শাফিউল বাশারঃ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া কোনো সমাধান নয়। বরং আলোচনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সমস্যা সমাধান করা হবে।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শাবিপ্রবি ইস্যু নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর হেয়ার রোডে নিজ বাসভবনে শিক্ষামন্ত্রী এ প্রেস ব্রিফিং করেন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আন্দোলনে গত ৭ দিন ধরে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর জন্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে ধন্যবাদ জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক উল্লেখ করে ডা. দীপু মনি বলেন, আমরা মূল সমস্যাটা সমাধান করতে চাই। এখন যা হচ্ছে সেগুলো তো সমস্যার বহিঃপ্রকাশ। আমরা সমস্যার মূলটা খুঁজে সেটির সমাধান করতে চাই। এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সরকার সবাই একপক্ষ। এখানে দুইপক্ষ বলে কিছু নেই। আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে কিছুটা ভেঙে পড়েছেন। তারা একটু গুছিয়ে উঠুক। কিছুদিন পর আমরা সেখানে যেতে পারি। শিক্ষার্থীরা চাইলে আমরা যে কোনো সময় তাদের সঙ্গে বসবো।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক। তাদের সব দাবি-দাওয়া বাস্তবায়ন করবো। তারা অনশন ভেঙেছেন, এজন্য তাদের সাধুবাদ জানাচ্ছি।
শাবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ভিসির পদত্যাগ অন্য বিষয়। তাকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেন। তিনি পদত্যাগ করলেই তো সমস্যার সমাধান হবে না। এক ভিসি যাবেন, আরেক ভিসি আসবেন। সমস্যার জায়গায় সমস্যা থেকে যাবে।
এসময় অজ্ঞাত মামলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগে যা হয়ে গেছে, তা তো হয়েই গেছে। আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে ক্ষতি হোক সেটা আমরা চাই না। মামলার ফলে শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হবে না বলে জানান তিনি।
এরআগে, গত ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। এরপর থেকে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে টানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
এর অংশ হিসেবে গত ১৯ জানুয়ারি অনশন শুরু করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে ঢাকা থেকে বুধবার ভোর চারটায় ক্যাম্পাসে পৌঁছান অধ্যাপক জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হক। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পানি পান করিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।