বঙ্গবন্ধু ছিলেন সমগ্র বাঙালির এবং সারা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল : ড.কলিমউল্লাহ   

প্রেসওয়াচ রিপোর্ট:রবিবার,  সন্ধ্যায়  শতবর্ষ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র ১০২তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে জানিপপ কর্তৃক আয়োজিত বর্ষকালব্যপী জুম ওয়েবিনারে এক বিশেষ সেমিনারের ৩৬৯তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

জানিপপ-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন, ইউএন ডিজএ্যাবিলিটিস রাইটস চ্যাম্পিয়ন ও অনারারি প্রফেসর আবদুস সাত্তার দুলাল এবং গেস্ট অব অনার হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জেবউননেসা,বগুড়া থেকে রুরাল ডেভেলপমেন্ট একাডেমির ডিডি ও পিএইচডি ফেলো মোঃ মাজহারুল আনোয়ার ও ইন্টারন্যাশনাল রবীন্দ্র রিসার্চ ইন্সটিটিউটের পরিচালক ও সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা আক্তার।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের ফ্যাকাল্টি কাজী ফারজানা ইয়াসমিন, নীলফামারীর জলঢাকা থেকে পিএইচডি গবেষক ফাতেমা তুজ জোহরা ও বগুড়া থেকে সিটিজেন বাংলা ডট কম পত্রিকার সম্পাদক মোশফিক কাজল

এবং মুখ্য আলোচক হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন গোপালগঞ্জস্থ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার এন্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ’র অধীনে পিএইচডি গবেষণারত প্রশান্ত কুমার সরকার।

সভাপতির বক্তৃতায় ড.কলিমউল্লাহ বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন সমগ্র বাঙালির এবং সারা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল এবং শেষ ঠিকানা। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।

প্রফেসর ড.মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও সাবেক ভিসি

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুস সাত্তার দুলাল, বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের নিহত সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

জনাব বলেন, যিনি মহামানব হবেন- তিনি হয়ে উঠবেন ক্রমে ক্রমে মৃত্যুঞ্জয়ী, আপসহীন, নিঃস্বার্থ ও হৃদয়বান। বঙ্গবন্ধু ছিলেন তেমনি একজন নেতা। আমাদের দুর্ভাগ্য এবং পরিতাপের বিষয় তাঁকে অনুসরণ এবং অনুকরণ করার মত কোন যোগ্য নেতৃত্ব এখন পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ধৈর্যশীল হলেও আমরা স্মৃতিভ্রষ্ট জাতিতে পরিণত হয়েছি।

অধ্যাপক ড.জেবউননেসা

অধ্যাপক ড. জেবউননেসা বলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলেন। আর্থিক অনটনের শিকার হয়ে ঘরের রেফ্রিজারেটরটিও তিনি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে এমন অনেক উদাহরণ এখনো হিমাগারে। এগুলো খুঁজে বের করতে হবে। গবেষণা করে এগুলো জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। তিনি আরো বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধুই না বঙ্গমাতাও ছয়দফা আন্দোলন বেগবান করার নেপথ্য রূপকার ছিলেন। বোরখা পরে ছদ্মবেশে লিফলেট বিতরণ করেছেন তিনি। বঙ্গমাতা জীবনের নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে তৎকালীন ছাত্রনেতা গাজী গোলাম মোস্তফাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে বঙ্গবন্ধু নির্দেশ ও পরামর্শ পৌঁছে দিতেন।

প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ এতদিনে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতো। গবেষক প্রশান্ত কুমার বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তার গবেষণার সুবাদে বিভিন্ন খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ এবং আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার পক্ষে বাস্তব এবং ন্যায় সঙ্গত যুক্তির প্রমাণ পান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জাপানের সফল স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার আলোকে বাংলাদেশেও অনুরূপ ব্যবস্থা প্রচলন করেছিলেন। এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত রাষ্ট্রের কার্যকরী মডেলের অনুকরণে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর আমলে নেয়া পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে বাংলাদেশের সম্ভাব্য জিডিপি ১২ থেকেও বেশি হতে পারতো মর্মে বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদরা অভিমত দিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

গবেষক মাজহারুল আনোয়ার বলেন,যেভাবে বঙ্গবন্ধু পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে, তাতে এটি স্পষ্ট যে এটি একটি দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, যার পরিকল্পনায় দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়েছে।ফারহানা আক্তার, সহযোগী অধ্যাপক

গবেষক ফারহানা আক্তার,বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনা নিয়ে তার ধারাবাহিক আলোচনার অষ্টম পর্ব উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, কুদরত ই খুদা শিক্ষা কমিশন বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষানীতি। প্রকৃত শিক্ষিত,স্বশিক্ষিত এবং ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিক তৈরিতে এর গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি বাংলাদেশ সরকারকে সুচিন্তিত ভাবে ড. কুদরত ই খুদা কমিশনের শিক্ষা নীতিসমূহ বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানান।

মোশফিক কাজল বলেন,১৯৭৫সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন প্রশাসনিক ব্যবস্থার যাত্রা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই ১৫ আগস্ট সপরিবারে নিহত হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো সক্রিয়। তিনি ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর সপরিবারের শাহাদাত বরণকারী সদস্যদের

রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

কাজী ফারজানা ইয়াসমিন

কাজী ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, যে উন্নয়নের স্বাদ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে উপভোগ করতে পারে সেটাই জাতীয় উন্নয়ন, সেটাই প্রকৃত উন্নয়ন।

 

পিএইচডি গবেষক ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, বঙ্গবন্ধু দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন।প্রতিকূল অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সামাল দিতে বঙ্গবন্ধু ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’-এর সূচনা করেছিলেন।

 

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা’র সহযোগী অধ্যাপক,বিভাগীয় প্রধান ও ডেইলি প্রেসওয়াচ সম্পাদক দিপু সিদ্দিকী। সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে সংযুক্ত ছিলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুদে ভক্ত বিএএফ শাহীন কলেজ’র (ইংলিশ ভার্সন) স্কুলের টিউলিপ শাখার শিক্ষার্থী শাদাব হাসিন, জান্নাতুল ফেরদৌস তিথি, রাজশাহী থেকে ড.মনোয়ার ও যশোর থেকে নুর এ আলম জাহিদ।

Share: