা থেকে আগত শিক্ষার্থীরা এখান থেকে ডিগ্রি লাভ করেছেন। গণমাধ্যমের প্রতি অনুরাগ এবং সাংবাদিকতা সম্পর্কে কৌতুহল নিবৃত্ত করতেই হয়তো তাদের এই পদক্ষেপ।

কথাশিল্পী শওকত ওসমানের ২৫তম মৃত্যু বার্ষিকীতে পিবজা ‘র নেতৃবৃন্দ

ডাক্তার, পুলিশ , উকিল, অধ্যাপক, এনজিও কর্মী, গোয়েন্দা কর্মকর্তাসহ সামরিক, বেসামরিক কর্মকর্তাও রয়েছেন এর মধ্যে। ডাক্তারদের মধ্যে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার রথীন্দ্রনাথ রায় রবিন এর কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে দন্ত চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। পিআইবি থেকে এক বছর মেয়াদী পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা এবং দুই বছর মেয়াদী মাস্টার্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ জার্নালিজম এলামনাই এসোসিয়েশন (পিবজা)। উল্লেখ করা যেতে পারে, বাংলাদেশে ‘পিবজা’ একমাত্র সংগঠন যেখানে উচ্চশিক্ষিত এবং সাংবাদিকতায় ডিগ্রীধারীদের নিয়ে গড়ে উঠেছে।তাই বহুমুখী প্রতিভাদের নিয়ে গঠিত এই সংগঠনটির প্রতি সাধারণ মানুষেরও ব্যাপক আগ্রহ এবং আশা ও ভরসার স্থান পেয়েছে। কর্ম এবং দক্ষতায় সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন এখন সময়ের দাবি।

তাই এটিকে নিছক কোন সংগঠন কিংবা ট্রেড ইউনিয়নের মত কোন সংগঠনের সঙ্গে তুলনা করা চলে না। সাংবাদিকদের ন্যায্য দাবি আদায়, সাংবাদিকদের অধিকারের সুরক্ষা, সাংবাদিক কল্যাণ নিস্চিতের লক্ষ্যে সোচ্চার থাকা এর মুখ্য উদ্দেশ্য হলেও মানবতাবাদ ও সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা, সমাজে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং জনমত গড়ে তোলার মধ্যেও এর কর্মকান্ড ব্যাপৃত। সমাজ বিনির্মাণে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রাষ্ট্রের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছার ক্ষেত্রে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণের স্বার্থে মতামত প্রধান এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল আচরণের তৈরিতে সংগঠনটি কাজ করে যাচ্ছে।সমাজে বিভিন্ন শ্রেণি পেশা, রাজনৈতিক মতাদর্শীদের সঙ্গনিয়ে সহঅবস্থানের ভিত্তিতে একটি সুন্দর এবং বন্ধু-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করাও এর অন্যতম লক্ষ্য। বাংলাদেশের সংবিধান নিশ্চিত করেছে। যাইহোক পরিশেষে বলতে চাই সংবিধান প্রণয়ন কিংবা আইন প্রণয়ন সবকিছুই মানুষকে ঘিরে। মানুষের কল্যাণকে ঘিরে। জলবায়ু ও প্রকৃতিকে ঘিরে। তথা পরিবেশ ও প্রতিবেশকে ঘিরে। অর্থাৎ এ ভূখণ্ডে সকল জড় এবং জীবকে ঘিরে আবর্তিত। সকল প্রকার রিপুর ঊর্ধ্বে উঠে অন্যায়-অবিচার, লোভ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। আমাদের সততা, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ শিক্ষায় শিক্ষিত ও বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ এবং দায়িত্বশীল নাগরিক প্রস্তুত করতে হবে। তবেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সহজতর হবে। বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অটুট এবং টেকসই করার ক্ষেত্রে প্রতিটি সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি বিশ্বাস করি, পিবজা এক্ষেত্রে অগ্রণী এবং নেতৃত্বদানকারী সংগঠনে পরিণত হতে পারে। পিবজা পরিবারের কমবেশি সবাই স্বনির্ভর এবং সমাজে প্রতিষ্ঠিত। তাই সকল দুর্নীতি এবং অন্যায়ের ঊর্ধ্বে থেকে সংগঠন এবং রাষ্ট্রের কল্যাণে নিবেদিত হয়ে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। একটি আদর্শিক এবং মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হোক এই প্রত্যাশা করছি। জয় বাংলা।

লেখক:ড.দিপু সিদ্দিকী, সহ-সভাপতি প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ জার্নালিজম এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন (পিবজা), সম্পাদক-ডেইলি প্রেসওয়াচ।ডিন: ফ্যাকাল্টি অব আর্টস এন্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস রয়েল ইউনিভার্সিটি ঢাকা।

Share: