বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবনে একটিই ব্রত ছিলো- বাংলা ও বাঙালির মুক্তি:ড.কলিমউল্লাহ   

প্রেস ওয়াচ রিপোর্ট:রবিবার, সন্ধ্যায় মুজিব শতবর্ষ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র ১০২তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে জানিপপ কর্তৃক আয়োজিত বর্ষকালব্যপী জুম ওয়েবিনারে এক বিশেষ সেমিনারের ৩৭৬তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

জানিপপ-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন জামালপুরস্থ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক কর্নেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দিন এবং গেস্ট অব অনার হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন ইউএন ডিজএ্যাবিলিটি রাইটস চ্যাম্পিয়ন ও অনারারি প্রফেসর আবদুস সাত্তার দুলাল ও নেপাল থেকে সংযুক্ত ছিলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.জেবউননেসা।

 

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন, বগুড়া থেকে রুরাল ডেভেলপমেন্ট একাডেমীর উপ-পরিচালক মোঃ মাজহারুল আনোয়ার, সিটিজেন বাংলা ডট কম পত্রিকার সম্পাদক মোশফিক কাজল, দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার সাংবাদিক তোফায়েল আহমেদ, নীলফামারীর জলঢাকা থেকে পিএইচডি গবেষক ফাতিমা-তুজ- জোহরা ।

এবং মুখ্য আলোচক হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল রবীন্দ্র রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা আক্তার।

 

সভাপতির বক্তৃতায় ড.কলিমউল্লাহ বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান একটি নাম, একটি ইতিহাস। তাঁর সমগ্র জীবনে একটিই ব্রত ছিলো- বাংলা ও বাঙালির মুক্তির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করা। তিনি বলেন,এই শোকাবহ আগস্টে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামালপুরস্হ বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক কর্নেল(অব.) শরীফ বলেন, বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি শুধু একজন মহান নেতাই নন একজন দার্শনিকও বটে। বঙ্গবন্ধু ২৩ বছর পূর্বেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন বাঙালি জাতির স্বতন্ত্র রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কর্নেল শরীফ, মহাদেব সাহার কবিতার অংশবিশেষ পড়ে শোনান।….’তবু শেষবার ঘুমিয়ে পড়ার আগে তাকে আমার বলতে

ইচ্ছে করছিলো

সারা বাংলায় তোমার সমান উচ্চতার আর কোনো

লোক দেখিনি আমি।

তাই আমার কাছে বার্লিনে যখন একজন ভায়োলিন-বাদক

বাংলাদেশ সম্বন্ধে জানতে চেয়েছিলো

আমি আমার বুক-পকেট থেকে ভাঁজ-করা একখানি দশ

টাকার নোট বের করে শেখ মুজিবের ছবি দেখিয়েছিলাম

বলেছিলাম, দেখো এই বাংলাদেশ;

এর বেশি বাংলাদেশ সম্পর্কে আমি আর কিছুই জানি না!

আমি কি বলতে পেরেছিলাম, তার শেষবার ঘুমিয়ে পড়ার

আগে আমি কি বলতে পেরেছিলাম?’প্রধান অতিথির হৃদয়গ্রাহী আবৃত্তিতে সংযুক্ত অতিথিরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। বক্তব্যের শেষাংশে কর্নেল শরীফ জানিপপ’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন,বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে বুদ্ধিভিত্তিক চর্চায় নতুন প্রজন্মকে উৎসাহ জোগাতে সান্ধ্যকালীন বঙ্গবন্ধু চর্চার এ অভিনব পদ্ধতি সত্যিই প্রশংসনীয়। এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আব্দুস সাত্তার দুলাল বলেন,বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বহুমাত্রিক দার্শনিক ছিলেন। তিনি দল মত নির্বিশেষ সকলের। তিনি সারা দেশের‌জাতির পিতা। তিনি কোন নির্দিষ্ট দলের নন।

 

অধ্যাপক ডক্টর জেবউননেসা বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে তাঁর জীবনের বিনিময়ে এ বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন ।আর সেই বাংলাদেশের একটি বৃহৎ অর্থনীতির ভিত গড়ে দিয়েছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরো বলেন,সকল ষড়যন্ত্র ভেদ করে বাংলাদেশের জয় হবেই।

গবেষক ফারহানা আক্তার, ‘নতুন প্রজন্মের চোখে বাংলাদেশ’ শীর্ষক ধারাবাহিক বক্তৃতার দ্বিতীয় পর্ব উপস্থাপন করেন।’যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই’ বহুল প্রশংসিত গানটির উদ্ধৃতি দিয়ে ফারহানা আক্তার বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর দীর্ঘকাল ধরে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বাংলাদেশের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রজন্মকে অন্ধকারে রাখা হয়। ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চের ভাষণসহ বঙ্গবন্ধুর মূল্যবান রেকর্ড সমূহ বিনষ্ট কিংবা চাপা দিয়ে রাখা হয়। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সম্মোহনী ক্ষমতার ভয়ে কুন্ঠিত হয়ে কুচক্রী মহল এ ধরনের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল। যেখানে মেজর জিয়াউর রহমান তার ভাষণে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিটি চারবার উচ্চারণ করেছিলেন এবং ভাষণের শেষে ‘জয় বাংলা’ও বলেছিলেন। সেখানে তাদের দলের অনুসারীরা বঙ্গবন্ধুকে অবজ্ঞা করার মতো ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করে আসছে। অথচ বঙ্গবন্ধু কোন দলের নন। তিনি পুরো দেশের তথা বাঙালি জাতির পিতা। এ বোধোদয়টি সকলের হোক।

 

সাংবাদিক তোফায়েল আহমেদ ,বঙ্গবন্ধু চর্চার সান্ধ্যকালীন আয়োজন অব্যাহত রাখার জন্য জানিপপ’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বিএনসিসিও’কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন,পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা এখনো সক্রিয়। তিনি আরো বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুকে পৌঁছে দেয়ার জন্য জানিপপ’র সান্ধ্যকালীন এ ধারাবাহিক আলোচনাসভা নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

 

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা’র সহযোগী অধ্যাপক,বিভাগীয় প্রধান ও ডেইলি প্রেসওয়াচ সম্পাদক দিপু সিদ্দিকী। সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে সংযুক্ত ছিলেন, কুমিল্লার চান্দিনা থেকে জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা খোরশেদ আলম, মাস্টার্স প্রোগ্রামের শিক্ষার্থী হাবিবা প্রিয়া, রাজশাহী থেকে ড.মনোয়ার ও লিও জান্নাতুল ফেরদৌস তিথি।

Share: