দিপু সিদ্দিকীঃ
আগামী ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে কোনো বাধা নেই বলে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) জানিয়েছেন হাইকোর্ট। এদিকে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে দুপক্ষের কথার লড়াই ততই বাড়ছে। কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না এক চুলও।
এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে দুটি প্যানেল। একটি গত দুই মেয়াদে দায়িত্বে থাকা মিশা-জায়েদ প্যানেল অন্যটি ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল। নির্বাচন উপলক্ষ্যে বুধবার গণমাধ্যমের কাছে নির্বাচনের ইশতেহার তুলে ধরেন ইলিয়াস কাঞ্চন। এ সময় সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তরও দেন তারা।
এ সময় এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, মঙ্গলবার এফডিসিতে এক নৃত্যশিল্পী তাকে জানিয়েছেন জায়েদ খান ওই শিল্পীকে মারার হুমকি দিয়েছেন। ওই শিল্পী নাকি বিষয়টি কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের সহসভাপতি প্রার্থী অভিনেতা ডিএ তায়েবকেও অবহিত করেন। এ ব্যাপারে তাদের কি অভিমত?
প্রশ্নের জবাবে ডিএ তায়েব বলেন, বিষয়টি সত্য। ওই নৃত্যশিল্পী বিষয়টি আমাকেও জানিয়েছেন। আমি আড়াই ঘণ্টা ওই নৃত্যশিল্পীকে তখন নিজের সাথেই রেখেছি। শেষ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এ সময় ডিএ তায়েবের পাশে বসা কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, এটা জায়েদ খানের ফাঁপর। এমন কিছু করা সম্ভব নয়।
কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের ২২ দফা ইশতেহার হলো-
২. চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট ২০২১- এর নীতিমালা অনুযায়ী শিল্পীদের কল্যাণে সর্বোচ্চ ব্যবহার।
৩. প্রধানমন্ত্রীর কাছে চলচ্চিত্রের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য সহজ শর্তে বড় অংকের ফান্ডের ব্যবস্থা করা।
৫. শিল্পী সমিতির মর্যাদা রক্ষা ও সদস্যদের অধিকার সংরক্ষণে সচেষ্ট থাকা এবং কেউ একবার সদস্য হলে তাদের সদস্যপদ আজীবন সংরক্ষিত থাকবে। তবে সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও রাষ্ট্রবিরোধী গুরুতর কর্মকাণ্ডে কারও সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ এলে এবং তদন্তসাপেক্ষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সদস্যপদ স্থগিত হতে পারে, যা সাধারণসভায় উত্থাপন করে চূড়ান্ত অনুমোদন নেওয়া হবে। যে কোনো দুর্যোগ, সমস্যা ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে শিল্পী সমাজের পাশে দাঁড়ানো ও সহায়তা করা।
৬.সহায়তা গ্রহণকারীদের সম্মান ও আত্মমর্যাদা রক্ষায় কোনো সহায়তা কর্মকাণ্ডের ছবি/ভিডিও জনসম্মুখে প্রকাশ না করা।
৮. পার্শ্ববর্তী দেশ ও বিভিন্ন দেশের শিল্পী সংগঠনের সাথে পারস্পরিক মতবিনিময়।
৯. মতবিনিময় এবং শিল্পী বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর।
১০. শিল্পীদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করা।১১. শিল্পী সমিতির ওয়েবসাইট সমৃদ্ধ করতে প্রযুক্তিগত আরও উন্নয়ন, সব শিল্পীর প্রফাইল তৈরি করা। বিশেষ করে নৃত্য ও অ্যাকশন দৃশ্যে শিল্পীদের প্রফাইল তৈরি করে আন্তর্জাতিক কাস্টিং ডিরেক্টরদের প্রদান করা। নৃত্য ও অ্যাকশন দৃশ্যে ভাষার ব্যবহার না থাকায় বিশ্বের যে কোনো দেশের চলচ্চিত্রে নৃত্য ও অ্যাকশন দৃশ্যে আমাদের শিল্পীরা যেন কাজ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করা, যা পার্শ্ববর্তী দেশ বিগত দিনে করেছে।
১৩. ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যে অভিনয় করা শিল্পীদের জন্য বিশেষ বিমা ও সবার জন্য গ্রুপ বিমার ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ।
১৪. শিল্পীদের চিকিৎসা কার্যক্রমের সুবিধার্থে কয়েকটি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক ল্যাবের সাথে বিশেষ ছাড়ের জন্য চুক্তির উদ্যোগ ও বাস্তবায়ন।
১৫. শিল্পীদের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান ও তাদের বাবা-মাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হবে।
১৬. চলচ্চিত্র শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ ও অচলাবস্থা কাটিয়ে তুলতে চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ও অভিজ্ঞদের নিয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন ও নতুন প্রযোজকদের চলচ্চিত্রের পাণ্ডুলিপি থেকে শুরু করে ছবি মুক্তি পর্যন্ত যাবতীয় সহায়তা প্রদান।
১৮. শিল্পী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া। যেখানে সব ধরনের শিল্পী তৈরির পাঠ্যসূচি ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।
১৯. নৃত্যশিল্পীদের জন্য ড্যান্স স্টুডিও ও ফাইট অ্যান্ড স্টান্ট স্টুডিও এবং অত্যাধুনিক ইকুইপমেন্টসমৃদ্ধ জিমনেসিয়াম স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া।
২০. সব শিল্পী উপযোগী মেকআপ সেলুন ও পার্লার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া।
২১. শিল্পীদের পেশার মান বৃদ্ধিতে দেশের ও দেশের বাইরের কিংবদন্তি শিল্পীদের নিয়ে বিশেষ সেমিনার ও ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করা।
২২. মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় সফর ও বিদেশে সাংস্কৃতিক সফরে শিল্পীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।