ভয়ংকর যুদ্ধ ড্রোনের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত

প্রথমবারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এবং বোমা ফেলতে সক্ষম একটি মানবহীন কমব্যাট (যুদ্ধ) ড্রোনের সফল ফ্লাইট পরিচালনা করেছে ভারত। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১ জুলাই) এই ড্রোনের পরীক্ষা চালিয়েছে দেশটি। ছোট হলেও, এই পরীক্ষাটি ভারতের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্টিলথ উইং ফ্লাইং টেস্টবেড (সুইফট) মূলত ‘রিমোটলি পাইলটেড স্ট্রাইক এয়ারক্রাফ্টের (আরপিএসএ) একটি ছোট সংস্করণ। এটি প্রায় ১৫ মিনিটের জন্য কর্ণাটকের চিত্রদুর্গায় অবস্থিত অ্যারোনটিক্যাল টেস্ট রেঞ্জ থেকে উড্ডয়ন করা হয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে একজন ডিআরডিও বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, ‘একটি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিতভাবে অপারেট করা গেছে, ড্রোনটি নিখুঁত ফ্লাইট প্রদর্শন করেছে, যার মধ্যে টেক-অফ, ওয়ে পয়েন্ট নেভিগেশন এবং স্মুথ টাচডাউন রয়েছে।’

এই ফ্লাইটটি ভবিষ্যতে মনুষ্যবিহীন বিমান প্রযুক্তি এবং কৌশলগত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে স্বনির্ভরতার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও মনে করছেন তিনি।

ড্রোনটির এয়ারফ্রেম, আন্ডারক্যারেজ, পুরো ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ এবং সুইফটের এভিওনিক্স সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে দেশীয়ভাবে, যদিও ড্রোনটিতে রাশিয়ান টার্বোফ্যান ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে।

তবে সুইফটের এই ফ্লাইটের ওজন এক টনেরও বেশি। এছাড়া আরো বড় আরপিএসএ তৈরিতে ফ্লাইং কন্ট্রোল, ন্যাভিগেশন এবং অন্যান্য জিনিসপত্রের জন্য আরও বেশি প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন।
সূত্র অনুযায়ী, ফ্লাইটটির আরও কিছু ট্রায়াল প্রয়োজন হবে। তারপর, মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা কমিটিরও এর পরবর্তী পদক্ষেপ অনুমোদন করতে হবে। এই আরপিএসএ তৈরিতে খরচ পড়বে কয়েক হাজার কোটি টাকা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশীয় কাবেরি অ্যারোইঞ্জিন দিয়ে আরপিএসএকে আরও শক্তিশালী করা হবে, কারণ এতে আফটারবার্নারের প্রয়োজন হবে না।
ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর কাছে বিপুল সংখ্যক ইউএভি রয়েছে (মানবহীন আকাশযান), যা প্রধানত ইসরায়েলের তৈরি। আইএএফও’র আরও রয়েছে ইসরায়েলি ‘হারোপ কিলার’ বা কামিকাজ ড্রোন, এর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র কাজ করে শত্রুর লক্ষ্যবস্তু এবং রাডার বিস্ফোরণ ঘটাতে।

এছাড়াও টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ‘প্রজেক্ট চিতা’র অধীনে তিন হাজার ৫০০ কোটি টাকা বাজেটের একটি আপগ্রেড প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া হয়েছে, যেখানে প্রায় ৮০-৯০টি ইসরায়েলি হেরন ইউএভি লেজার-গাইডেড বোমা এবং এয়ার থেকে গ্রাউন্ড অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

কিন্তু ভারতে স্যাটেলাইট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং শত্রুর লক্ষ্যবস্তুতে মিসাইল নিক্ষেপ করতে পারে এমন পূর্ণাঙ্গ মানবহীন কোনো ইউসিএভি নেই।
এদিকে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ৩০টি হান্টার কিলার এবং এমকিউ-৯বি প্রিডেটর বা সি গার্ডিয়ান ক্রয়ের প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে। এই অস্ত্র সংগ্রহে ২২ হাজার কোটি রুপি প্রয়োজন। যা এমন পরিস্থিতিতে সরকার দেশীয়ভাবেও প্রতিরক্ষা উপকরণ তৈরির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করছে।
Share: