পার্থ-অর্পিতা গ্রেফতার, দিল্লিতে মমতা-মোদী বৈঠক

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ-অর্পিতা। অনুব্রত ও তার সঙ্গীদের জেরা চলছে। আরো জেরা করা হচ্ছে সস্ত্রীক অভিষেককে। জানা যায়, এই পটভূমিতেই দিল্লিতে মমতা-মোদী বৈঠক হওয়ার কথা। খবর এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) দিল্লি সফরে যাচ্ছেন মমতা। শুক্রবার (০৫ আগস্ট) বিকেল সাড়ে চারটের সময় প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। আর সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার সময় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর এই প্রথমবার তার সঙ্গে দেখা করবেন মমতা। সময় বের করতে পারলে সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলেও যাবেন বলে জানা গেছে।

এদিকে নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে তৃণমূল নেত্রী মমতার সঙ্গে আলাদাভাবে সাক্ষাত করলে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতা-কর্মীদের মনোবল ধাক্কা খাবে বলে জানিয়ে এসেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দাবি করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী যেন মমতার সঙ্গে দেখা না করেন।

অমিত শাহের কাছে গিয়ে শুভেন্দু ও সুকান্ত বলেছিলেন, মমতার দলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে বিজেপি। এই সময়ে মমতার সঙ্গে মোদী আলাদা বৈঠক করলে, রাজ্য বিজেপির মমতা-বিরোধিতা ও আন্দোলনে জল ঢালার সামিল হবে। তবে এ বিষয়ে অমিত শাহ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যে প্রধানমন্ত্রীর সময় চেয়েছেন, সে বিষয়েই তিনি অবগত নন।

মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক। এর আগেও দিল্লি এসে অনেকবারই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মমতা। কংগ্রেস ও সিপিএম নেতারা অতীতে বহুবার অভিযোগ করেছেন, মোদী-মমতার রাজনৈতিক সমঝোতা নিয়ে। ব্রিগেডের জনসভা থেকে সিপিএম সারদা নিয়ে মোদী-মমতা সমঝোতার অভিযোগ করেছে।

কিন্তু অন্যবারের তুলনায় এবারের পরিস্থিতি পুরোপুরি আলাদা। রাজ্যে দুর্নীতিতে সিবিআই-ইডির তদন্ত চলছে। পার্থ-অর্পিতার একের পর এক সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে ইডি। বুধবারও তারা শান্তিনিকেতনে গিয়েছিল এরকমই কিছু বাড়িতে তল্লাশি চালাতে। অর্পিতার বাড়ি থেকে ৫০ কোটি টাকা ও প্রচুর গয়না উদ্ধার করেছে ইডি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতার ও প্রচুর গয়নার হদিস মেলার পরিপ্রেক্ষিতে মোদী-মমতার আসন্ন বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ।

এসব কারণে একপ্রকার বিব্রতই তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী। ইতোমধ্যে পার্থ-অর্পিতার বাড়িতে ইডির তল্লাশি ও সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সম্পত্তির খোঁজ পাওয়ার পর তৃণমূল থেকে পার্থকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তার মন্ত্রীপদও গেছে।

কিন্তু তারপরেও সিপিএম সাংসদ ও আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য অভিযোগ করেছেন, যা সামনে এসেছে, তা কিছুই নয়। কালীঘাটের বাড়িতে তল্লাশি না হলে আসল জায়গা বাদ থেকে যাবে। কংগ্রেসও মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে।

Share: