sr

রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের পদত্যাগের পর দেশজুড়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারপন্থী ও সরকারবিরোধীদের মধ্যকার এ সংঘর্ষে দেশটির এক সংসদ সদস্য (এমপি) নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও অন্তত ডজন খানেক সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।

চলমান আন্দোলনের মুখে সোমবার (০৯) পদত্যাগের ঘোষণা দেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। এরপরই রাজধানী কলম্বোয় সরকারপন্থী ও সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদর মধ্য সংঘর্ষ শুরু হয়।

শ্রীলঙ্কা পুলিশের বরাত দিয়ে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অমরাকীর্থি আথুকোরালা নামের ওই এমপি নিত্তামবুয়া এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সামনে পড়েন। এ সময় তার গাড়ির পথরোধ করলে তিনি গুলিবর্ষণ করেন। এতে দুইজন গুরুতর আহত হন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে কাছের একটি ভবনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন ওই এমপি। পরে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। এই সংকটের জন্য সরকারের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছে দেশটির জনগণ। গত ৯ মে থেকে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে বিরোধীরা।

টানা আন্দোলনের মুখে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে পদত্যাগ করতে রাজি না হলেও, চাপের মুখে নিজের পদ ছাড়তে রাজি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। মন্ত্রিসভার এক বিশেষ বৈঠকে ছোট ভাই ও দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার অনুরোধে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। 

এদিকে শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন গোতাবায়া।

শনিবার (৭ মে) শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম কলম্বো পেজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট বিরোধীদলীয় নেতাকে টেলিফোন করেছেন এবং দেশের বর্তমান সংকটের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণে অনুরোধ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বিরোধীদলীয় নেতা প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, তিনি তাদের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

এর আগে চরম অর্থনৈতিক সংকট ও দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও তার সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ দাবিতে ধর্মঘট শুরু করে জনগণ। শুক্রবার (০৬ মে) থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় স্কুল-কলেজ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আসে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা। 

আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (৬ মে) শ্রীলঙ্কার প্রধান রফতানি প্রক্রিয়া অঞ্চল থেকে কমপক্ষে তিন হাজার কারখানা শ্রমিক ধর্মঘটে যোগ দেন। ট্রেড ইউনিয়ন নেতা রাভি কুমুদেশ বলেন, আমরা প্রেসিডেন্টের (গোতাবায়া রাজাপক্ষে) নীতিগত ভুলগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছি, যা দেশের অর্থনীতিকে দুর্দশার দিকে নিয়ে গেছে। তাকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।