ঢাকা, ডেইলি প্রেসওয়াচঃ শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। যদিও এর ফলে শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি পূরণ হয়নি। এমনকি ১৩তম গ্রেডে কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের বেতন কমানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সহকারী শিক্ষকদের উন্নীত বেতন স্কেলে বেতন নির্ধারণ প্রসঙ্গে নতুন বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের উপসচিব হায়াত মো. ফিরোজ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গতকাল বুধবার (১২ আগস্ট) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের নিকট পাঠিয়ে এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের উন্নীত স্কেলে বেতন নির্ধারণের ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ কর্তৃক নিম্নরূপ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে-
>> বেতন স্কেল উন্নীত হওয়ার পূর্বে সহকারী শিক্ষক পদধারীদের যিনি যে সংখ্যক টাইমস্কেল পেয়েছেন, উন্নীত বেতন স্কেলের উপরে সেই সংখ্যক টাইমস্কেল গণনা করে বেতন স্কেল উন্নীত করার অব্যবহিত পূর্বে তার সর্বশেষ প্রাপ্ত মূল বেতনের ভিত্তিতে বেতন নির্ধারণ হবে।
>> বেতন স্কেল উন্নীতকরণের তারিখে টাইমস্কেলসহ নিরূপণকৃত স্কেলে কোনো কর্মচারীর বর্তমান মূল বেতন উক্ত স্কেলের সর্বনিম্ন ধাপের কম হলে সর্বনিম্ন ধাপে বেতন নির্ধারণ করতে হবে।
>> বর্তমান মূলবেতন নিরূপণকৃত স্কেলের সর্বনিম্ন ধাপের চেয়ে বেশি হলে এবং উক্ত স্কেলের কোনো ধাপের সমান হলে সেই ধাপে বেতন নির্ধারণ করতে হবে।
>> বর্তমান মূল বেতন নিরূপণকৃত স্কেলের সর্বনিম্ন ধাপের বেশি হলে এবং উক্ত স্কেলের কোনো ধাপের সমান না হলে সে ক্ষেত্রে অব্যবহিত উচ্চতর ধাপে বেতন নির্ধারণ করতে হবে।
>> স্কেল উন্নীতকরণের আদেশ জারির পূর্বের কোনো বকেয়া পাবেন না।
এর আগে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের গ্রেড গত ফেব্রুয়ারিতে উন্নীত করে সরকার। সারাদেশের তিন লাখ ৭৫ হাজার শিক্ষকের বেতন বাড়িয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি আদেশ জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বেতন বাড়ানোর ফলে ওই শিক্ষকরা এখন জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে (১১ হাজার টাকার স্কেল) বেতন পাবেন। এতোদিন সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা ১৪তম গ্রেডে (১০ হাজার ২০০ টাকা) এবং প্রশিক্ষণবিহীনরা ১৫তম গ্রেডে (৯ হাজার ৭০০ টাকা) বেতন পেতেন।
তবে বেতন বাড়ানোর এ পদক্ষেপে খুব বেশি সন্তুষ্ট হতে পারেননি প্রাথমিক শিক্ষকরা। তাদের দাবি, প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়েনি বেতন। এমন কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষকদের বেতন কমারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সহকারী শিক্ষকরা আশা করছিলেন, তাদের বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে (১২ হাজার ৫০০ টাকা) উন্নীত করা হবে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় এ প্রস্তাবে সায় দেয়নি। বেতন স্কেল উন্নীতকরণের দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন।