ডেইলি প্রেসওয়াচ রিপোর্ট: ১১ মার্চ ২০২৪, সোমবার সকাল ১১:০০ টায় রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা’র তেজগাঁও স্হায়ী ক্যাম্পাসে ‘বঙ্গবন্ধু এবং ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধানবক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)’র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চেয়ার প্রফেসর দেশবরেণ্য ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড.সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
অতিথিবক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন শেখ হাসিনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড.প্রফুল্ল চন্দ্র সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. শওকত আরা হোসেন ও রয়েল ইউনিভার্সিটির নবনিযুক্ত রেজিস্ট্রার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মুশফিকুর রহমান।
অধ্যাপক ড.সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন,৭ মার্চের ভাষণ হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জীবনের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত অথচ শ্রেষ্ঠ ভাষণ’। মূলত এই ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি রাজনীতিবিদ থেকে রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছিলেন।সত্যিই এটা কল্পনাতীত, মাত্র ১৮ মিনিটের ছোট্ট একটা ভাষণ দিয়ে বঙ্গবন্ধু সমগ্র বাঙালি জাতিকে জাগিয়ে তুলতে পেরেছিলেন স্বাধিকারের দৃঢ় প্রত্যয়ে। এটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের জাদু।
তিনি আরো বলেন,বঙ্গবন্ধু ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতা। তিনি জানতেন, ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বঙ্গবন্ধুর জনসভায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই ভাষণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন। তিনি সুকৌশলে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন, যে কারণে পাকিস্তানি সামরিক জান্তারা বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে বিচার করার সুযোগ পেল না।
আলোচনা অনুষ্ঠানের সভাপ্রধান রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকার উপাচার্য অধ্যাপক ড.মেসবাহ কামাল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দু ধরনের মুক্তির কথা বলেছেন। একটি হলো সামগ্রিক মুক্তি এবং হল রাজনৈতিক মুক্তি। বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষণ বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পারি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার সংগ্রাম ছিল আংশিক এবং মানুষের মুক্তির সংগ্রাম ছিল চিরন্তন। বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে মুক্তির সংগ্রাম প্রথমে উল্লেখ করেছেন এবং পরে স্বাধীনতার সংগ্রামের কথা বলেছেন।
অধ্যাপক ড.প্রফুল্ল চন্দ্র সরকার বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বিনাবাক্যে সমগ্র বাঙালি জাতি স্বাধীনতার প্রত্যয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল।
অধ্যাপক ড.শওকত আরা হোসেন বলেন, স্বাধীনতার সংগ্রামে ৮০ ভাগ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন কৃষক । এই মেহনতী কৃষক শ্রমিক ভাইদের অর্থনৈতিক মুক্তি ও প্রাপ্য সম্মান নিশ্চিত করে না গেলে স্বাধীনতা অর্থবহ হবে না।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব মুশফিকুর রহমান বলেন,পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক ভাষণগুলোর প্রায় সব কটিই ছিল লিখিত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ অলিখিত।
আলোচনা সভা শেষে কবিতা আবৃত্তি ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
সভাটি সঞ্চালনা করেন রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা’র ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সাইন্স এর ডিন ড. দিপু সিদ্দিকী এবং ইংরেজি বিভাগের কো-অর্ডিনেটর মালবিকা মজুমদার। আলোচনা শেষে কুইজ প্রতিযোগিতা পরিচালনা করেন ইংরেজি বিভাগের প্রধান জহরত আরা। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে অনুষ্ঠিত হয় কবিতা আবৃত্তি। আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষিকা ইউকি বড়ুয়া এবং তাসনিমা ক্রোরি।