বিআরটি প্রকল্পে কেন বারবার ঘটছে দুর্ঘটনা?

শাফিউল বাশারঃ বিআরটি প্রকল্পে দুর্ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগেও কয়েকটি দুর্ঘটনায় কমপক্ষে চারজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহতের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাজের সময় নিরাপত্তার যথাযথ নিয়ম না মানার কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা।

গত বছরের মার্চে বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার ধসে আহত হন দুই চীনা নাগরিকসহ চারজন। বিআরটি প্রকল্পের বিমানবন্দর এলাকায় ঘটে এই দুর্ঘটনা। এর ৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রকল্পের আব্দুল্লাহপুর এলাকায় ধসে পড়ে পিয়ার ক্যাপ।

এবার বিমানন্দর থেকে একটু সামনে জসিমউদ্দিনে ঘটল মর্মান্তিক আরেকটি ঘটনা। ক্রেন দিয়ে গার্ডার সরানোর সময় ক্রেন ছিড়ে পড়ে চলন্ত প্রাইভেটকারের ওপর। ঘটনাস্থলেই নিহত হন ৪ জন। এ সময় আহত হন আরও দু’জন।

বড় প্রকল্পের নির্মাণকাজের সময় যথাযথ নিরাপত্তা বিধান করার কথা প্রকল্পের চুক্তিতে বলা আছে। তারপরও বার বার কেনো ঘটছে এমন ঘটনা। এর জন্য কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক সাইফুন নেওয়াজ বলেন, দেখা যাচ্ছে কোনো ধরনের ভারি কনস্ট্রাকশনের কাজ করার সময় অবশ্যই তার জায়গায় বেরিকেড দিয়ে বন্ধ করে কাজ করতে হয়, যাতে মানুষের কোনো ক্ষতি না হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, গাড়ি চলছে তার ওপর দিয়ে কাজ চলছে কোনরকম সেফটি গাইডলাইন মানা হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই কর্তৃপক্ষের একটা দায় আছে। এটা তদন্ত করে আমাদের বের করা প্রয়োজন। আর ভবিষ্যতে যেনো এমন ঘটনা না ঘটে এজন্য সেফটি গাইডলাইনে মেনে কাজ করা প্রয়োজন।

বড় প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন কোনো প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে নিরাপত্তার বিষয়টি মনিটরিং করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

বুয়েটের পুরোকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ ইশতিয়াক আহমাদ বলেন, একটা তৃতীয় পক্ষ দিয়ে সেফটি গাইডলাইনগুলো মানা হচ্ছে কিনা এটা দেখা উচিত। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজের ধরণ চেঞ্জ করা উচিত।

২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের বহদ্দার হাটে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের তিনটি গার্ডার ভেঙ্গে পড়ে। এতে নিহত হন ১৩ জন। এ ঘটনায় একটি মামলা হলেও ১০ বছরেও শেষ হয়নি বিচারকাজ।

Share: