কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের ফুলবাড়ী উপজেলা প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়েছেন। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ওই সাংবাদিক ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ফুলবাড়ী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সারওয়ার পারভেজ।
এলাকাবাসী ও আহত সাংবাদিক আমিনুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা জানান, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের উপজেলা প্রতিনিধি ও ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি হাইস্কুলের সিনিয়র শিক্ষক আমিনুল ইসলামের (৫৫) সঙ্গে পানি মাছকুটি গ্রামের মৃত শামছুল হকের ছেলে মোখলেছুর রহমান গঙের দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। গত ১৫ জানুয়ারি এ নিয়ে আমিনুল ইসলাম থানায় অভিযোগ দিলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মোখলেছুর গং। এরই জেরে শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম বাড়ি থেকে বের হয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় জনৈক আবুল মিস্ত্রির বাড়ির সামনে মোখলেছুর ও তার ভাই মিজানুর রহমান, মানিক মিয়াসহ বেশ কয়েকজন তার পথরুদ্ধ করে এবং লোহার রড ও লাঠি দিয়ে আমিনুলের ওপর হামলা চালায়। হামলায় আমিনুলের মাথা ফেটে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের একটি জমি নিয়ে বিরোধের কারণে আমি কয়েকদিন আগে থানায় মোখলেছুর গঙের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। তারা ওই জমির কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এ কারণে তারা আমার ওপর ক্ষুদ্ধ হয়ে রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।’
তবে সাংবাদিক আমিনুলের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে মোখলেছুর রহমান জানান, হামলা নয়, জমি নিয়ে উভয়পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন।
মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘আমাদের একটি জমি নিজেদের দাবি করে সাংবাদিক আমিনুল থানায় নালিশ করেছেন। ওই জমিতে আমাদের ধানের চারা রোপণ করতে নিষেধও করেছেন। আমরা সেই বিরোধপূর্ণ জমিতে ধানের চারা রোপণ করিনি। কিন্তু শনিবার সকালে আমরা আমাদের আরেকটি জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে গেলে সাংবাদিক আমিনুল ও তার পরিবারের লোকজন বাধা দেয়। এতে উভয় পক্ষের বিকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। তখন উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হই। আমরা নিজেদের জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে গেলে তারাই আমাদের ওপর চড়াও হয়।’
ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. তাসলিমা নাসরিন শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদককে জানান, সাংবাদিক আমিনুলের মাথায় ও হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার মাথায় ব্যান্ডেজ করা হয়েছে এবং হাতের আঘাতস্থলের এক্স-রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা স্থীতিশীল রয়েছে।
ফুলবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) সারওয়ার পারভেজ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আহত সাংবাদিকের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।