প্রেস ওয়াচ রিপোর্টঃ আট বিভাগে ৮বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে “পল্লীবন্ধু পদক–২০২১” তুলেদেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯২ তম জন্মদিন উপলক্ষে প্রথমবারের মতো এই পদক প্রদান করা হল।
প্রয়াত এরশাদের নামে প্রবতিত এই পদক তার প্রত্যেক জন্মবার্ষিকীতে প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে জাপা। রোববার (২০ মাচ‘) হোটেল সোনারগাঁওয়ে জমকালো আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পদক, সম্মাননা, উত্তরীয় ও চেক হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে এরশাদের কমময় জীবনের উপর আলোচনা করেন এরশাদের ভগ্নিপতি হাবিবুর রহমান।
স্বাস্থ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফর উল্ল্যাহ চৌধুরী, সাহিত্যে স্বনামধন্য কবি ফজল সাহাবুদ্দিনের (মরণোত্তর) পক্ষে পদক নেন তার মেয়ে দিনা সাহাবুদ্দিন, কৃষিতে বিশিষ্ট কৃষি সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, সংগীতে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর (মরণোত্তর), তার পক্ষে পদক ও সম্মাননা গ্রহন করেন তার স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রো ইতি, শিক্ষায় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্ল্যাহ, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে বরেণ্য নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনাবিদ ইঞ্জিনিয়ার কামরুল ইসলাম সিদ্দিক (মরণোত্তর), তার পক্ষে পদক গ্রহণ করেন মেয়ে আরিফা কবির, ক্রীড়ায় বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ গোলাম সরোয়ার টিপু, শিল্পে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট শিল্পপতি আব্দুল ওয়াহেদ বাবুলের পক্ষে তার ভাই এমএ রহিম পদক গ্রহণ করেন।
জিএম কাদের বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কৈশোর থেকে যৌবন ও শেষ জীবন অবধি তিনি ছিলেন, একাধারে ছাত্র, ডানপিটে কিশোর, তুখোড় খেলোয়ার, সাহিত্যিক–কবি, দক্ষ প্রশাসক, জননন্দিত রাজনীতিবিদ। কারমাইকেল কলেজে অধ্যয়নকালে কলেজ ম্যাগাজিনের সম্পাদক ছিলেন। সে সময় একাধারে ৪ বছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ছিলেন।
![](https://dailypresswatch.com/wp-content/uploads/2022/03/dr-kkkkk-podok-300x169.jpg)
ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নকালে হয়েছিলেন ভার্সিটি স্পোর্টস ব্লু। এরপর সৈনিক হিসেবে পেশা গ্রহন করে তৎকালীন পাকিস্তান সেনা ফুটবল দলের অধিনায়ক হয়েছিলেন। এছাড়াও খেলতেন সেনাবাহিনী হকি দলে। রাজনীতিতে আসার পর যখন যেখানে হাত দিয়েছেন, সেখানেই তার নৈপুন্যের ছাপ রেখেছেন। তাঁর ক্ষমতা গ্রহন যে ভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন এটা আজ সর্বজন স্বীকৃত যে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নয় বছরের শাসনামল ছিল এ দেশে সু–শাসন, উন্নয়ন, সমৃদ্ধির এক নবযুগ। দেশের এমন কোন সেক্টর নেই, যেখানে তাঁর উন্নয়ন বা সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি।
রাষ্ট্রের প্রশাসনিক সংস্কার ও সার্বিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও সংস্কারের সুবিধা সম্প্রসারিত করেছিলেন। সাধারন পর্যায়ের মানুষ, চাষী, জেলে, মুটে–মজুর, শ্রমিকদের জীবনে কিভাবে সুখ–শান্তি–নিরাপত্তা উন্নতি আসতে পারে সে দিকে ছিল তাঁর তীক্ষ্ন দৃষ্টি। তিনি আপামর মানুষের বিশেষ করে গ্রাম পর্যায়ের মানুষের কল্যান সাধন ও স্বার্থ রক্ষার প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। পল্লীর মানুষের প্রকৃত বন্ধু হতে পেরেছিলেন। সে কারনেই সাধারন জনগন তাঁকে পল্লীবন্ধু খেতাবে ভূষিত করেছেন।
এ ছাড়াও কর্ম জীবনের শত ব্যস্ততার মাঝেও সাহিত্য র্চচা ও খেলাধুলা অব্যাহত রেখেছিলেন। এ পর্যন্ত তাঁর লেখা ২৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি নিজে খলোধুলা করতেন এবং খেলাধুলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ববিধি পদক্ষপে গ্রহন করেছেন। বাংলাদেশে গলফ–এর মতো অপ্রচলিত খেলার যে ব্যাপক প্রচলন আজ চোখে পড়ে, সেটা সম্ভব হয়েছিল তাঁর প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায়।
পদক প্রাপ্তি প্রতিক্রিয়া ডা. জাফর উল্ল্যাহ চৌধুরী বলেন, এরশাদ আপদমস্তক ভদ্রলোক ও বুদ্ধিমান ছিলেন তার দৃষ্টিটা ছিল প্রসারিত। ফেব্রুয়ারি মাসে তার অসামান্য অবদান ছিল, ওনি নিয়ম করেছিলেন সাইনবোৃডে বাংলা হতে হবে, রায় বাংলায় হতে হবে। ওনার আমলে কেউ না খেয়ে থাকেনি। ওনার সুচিন্তা না থাকলে এখন জনসংখা ৩০ কোটি হতো। ওনি প্রতিমাসে জনসংখ্যার মিটিংয়ে যেতেন, আজকে ৩০ কোটি জনসংখা হলে রাস্তায় চলা যেত না। টিসিবির
ট্রাকের সামনে মিছিল জাতিকে ভিখারিতে পরিণত করেছে।
শাইখ সিরাজ বলেন, পল্লী উন্নয়নে এরশাদের অবদান অনস্বীকার্য। তার সে সময়ের কাজগুলো বাংলাদেশকে আজকের জায়গায় আসতে অনেক সহায়তা করেছে। একজেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে অনেক সময় লাগত, এখন কৃষকরা সহজে পণ্য পৌঁছে দিতে পেরে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন।
লিপিকা এন্ড্রো বলেন, এন্ড্রো কিশোরকে মরনোত্তর সম্মাননা দেওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।