ভোলায় দলের দুই নেতা নিহতের প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে গঠিত টিম সরেজমিন পরিদর্শন করেছে। ভোলায় পৌঁছে কেন্দ্রীয় নেতারা ঘটনা সম্পর্কে দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) দুপুর ১২ টায় জেলা বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রতিনিধি দলের প্রধান গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
এ সময় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ওইদিন ভোলার বিএনপি শান্তিপূর্ণ সভা করার পর দলীয় নেতাকর্মীরা যখন অফিসের সামনে দাঁড়িয়েছিল। তখন বিনা উস্কানিতে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ ও তারপর গুলি করে। শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। দুজন মারা যান। এমনভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছে চিকিৎসকরা শতচেষ্টা করেও নুরে আলমকে বাঁচাতে পারেন নি। বিএনপি যা করেছে সাংবিধানিক অধিকার থেকে করেছে। পুলিশের মাধ্যমে ভোট ছিনতাই করে ক্ষমতায় বসেছে বলে জনগণের অধিকারের আন্দোলন স্তব্ধ করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চায়।
হামলার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সুস্পষ্ট কথা সরকার যদি নির্দেশ না দিয়ে থাকে তাহলে আজও পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় নি কেন?
তিনি নিহত ও আহতদের পরিবারের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবি করে বলেন, পুলিশ যদি নিজের গরজে করে থাকে তাহলে সরকারের উচিৎ শাস্তির আওতায় আনা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, নুরে আলম ও আবদুর রহিমের রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে শোকের মাস শুরু করল। লাশের রাজনীতি কি আমরা করি? তারা (সরকার) নুরে আলম ও আবদুর রহিমের লাশের ওপর দিয়ে সারা দেশের মানুষকে কাঁদাল।
নিহত আবদুর রহিম ও নুরে আলমের নামে দুটি প্রতিষ্ঠান করার ঘোষণা দেন তিনি।
একই অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা এক বৃহৎ কারাগারে বসবাস করছি, শুধুমাত্র জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। বিনা উস্কানিতে পুলিশ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আমরা এর শাস্তি চাই। যেকোনো হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ তদন্তের নামে রুটিন ওয়ার্ক করে। আজ পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মী হত্যার কোনো বিচার হয়নি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন দুদু, অ্যাডভোটে জয়নুল আবেদিন, সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপন, হাফিজ ইব্রাহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিলকিছ জাহান শিরিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, মাহাবুবুল হক নান্নু, স্বেচ্ছাসেবকদল সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, যুবদল সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনয়েম মুন্না।
সংবাদ সম্মেলন শেষে কেন্দ্রীয় নেতারা নিহত আবদুর রহিমের কোড়ালিয়া গ্রামের বাড়িতে যান। সেখানে পরিবারকে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি নিহতের কবর জিয়ারত করেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষে দুই পরিবারকে অনুদান তুলে দেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। নিহত রহিমের স্ত্রী-সন্তানদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।