অনুমোদনের অপেক্ষায় যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। বাদ পড়েছেন বিতর্কিতরা

অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও যুবলীগের সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনার সম্মতি পেলে যেকোনো সময় ঘোষণা হতে পারে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি। দীর্ঘ সময় পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত যাচাই-বাছাই শেষে কমিটি চূড়ান্ত করেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
কমিটিতে সাবেক ছাত্রনেতাদের পাশাপাশি পেশাজীবীদের স্থান দেয়া হয়েছে। যারা প্রত্যেকে ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরে জড়িত ছিলেন। কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন বিগত কমিটির অর্ধশতাধিকেরও বেশি নেতা। যাদের মধ্যে নানা কারণে বিতর্কিত রয়েছেন অনেকেই। বেশ কয়েকজন ইচ্ছাপোষণ না করায় কমিটিতে রাখা হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য মতে, প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির আকার বাড়ানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ১৫১ থেকে বাড়িয়ে ১৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি জমা দেয়া হয়েছে। প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ বাড়ানো হয়েছে।
বেশ কয়েকটি সম্পাদকীয় ও উপ-সম্পাদকীয় পদ বাড়ানো হয়েছে। প্রস্তাবিত কমিটি সম্পর্কে ইতোমধ্যে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা অবগত আছেন এবং তিনি সিগন্যাল দিলেই দপ্তর থেকে অনুমোদন করা হবে।
শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর গত বছরের ৬, ৯, ১৬ , ২৩ ও ২৯ নভেম্বর যথাক্রমে কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও মৎস্যজীবী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনের মধ্যদিয়ে দুর্নীতি, চাঁদাবাজ, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গকারী ও বিতর্কিতমুক্ত সংগঠন গঠনের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর গত সপ্তাহে কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ ও মৎস্যজীবী লীগের কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। যুবলীগ ও ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেসে প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশ চেয়ারম্যান এবং ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর বিতর্কমুক্ত যুবলীগ গড়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন এ শীর্ষ দুই নেতা। যুবলীগকে মানুষের কল্যাণে মানবিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করছেন তারা।
সূত্র মতে, কমিটি গঠনে দীর্ঘ সময় নেয়ার কারণ হিসেবে কংগ্রেসের পর সিটি নির্বাচন, বেশ কয়েকটি উপনির্বাচন, সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতির কথা বলা হলেও এমনটা নয়। পদপ্রত্যাশীদের অধিকতর যাচাই-বাছাই করতে সময় নিয়েছেন দুই শীর্ষ নেতা।
এবার কমিটিতে আসতে প্রায় ১৬ শতাধিক পদপ্রত্যাশীর আবেদন জমা পড়ে। কয়েকটি ধাপে জীবনবৃক্তান্ত যাচাই-বাছাই করা হয়। সর্বশেষ প্রায় তিন শতাধিক পদপ্রত্যাশীর তথ্য সংগ্রহ করা হয় গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে।
পদপ্রত্যাশী এবং পরিবারের রাজনৈতিক পরিচয় খতিয়ে দেখা হয়, বিশেষ করে দলের দুঃসময়ের ভূমিকা। পরিবারের সকল সদস্যের আয়ের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হয়েছে। এরপর কয়েক দফা হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী কমিটি সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে।
সূত্র বলছে, এবারের যুবলীগের কমিটিতে থাকছে ভিন্নতা বা চমক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গঠনে উদ্বুদ্ধ বিভিন্ন পেশাজীবীদের (আইনজীবী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, গণমাধ্যমকর্মী) ঠাঁই দেয়া হয়েছে।
ছাত্রলীগের শীর্ষপদে ছিলেন এমন বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে আনা হয়েছে। বিগত কমিটিতে পদবঞ্চিত হয়েছেন এমন বেশ কয়েকজন পরিচিত যুব নেতাকে স্থান দেয়া হয়েছে।
জেলাপর্যায়ের কয়েকজনকে আনা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটিতে। এবার সিসি (সেন্ট্রাল কমিটি) কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। সেখানেও সাবেক ছাত্রনেতাদের প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বিতর্কমুক্ত রাখতে কমিটি গঠনে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। কমিটি গঠন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত। নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী অনুমোদন দেয়া হবে।
Related News
দেশে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠানিক রূপ দিতে বিএনপির সহযোগিতা চাইলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
দিপু সিদ্দিকীঃ দেশে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠানিক রূপ দিতে বিএনপির সহযোগিতা চেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুলRead More
কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই: ভাইয়ের বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের
প্রেসওয়াচ রিপোর্টঃ ওবায়দুল কাদের ও তার ভাই আবদুল কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুলRead More