কাঁচামরিচের দাম কেজিতে ১০০ টাকা কমলেও বেড়েছে সবজির দাম

ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি করায় নীলফামারীতে এর দাম কেজিতে ১০০ টাকা কমলেও বেড়েছে সবজির দাম। সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে নীলফামারীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব আড়ত ও কাঁচা সব্জির দোকান আমদানি মরিচে সয়লাব। তবে দেশি মরিচের দেখা মেলেনি। কাঁচামরিচকে অনেকে ঝাল নামেও ডেকে থাকেন। এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে নীলফামারীর বাজারেও অজ্ঞাত কারণে বেড়ে চলেছে সবজির দাম। বন্যায় যে ফসলের ক্ষতি হয়েছে তার দাম যেমন বেড়েছে তেমনই বন্যার সঙ্গে সম্পর্কই নেই এমন সবজি বা ফসলের দামও হঠাৎ-ই আকাশচুম্বি।

গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে জেলার পাইকারি বাজারে মরিচের দাম কমেছে কেজিতে ১০০ টাকা। এর আগে প্রতি কেজি মরিচ খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ২৪০-২৫০ টাকায়।
বর্তমানে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৬০-২০০ টাকায়। তবে আড়তদাররা বলছেন, প্রতি কেজি মরিচ পাইকারি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ বন্যার দোহাই দিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী মরিচের বাজার আকাশচুম্বি করেছে। পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারের যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছেন তারা।
ওই মার্কেটের খুচরা ব্যবসায়ী ইলিয়াস আহমেদ জানান, আড়ত থেকে ৫ কেজি মরিচ কিনলে পচা বের হয় আধা কেজি, আবার খুচরা বিক্রিতে ভোক্তাদের একটু বেশি দিতে হয়, বিক্রি না হলে ঘাটতি হয়। এমন নানা কারণে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে আমদানির মরিচের আমদানি বাড়লে ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি করা যাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, ২০১৯-২০ চলতি খরিপ-১ মৌসুমে ৪১৬ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের চাষ করা হয়। আর রবি মৌসুমে ১ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এতে দুই মৌসুমে ফলন হয়েছে ৪ হাজার ১৫৩ মেট্রিক টন।
অনুকূল আবহাওয়া আর ভাল দাম পাওয়ায় চাষিরা মরিচ চাষের ওপর ঝুঁকে পড়েছে। আগামীতে আরও বেশি চাষ করার প্রস্ততিও নিচ্ছেন অনেকেই। এই মৌসুমে চাষিরা তাদের উৎপাদিত মরিচ বিভিন্ন আড়তে কেজি প্রতি ১৭০-১৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। আবার খুচরা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন হাট বাজারসহ ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করছেন ২৪০-২৫০ টাকায়।
জেলা শহরের কিচেন মার্কেটে সবজি কিনতে এসে কথা হয়, নিউবাবু পাড়ার মিঠুন রায়ের সাথে। তিনি জানান, ভারতীয় মরিচ এসে স্বস্তি ফিরে পেয়েছে ভোক্তারা, কিন্ত স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজির বাজার একেবারে নাগালের বাইরে।
তিনি বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে এমন কী হলো, ৪০ টাকার পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায় কিনতে হলো। প্রকার ভেদে আলু প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৪০ টাকা, কচুর বই (সজি) ৫ টাকা বেড়ে ২৫ টাকা, ৪০ টাকার পটল ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা, ঢেঁরস ৫ টাকা বেড়ে ৩০ টাকা, ঝিঙা ৪৫ টাকা যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২ টাকা, ৩৬ টাকার মুলা ৪ টাকা বেড়ে ৪০ টাকা, প্রকার ভেদে বেগুন ১০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা।
এদিকে, প্রতিকেজি রসুন ১১০ টাকা যা গত সপ্তাহে ছিল ৯০ টাকা, আদা প্রতিকেজি পাইকারি ১০০ আর খুচরা বিক্রি ১২০ টাকা। করলা ১০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা, শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা যা গত সপ্তাহে ছিল ২২০ টাকা, শসা ১০ টাকা বেড়ে ৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ১০ টাকা বেড়ে ৩০ টাকা, কাঁচকলা ৫ টাকা বেড়ে প্রতি হালি ২৫ টাকা হয়েছে।
জেলার ডোমার উপজেলার পাঙ্গা মটুকপুর ইউনিয়নের পুরান মেলা পাগলি মা’র হাট কাঁচা মরিচের জন্য বিখ্যাত। এই হাট থেকে গত মৌসুমে প্রতিদিন ১৫-২০ ট্রাক কাঁচামরিচ ঢাকা, সিলেট, যশোর ও কুষ্টিয়া থেকে মহাজনরা এসে মরিচ নিয়ে যেত।

Share: