![](https://dailypresswatch.com/wp-content/uploads/2020/09/20200816_101739-e1618226924142-169x300.jpg)
-দেখছেন, দেখছেন, ভাই-বোনে লাইগ্গা গেছে!!
– মানে কি?
– আরে, দেখছেন না, চেয়ারম্যান মরার সাথে সাথে ভাই বোনে ব্যাংকের মালিকানা নিয়া ফাইট!
– কোন ব্যাংকের কথা বলছেন?
– ওই যে, ব্যাক্তিগত প্লেনে যারা শ্যাম দেশে ঘুরতে যায়।
– অর্থ সব অনর্থের মূলভাই, টাকা থাকলেগন্ডগোলতো লাগবোই।
– এ সব ফালতু কথা বইলেন না ভাই, এই যে ট্রান্সকমের, ব্র্যাকের চেয়ারম্যান মারা গেলেন, কোই ওই খানে তো
কোনো গন্ডগোল নাই।
– শিক্ষ, ভাই শিক্ষা, শিক্ষা না থাকলে এই সব হবেই।
– কি বলেন শিক্ষা নাই! এইসব ছেলে-মেয়েরা, বাপের টাকায় সব ইংল্যান্ডের অক্সর্ফোড পাশ। যে অক্সর্ফোডে ইন্দিরা গান্ধী পড়তো। কি কন শিক্ষা নাই!
– তাহলে এতো শিক্ষিত হয়ে মধ্যপ্রাচ্যে আঙুল কাটাবাঙালী কন্ট্রাক্টার মরার সাথে সাথে মা’য়েপুতে কাইজ্জা লাগলো ক্যান?? টাকার জন্য ,ভাই টাকার জন্য।
– আসলেই টাকা যদি নিজে কষ্ট কইরা কামাইতো তায়লে এই ঝগড়া লাগতোনা । স্বামীর-অথবা বাপের কষ্টের কামানো টাকা টোকায়া পায় তো – তাই টাকার র্মম বুঝেনা কাইজ্জা করে। ক্যান ভাই মিল্লা মিইশ্শা খাইতে পারসনা!
– আপনিও তো গ্রুপ অব্ ইন্ডাষ্ট্রিজের মালিক তো আপনি কি করবেন বলে ঠিক করেছেন?
– ভাই আমিতো আর এমনি বড় হই নাই, আমি আর আপনের ভাবি দু’ইজনে নিজহাতে বিড়িবাইšধা ফেরী করছি, বহুত কষ্ট কইরা কারখানা বানাইছি।
– বিড়ি ফেরী করে. কারখানা কপাল , ভাই কপাল!!
– কিসের কপাল! আপনের ভাবি নিজে অফিসে অফিসে ঘুইরা সিএসপি অফিসারগো- সহানুভতি নিয়া তবে ডিজি ইন্ডাষ্ট্রিজ বীরু ভায়ের কাছ থেইক্কা পারমিশন বাইর করছে। পূর্ব-পাকিস্তান ভাই কোনো ঘুষলাগে নাই।
– আশা করি আপনার পর আপনার ছেলে-মেয়েদের, মাঝে কোনো গন্ডগোল হবেনা।
– ক্যেমনে কন?
– কারণ আপনার ছেলে স্কুল-কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ে, সব পরীক্ষায় প্রথম স্থান নিয়ে পাশ করেছে, র্শাপ ছেলে।
– আরে, ছেলে র্শাপ হইবোনা! আপনের ভাবি সিএসপিদের সানিধ্যে, সিএসপিদের, সক্রিয় সহযোগিতায় ইন্ডাষ্ট্রি বানাইছে- প্রশ্ন হইছে আমার মায়াগো নিয়া, প্রত্তেকটা পরীক্ষায় ডাব্বা, স্কুল কলেজে ডোনেশন দিয়া পাশ। টাকা দেইখ্খা বিয়া বইছে-কিন্তু মায়ার জামাইরা কারখানার ভাগ চায়। গন্ডগোল লাগবোই।
– তাহলে কি ভাবছেন?
– ভাবতাছি সব ট্যাকা কব্বরে, নিয়াযামু।
– কিন্তু ভাই কাফনের তো পকেটনাই।
– বাংগালীর বুদ্ধির, কাছে সব ফেইল। কাফনের পকেট নাই তো কি হইছে, সব ট্যাকা কবরে নিয়া যামু।
– যাহ্ তা হয় নাকি কবরে টাকা নিয়ে যাবেন!!
– ভাই বুদ্ধি থাকলে বুড়ার বিয়া হয়- আর এ তো আমার নিজের কামাই আমি নিজে কবরে নিয়া যামু কার বাপের কি!!
– বুঝলাম আপনের কষ্টের কামাই, পাকিস্তান আমলে ঘাড়ে ঝুড়ি ঝুলিয়ে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বিড়ি ফেরী করেছেন। তারপর ধীরে ধীরে কষ্টকরে শ্বশুরের জমিতে কারখানা করে বড় থেকে বৃহৎ হয়েছেন, কিন্তু কবরে কি করে টাকা নিয়ে যাবেন??
– কবরে টাকা নেওয়া খুবই সহজ ব্যাপার, একটু বুড়াহয়া- আমেরিকায় যায়া ম্যানেজ কইরা সব টাকা সাথে নিয়া কবরে যামু।
– এতো হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে কিকরে কবরে যাবেন? টাকার গরমে কি মাথা খারাপ হলো নাকিগাঁজা ধরেছেন!!
– মাথা খারাপও হয় নাই গাঞ্জাও খাইনাই!
– তাহলে??
– চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাহায্য নিমু।
– বাংলাদেশের??
– আরে না, আমেরিকার.।
– ব্যাপারটা একটু খুলে বলুন তো, আমেরিকার চিকিৎসকের সাহায্যে, কবরে কিভাবে টাকা নিয়ে যাবেন??
– ব্যাপার টাখুবই সোজা, একটু বুড়া হইলে দাঁত পড়বো, তহন আমেরিকায় যায়া সোনাদিয়া দাঁত না বান্ধাইয়া ক্যালিফোরনিয়াম দিয়া দাঁত বাধামু। জানেন ক্যালিফোরনিয়ামের দাম কতো?
– কত আর হবে, সোণার ভরি যদি ষাট্ সত্তর হাজার টাকা হয় তাহলে ক্যালিফোরনিয়ামের দাম এক লাখহবে।
– হয়নি হয়নি ফেল। মিয়াভাই এক গ্রাম ক্যালিফোরনিয়ামের দাম দেড় হাজার কোটি টাকা ।
– বলেন কি, দেড় হাজার কোটি টাকা, এক গ্রাম। পৃথিবী ঘুরছেনা আমার মাথা ঘুরছে??
– আপনার যাই ঘুরুক আমার তিনটা দাঁত বান্ধাইতে লাগবো প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। তারপর আমার কোমরে রব্যাথার জন্য, ষ্ট্যাবুলানচ্বানাইতে আরো সাড়ে পাঁচহাজার কোটি টাকা। ব্যাস চুপিচুপি ইন্ডাষ্ট্রি বেইচ্চা সারাজীবনের কামাই দশ হাজার কোটি টাকার বডি পার্টস নিয়া কবরে চইল্লা যামু।
– বাব্বারে, কবরে, টাকা নিয়ে যাওয়ার বুদ্ধিটা খুবই বৈজ্ঞানিক। সারা জীবন যা কামালেন কবরে নিয়ে গেলেন। কিন্তু ভাই..
– এহানে আবার কিন্তু খোঁজেন ক্যান? নিজের কামাইয়ের ট্যাকা নিজের লগে কবরে নিয়া গেলাম, এহানে আবার কিন্তু কি দেখলেন!!
– না বলছিলাম কি আপনার ছেলেতো খুব র্শাপ, যদি ও আপনি মরার পর জানতে পারে আপনার দাঁত ও কোমরের ষ্ট্যাবুলানচ্ ক্যালিফোরনিয়ামের তৈরী। তায়লে তো ও মর্গে নিয়া আপানার বডিরেকাইট্টা ছিইল্লা লবন লাগাইবো। আর যদি ওর বোন ও বোন-জামাই টের পায় – তায়লে তো আপনার মরার পর লাশ দখলের জন্য লাগবো কুদা-কুদি।
– এইটা কি কও? লাশ দখলের ফাইট!!
– দশ হাজার কোটি টাকার লাশ, কুদা-কুদি, মারা-মারি, ফাটা-ফাটি হবেনা!!!
– তায়লে কি কও? পরিবারের জ্বালায় মইরাও শান্তি পামুনা!
– কি জানি বাবা। তবে দেখেন কবরে টাকা নেয়ার অন্য কোনো রাস্তা পান কিনা?
– হায় খোদা ঘাটে এসে আমার তরী ডুবলো।
লেখকঃ জা-নেসার ওসমান। রম্য লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ।