যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাশিয়ার ‘প্রতিশোধ’, ছাড় পাননি বাইডেনও

ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত রাশিয়া। এর পাল্টা জবাব হিসেবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়াসহ নিয়েছে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে মস্কো। তারই ধারাবাহিকতায় এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও বড় পদক্ষেপ নিল দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন ও দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) প্রধান উইলিয়াম বার্নসসহ ৯৬৩ জন মার্কিন নাগরিকের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে রাশিয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘শত্রুতামূলক’ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ‘প্রতিশোধ’ নেওয়া অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রলালয়। খবর রয়টার্সের।

পৃথকভাবে, কানাডার বিরুদ্ধে জারি করা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নতুন করে আরও ২৬ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে রাশিয়া। কানাডার প্রতিরক্ষা প্রধান, প্রতিরক্ষা শিল্পের নির্বাহী এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্ত্রী সোফি গ্রেগোয়ার ট্রুডোও আছেন এই তালিকায়।

প্রথমবারের মতো নিষিদ্ধ আমেরিকানদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করে রুশ মন্ত্রণালয় বলছে, মস্কোর বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের নেওয়া নানা ‘বৈরী পদক্ষেপ’ এখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই বুমেরাং হয়েছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে যথাযথ জবাব দেওয়ার ওপর জোর দিয়েছি।

এর আগে মঙ্গলবার (১৭ মে) জ্বালানি খাত নিয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা ইউরোপের জন্য হবে ‘আত্মহত্যার’ শামিল। এটা অবশ্যই ইউরোপের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তবে তাদের সিদ্ধান্ত তাদের অর্থনীতিকেই হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে।

জ্বালানি তেলের ব্যবসা নিয়ে পুতিন বলেন, ‘পুরোনো মডেলে আর ব্যবসা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। সময় ও চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়িক নীতিও পরিবর্তন করতে হবে। তেল নিষ্কাশনও শেষ কথা নয়। আমাদের চিনতে হবে কারা আমাদের প্রকৃত ভোক্তা। তাদের সঙ্গে একটি চেইন তৈরি করতে হবে।’

এ ছাড়া রাশিয়ার তেল কোম্পানিগুলোকে আশ্বাস দিয়ে পুতিন জানান, তাদের যত ধরনের সাহায্য প্রয়োজন সরকার তা দেবে, বিশেষ করে হাইড্রোকার্বন প্রস্তুতকরণে। তবে তেল বিক্রি হবে রুশ মুদ্রা রুবলে।

এদিকে সোমবার (১৬ মে) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক জানান, রাশিয়ার ওপর আরও বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার তেলের ওপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে। আমরা জানি, তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা কতটা কঠিন। তবুও বিষয়টি নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে ভেবে আসছি–কীভাবে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যায়। এ বিষয়ে আরও আলোচনার দরকার আছে বলে মনে করি। আশা করছি, সামনের দিনগুলোতে নতুন করে নিষেধাজ্ঞার খসড়া চূড়ান্ত হবে।’

Share: