fa

রোববার (৫ জুন) দুপুরে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপিকে দাওয়াত দেয়া হবে আওয়ামী লীগের এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল এ দাবি করেন। বলেন, ‘পদ্মা সেতুতো কারও পৈত্রিক ব্যাপার না। এটা রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টায় করা হয়েছে।’

তিনি সাংবাদিকদের অবগতির জন্য বলেন, ‘আরও একটি বিষয় আপনাদের জানাতে চাই, পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া করেছিলেন। একদিকে না, দুইদিকে। মাওয়াতেও এবং ওইপারে ফরিদপুরেও। সেগুলো কিন্তু কেউ উচ্চারণও করে না, বলেও না (ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে)। যমুনা সেতু যখন তৈরি হয় তখন একই অবস্থা ঘটেছে। যারা করলেন তাদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র একজনের নাম দিয়ে সবকিছু করে যমুনা সেতুর নামটাই পরিবর্তন হয়ে গেল। অর্থাৎ যেই ক্ষমতায় যায়, সবকিছু দখল করে নিতে চায়। এখানেও ঘটনাগুলো একইভাবে ঘটছে। এবং পদ্মা সেতুর সম্পর্কে যে অহেতুক অযৌক্তিক কথাবার্তা বলে দেশকে জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে, মানুষের দৃষ্টিকে অন্যদিকে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

এ সময় বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘সংকটতো আমার পদ্মা সেতু নয়, সংকট তো আমার ভোটের অধিকার, সংকট তো আমার অধিকার, সংকট তো আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, সংকট তো হচ্ছে আমার বিচার না পাওয়া। সংকট তো হচ্ছে অন্যায়ভাবে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া। এই বিষয়গুলো আমাদের সংকট। আমরা সে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলছি। সেই বিষয়গুলো নিয়েই মানুষদের একত্র করার চেষ্টা করছি। দেশ, জনগণ, রাজনৈতিক দলগুলোকে এক করার চেষ্টা করছি, এটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য এখন।’

আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে দাওয়াত দিতে আইনি বাধা নেই: আইনমন্ত্রী

এদিকে স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে শনিবার (৪ জুন) বিকেলে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে আলো জ্বালানো হয়। পদ্মা সেতুকে যান চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করতে শেষ মুহূর্তে চলছে রোড মার্কিংয়ের কাজ। সবকিছু ঠিক থাকলে ১৫ জুনের মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ হবে।

আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরায় হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এরপর মাদারীপুরের শিবচরে জনসভায় বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এ উপলক্ষ্যে ওই এলাকায় ১০ লাখ মানুষের জমায়েত করার পরিকল্পনা করেছে আওয়ামী লীগ।

পদ্মা সেতুর মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সারা দেশে একযোগে দেখানোর ব্যবস্থা করতে সব জেলা প্রশাসককে (ডিসি) চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পাশাপাশি অন্য সাত জেলায়ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানোর জন্য বলা হয়েছে।

খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এরইমধ্যে মূল পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি ছাড়িয়েছে ৯৯ শতাংশ। সার্বিক অগ্রগতি সাড়ে ৯৪ শতাংশের বেশি।

আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্ত আলোকিত

পদ্মা সেতু দেশের পদ্মা নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেলসেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে।

দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়কপথ এবং নিচের স্তরটিতে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসানো হয়। ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হয়েছে স্বপ্নের এ সেতু।