দিপু সিদ্দিকী
বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশও আজ বৈশ্বিক মন্দার কবলে। তবে সবাই সাশ্রয়ী হলে এ দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে দ্বিতীয় ধাপে ৫ বিভাগে গৃহহীনদের দুই শতক জমির কাগজপত্র ও ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ সব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।
ঠিকানাহীনদের জীবন বদলে দেয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ২৬ হাজারেরও বেশি পরিবার পেল স্থায়ী আশ্রয়। দিন বদলে গেল ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অভুক্ত থাকা অসহায়দের।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, দলমত নির্বিশেষে দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। এ সময় মাগুরা ও পঞ্চগড় জেলাসহ ৫২টি উপজেলাকে গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন তিনি।
সরকারপ্রধান তার বক্তব্যে বৈশ্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে আরও বলেন, বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো আজ ধুঁকছে তাদের অর্থনৈতিক মন্দা কাটাতে। সে তুলনায় বাংলাদেশ এখনো ভালো অবস্থায়। তাই বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে প্রতি ইঞ্চি জমি ব্যবহারের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারো কাছে হাত পেতে নয়, নিজেদেরই হতে হবে স্বাবলম্বী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমাস সরকার সমাজের সব স্তরের মানুষের জন্যই আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে যাচ্ছে। পাশাপাশি ঋণ দেয়া হচ্ছে এবং প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। সেই সুযোগ নিয়ে নিজেদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে জীবনটাকে আরও উন্নত করবেন এবং নিজেরাও ভূমি কিনে ঘর বাড়ি করার যোগ্যতা যেন অর্জন করতে পারেন সেটাও আমরা চাই। কারও কাছে হাত পেতে নয়, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে মর্যাদার সঙ্গে যেন বেঁচে থাকতে পারেন।
তিনি বলেন, এ সমাজটাকে আরও সুন্দরভাবে গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি গ্রামের মানুষ যেন সবধরনের নাগরিক সুবিধা পেতে পারেন সেটাই আমরা নিশ্চিত করতে চাই।
সরকার প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের সংগঠন তাই দেশের প্রতিটি মানুষকে ভালো রাখার দায়িত্বে কখনোই অবহেলা করে না সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারো কাছে যদি খবর থাকে বাংলাদেশের একটি মানুষ ভূমিহীন বা গৃহহীন রয়েছে অবশ্যই আমাদের খবর দেবেন। দল মত নির্বিশেষে যেই গৃহহীন থাকবে আমরা তাদেরকেই ঘর করে দেব, ঠিকানা এবং জীবিকার ব্যবস্থা করে দেব। দল মতের ভিন্নতা থাকতে পারে তাতে কিছু আসে যায় না। দেশটাতো আমাদের। আর আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, তার মানে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব আমার।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থেকে উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেন।
স্থানগুলো হচ্ছে: লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলাধীন চরকলাকোপা আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলাধীন গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকল্প, ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলাধীন চর ভেড়ামারা আশ্রয়ণ প্রকল্প, পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড় সদর উপজেলাধীন মহানপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প ও মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলাধীন জাঙ্গালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প।
গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান প্রকল্পের ওপর একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন এবং এরপরই একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।