“ধর্ষণ ও দ্রৌপদী”
এক সময় এই দেশে একটা রেয়াজ প্রচলিত ছিলো- সামাজিক মুখরোচক কোনো ঘটনাকে কেন্দ্র করে. ছোট্ট দু’পাতার কবিতা প্রকাশ হতো। এসব কবিতার বিষয় ছিলো, “ ভাবীর সাথে দেবরের পলায়ন” “ভাগ্নের সাথে মামীর দৈহিক সর্ম্পক” এমনি সব মুখোরচক হালকা রসের কবিতা।
একবার এমনি এক কবিতা ছাপলো, “যৌন শক্তির মহাবীর, দশ’বছরের জাহাঙ্গীর”।
সিরাজ গঞ্জের গ্রামের মাঝে হৈ চৈ পড়ে গেলো।
ঘটনাটা হলো গ্রামের এক ছেলে জাহাঙ্গীর বয়স মাত্র দশ। কিন্তু বিধাতার রসিকতায় জাহাঙ্গীরের পুরুষাঙ্গ বলিষ্ঠ অবস্থায় পঁচিশ বছরের যুবকের মতো সবল ও দীর্ঘ। জাহাঙ্গীর তার পাশের বাড়ীর বিধাব প্রমীলা মাসির সাথে রাতে ঘুমাতো। জাহাঙ্গীরের মা-বাবা, বেশ খুশী। কারণ রাতে জাহাঙ্গীর পাশের বাড়ীর একা বিধাব মাসির সাথে ঘুমাতে গেলে- মা-বাবার ঘুমের ও তাঁদের. সোহাগের সময়টা র্নিবিঘ্নে নিশ্চিতে পার হতো।
গোল বাধলো তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের সামাজিক পরিবেশের কারণে, বিধাব প্রমীলা মাসি কিছুদিন হয় জায়গা জমি সব বিক্রী করে.ভারতের কলকাতায় চলে গেছেন। জাহাঙ্গীরের বাবা-মা, প্রমীলা মাসির বাড়ীতে আসা নতুন প্রতিবেশীর অবিবাহিতা মেয়ে রাহেলার সাথে জাহাঙ্গীরকে ঘুমাতে পাঠালেন। রাহেলার বাবা-মা, বেশ খুশী হলেন। যূবতী মেয়ে রাহেলা গ্রমের বাড়ীতে একা ঘুমানোর চেয়ে জাহাঙ্গীর থাকলে একটু হলেও নিরাপত্তা পাওয়া যাবে।
কিন্তু বিধিবাম, মাঝ রাতে’ ঘুমন্ত রাহেলার যৌবন পুষ্ট শরিরে. জাহাঙ্গীর তার পূর্ণাঙ্গ পুরুষত্ব জাহির করতেই- রাহেলার ঘুম ভেঙে যায়। আর রাহেলা দশ বছরের জাহাঙ্গীরের পঁচিশ বছরের যুবকের মতো বলিষ্ঠ সবল ও দীর্ঘ পুরুষাঙ্গ দেখে ভয়ে চিৎকার
আর রাহেলার হৈ চৈ-এ, সবাই এসে হতবাক। প্রকৃতির এ-কি পরিহাস!!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- প্রাকৃতিক কারণে স্বভাবিক ভাবেই বয়ঃপ্রাপ্তির পর প্রতিটি পুরুষ ও রমণীর কামনা বাসনা জাগবেই। সেটাইতো স্বাভাবিক। তা না হলে সে তো অসুস্থ্য, হিজড়া।
কিন্তু বাংলাদেশে ধর্ষণ কি কারণে সামাজিক ব্যাধিতে পরিণতঃ হচ্ছে!! তিন বছরের শিশুকে রেপ!! এ কোন যৌন বিকৃতি!! শুধু কি তাই, মৃতের সাথে যৌন মিলন। একে তো ধর্ষণ বলা যাবে না। মৃতের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সঙ্গম, মৃতের আবার ইচ্ছা!! তা হলে এই যৌন বিকৃতি কেন?? মাদ্রাসার শিক্ষক দ্বারা কোমলমতি ছাত্রদের.উপর বলাৎকার! তা আবার নিয়মিত!! ভাবা যায়!! আবার অনেক গ্রামে দেখা যায়, ছাগল-ভেড়া, মুরগীর সাথে তরুণের বলাৎকার!!! কেন?
কারণ পৃথিবীর যে কোনো উন্নত দেশে, জার্মান,ফ্রান্স,আমেরিকা,রাশিয়া, ব্রাজিল, ব্যাংকক এমনকি, আমাদের. প্রতিবেশী দেশ ভারতেও প্রায় প্রতিটি বড় বড় শহরে.মফঃস্বলে বারাঙ্গনালয় বা নারী পুরুষের মিলনের ব্যবস্থা রয়েছে। পৃথিবীর সব দেশেই, সব সভ্য-সমাজে, যৌবনের কামনা বাসনা মেটানোর জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠে এমনি সব সেবা মুলক প্রতিষ্ঠান। যার ফলে সমাজে ব্যাধিরূপে ধর্ষণের প্রকাশ কমে আসে।
আজ থেকে প্রায় দু’হাজার বছর আগে, ইটালির পম্পেই শহর ভিসুভিয়াসের অগ্নুৎপাতে ধ্বংস হয়। সেই পম্পেই শহরেও তরুণ, যূবা-পুরুষ সকলের শারিরিক ক্ষুধা মেটানোর জন্য সূন্দরী রমনীয় রমনীর ব্যবস্থা ছিলো।
কিন্তু আপনারা নগরবিদরা কি করছেন! বয়ঃপ্রাপ্ত পুরুষের দৈহিক মিলনের জন্য কোনো ব্যবস্থা রাখছেন না!! কেবল মাত্র সমাজের ধনীদের. জন্য নিশ্চিতে যৌন-মিলনের ব্যবস্থা করছেন।
কিন্তু আপামর সাধারণঃ যূব-সমাজের, কি হবে???
সাধারণের পক্ষে তো সম্ভব নয় প্লেন চার্টার করে. কেউ কেউ আবার প্রাইভেট প্লেনে চড়ে বিদেশে পাড়ি যমান যৌন শুখ মেটাতে। আজ ব্যাংকক, কাল ব্রাজিল, পরষূ মুলাঁ-ঘুঁজ চল, যৌন ক্ষুধা মিটায়।
কিন্তু স্যার আম জনতা, বিদেশ তো দূরে. থাক নিজ দেশের পাপিয়া পিউ কাহাঁর কাছেও ভিড়তে পারে. না। তথাকথিত পাঁচ-তারা হোটেলে রুম বুক করতে পারে. না। তাহলে সমাজের এই ধর্ষণ উপদ্রব কমবে কি ভাবে??
বাংলা দেশের শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনের ডাক-সাইটে নেতা নেতৃ বলেছেন, মৃত্যুদন্ড দিয়ে ধর্ষণ রোধ করা যাবে না। ধর্ষণ রোধে শিল্প-সংস্কৃতির সুবাতাস ঘরে. ঘরে. ছড়িয়ে দিতে হবে। তবেই সমাজ সুন্দর. হবে ধর্ষণ কমবে। কারণ আপনারা একটু চোখ ফেরালেই দেখবেন বাংলা দেশের শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনে মাঝে মাঝে ভিডিও ভাইরাল হয় কিন্তু কোনো ধর্ষণ নেই। শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনে ধর্ষণের কোনো স্থান নেই।
বর্তমানে ধর্ষণের পরিনামে, পরিনয় বা বিবাহ ধর্ষণরোধে এক যুগান্তকারি পদক্ষেপ রাখবে বলে আমাদের. সকলের. বিশ্বাস। ধর্ষণের. উপদ্রব কমাতে বিবাহ এক বিপ্লব আনবে বলেই মনে হচ্ছে।
এই যে সেদিন “ ফেনীতে কারাগারের ফটকেই হলো ধর্ষণের মামলার আসামি ও ভুক্তভোগীর বিয়ে। উচ্চ আদালতের এক আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহসপতিবার এই বিয়ে হয়”(প্রথম আলো,শেষ পাতা,
২০ নভেম্বর.২০২০)। সাধুঃ সাধুঃ দারুণ এক খবর! অবিশ্বাস হলেও সত্য ঐ একই দিন, “ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণে, মজনুর যাবজ্জীবন। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে. রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি (পিপি) আফরোজ ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ”।
(সমকাল, প্রথম পাতা, ২০ নভেম্বর.২০২০)।
সত্যি সেলুকাষ কি বিচিত্র এই দেশ!!
সে-দিন শুনলাম, লাইলী বলছে,
-“ মজনু ভাই, আব্বাতো, তোমার লগে আমার বিয়া দিতো না।”
-“তাহইলে কি করি??”
-“এক কাম কর।”
-“কি? কি? কি-কাম?”
-“ তুমি আমারে. পাট-ক্ষ্যেতে নিয়া ধর্ষণ কর।”
-“ তুই এইডা কি কস! লাইলী। ধর্ষণ করলে পুলিশ আমারে. ধরবো না!!”
-“ হ, ধরবো। তারপর বড়গো রায়ে আমাগো বিয়া হইবো। চিন্তা কি।”
-“উহঃ লাইলী তুই ঠিকই কইছোস, আই লাব ইয়ূ। ধর্ষণ করলে ধর্ষণ মামলার আসামি ও ভুক্তভোগীর বিয়ে।
কিন্তু লাইলী, একটা কথা।”
-“ কি কথা কও??”
-“ মাঝে মাঝে যে দেখি গ্যাং-রেপ, মানে এক তরুণীরে. সিরিয়াল ফালায়া কয়েকজন তরুণ ধর্ষণ করে।
তখন বড়রা কার লগে ভুক্তভোগীর বিয়া দিবো।”
-“ক্যা, মজনু ভাই, তুমি জী-টিভির সিরিয়াল দেখছো না, যেই তরুণীরে. সিরিয়াল ফালায়া ধর্ষণ করবো তারে.