সম্প্রতি নিউইয়র্কে মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন পাকিস্তানের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি।
চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘ সদর দফতরে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট নিয়ে এক বৈঠকে যোগ দেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে ৩৩ বছর বয়সী বিলাওয়াল ভুট্টো। বুধবার (১৮ মে) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেনের সঙ্গে আলোচনাসহ শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিকদের সঙ্গেও আলোচনা করেন তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককে উৎসাহব্যঞ্জক, অত্যন্ত ইতিবাচক এবং ফলপ্রসূ বলে অভিহিত করে বিলাওয়াল বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, পাকিস্তানকে অবশ্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সর্বস্তরে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখতে হবে। আর এ বৈঠক ছিল তার প্রথম পদক্ষেপ।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফরে বিলাওয়াল
সাক্ষাৎকারে বিলাওয়াল বলেন, ব্লিংকিনের সঙ্গে আলোচনায় তার মূল লক্ষ্য ছিল বাণিজ্য-সম্পর্ক বৃদ্ধির দিকে। বিশেষ করে কৃষি এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে। এছাড়া নারীর ক্ষমতায়নের উদ্যোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করার জন্য পাকিস্তান ‘উন্মুখ’ হয়ে আছে বলেও জানান তিনি।
ভুট্টো জারদারি আরও বলেন, আমরা যদি অর্থনৈতিক, প্রতিরক্ষা এবং সামরিক সমন্বয়ের বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারি, তাহলে আরও ইতিবাচক দিকে এগিয়ে যেতে পারব।
ইমরান খানের মার্কিনবিরোধী বক্তব্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিলাওয়াল বলেন, এটি বড় মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র তত্ত্ব।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি পাকিস্তানিরা এটা বোঝে যে, গণতান্ত্রিক হতে এবং অর্থনৈতিকভাবে অগ্রগতির জন্য তাদের দেশকে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য সব দেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।
পাকিস্তানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিলাওয়াল বলেন, এ বিষয়ে পাকিস্তান ঈর্ষান্বিত নয়। আমরা বিশ্বাস করি, পাকিস্তান এবং ভারত উভয়ের জন্য বিশ্ব যথেষ্ট বড়।
প্রতিবেশী চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক রয়েছে পাকিস্তানের। আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক বেইজিংয়ের। তবে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ইসলামাবাদের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক চীনকে ক্ষুব্ধ করবে না বলেই মনে করেন বিলাওয়াল ভুট্টো।
এর আগে সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, আঞ্চলিক পরিস্থিতি ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইমরানের মস্কো সফরের পক্ষ নিয়ে যা বললেন বিলাওয়াল
মঙ্গলবার (১৭ মে) দুদিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রে যান বিলাওয়াল। এ সময়ে ব্লিংকেন ছাড়াও শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার আলোচনা হয়। এক টুইট বার্তায় ব্লিংকেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ বছরপূর্তির গুরুত্বের প্রতি আমরা জোর দিয়েছি। এই সম্পর্ককে আরও বড় জায়গায় নিয়ে যেতে দুই দেশের মধ্যে সমন্বিত সম্পর্কের প্রতি আমরা পারস্পরিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ।