মনোহরদী ভুয়া সনদে শিক্ষকতা ও পেনশন উত্তোলন অভিযোগ

প্রেসওয়াচ রিপোর্টঃ নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার লাখপুর কে ইউ সিনিয়র (ফাযিল) মাদরাসার বাংলা বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের  বিরুদ্ধে ভুয়া সনদে চাকরি ও পেনশন উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। একই সঙ্গে সেই মাদরাসার অধ্যক্ষ ও গভর্নিং বডির সভাপতির বিরুদ্ধে তাকে অবৈধভাবে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে।

গত ৬ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন দু’টি দপ্তর অবসর সুবিধা বোর্ড ও শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব বরাবর অভিন্ন দু’টি অভিযোগপত্র দাখিল করেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল ভয়েসবিডি২৪.কম এর সম্পাদক কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল। এতে লাখপুর কে ইউ সিনিয়র মাদরাসার বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ভুয়া সনদে শিক্ষকতা, পেনশন উত্তোলন ও অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম এবং সভাপতি চন্দনবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ হিরণ তাকে অবৈধভাবে সহযোগিতা করেছেন মর্মে অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রভাষক, বাংলা বিভাগ,লাখপুর কে ইউ সিনিয়র (ফাযিল) মাদরাসা একজন এইচএসসি পাস করা ব্যক্তি। তার বি.এ অনার্স ও এম.এ সার্টিফিকেট ভুয়া। তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা উত্তোলন করেছেন। তিনি ২৯/০৬/২০১৯ ইং কল্যাণ ট্রাস্টের আবেদন নং- 729296535, প্রাপ্ত টাকা- ৯৬৩,৫৭৮/- এবং ২৯/০৬/২০১৯ ইং অবসর সুবিধার আবেদন নং- 903927069, প্রাপ্ত টাকা- ২২,৩৬,৪৭৮/- উত্তোলন করেছেন। তার ১ম এমপিও হয় ০৭/১০/১৯৮৭ এবং তার ইনডেক্স নং – ০৫৮৬০৫।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালে ভুয়া সনদের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হলে তিনি তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদ উল্লাহ ও আমার কাছে তা ভুয়া বলে স্বীকার করেন এবং এম.এ পাসের সনদের বদলে প্রবেশপত্র জমা প্রদান করেন (কপি সংযুক্ত)। তাকে জালিয়াতির মাধ্যমে পেনশন উত্তোলনে সহযোগিতা করেছেন অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও স্বাধীনতা মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম যিনি অবসর কল্যাণ বোর্ডের সদস্য এবং অন্যজন অত্র মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও চন্দনবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আদুর রউফ হিরণ। এ জালিয়াতির বিষয়গুলো শিক্ষক আশরাফ অকপটে স্বীকারও করেছেন।

এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে মাদরাসার অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, আমার জানামতে তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি ২০১৭ সালে অবসরে গিয়েছেন। সনদপত্র ভুয়া হওয়ার বিষয় আমার জানা নেই। তার নিয়োগদাতাও আমি নই। তিনি আমার অনেক সিনিয়র এবং মান্য ব্যক্তি। আমার ৮ বছর দায়িত্ব পালনকালে তার কোন অনিয়ম চোখে পড়েনি।

অপরদিকে মানবিক কারণে অবৈধ সুবিধা দিয়েছেন মর্মে স্বীকার করে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও চন্দনবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ হিরণ বলেন , “আমি রাজনীতি করি, জনগণের ভোটে আমি চেয়ারম্যান। তার সনদ না থাকার বিষয়টা আমি জানি।তারপরও এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের চাপে আমাকে সই দিতে হয়েছে। আর সনদ দেখার দায়িত্ব আমার না। এত বছর এত অডিট হল তারা কেন ধরল না!
ওনি মুক্তিযোদ্ধা, তাই মানবিক কারণে ছাড় দিতে হয়েছে।”

ভুয়া সনদের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, “আমার সনদ ভুয়া নয়। আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছি আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হয়েও তা শেষ করতে পারি নি । আমার এম এ সনদ নাই প্রবেশ পত্র আছে।’ সুত্র – ভয়েসবিডি২৪.কম ।

Share: