‘১৪৫ জনকে ক্রসফায়ার দিয়েছিল ওসি প্রদীপ’

দিপু সিদ্দিকীঃ

আলোচিত মেজর সিনহা হত্যা মামলার আসামি প্রদীপ কুমার দাশ টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) থাকাকালে ১৪৫ জনকে ক্রসফায়ার দিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে কক্সবাজার আদালত প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি করা হয়।

মেজর সিনহা হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ফাঁসির দাবিতে ‘টেকনাফের সর্বস্তরের জনসাধারণ’ এর ব্যানারে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রদীপ কুমার দাশ টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) থাকাকালে নিরীহ লোকজনকে হয়রানি ও নির্যাতন করেছেন। তিনি ক্রসফায়ার দিয়ে ১৪৫ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছেন। এছাড়া তার সময়ে ধর্ষণ, অপহরণসহ নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হলেও কোনো প্রতিকার পায়নি অনেকেই। তাই তারা সিনহা হত্যা মামলার রায়ের দিকে চেয়ে আছেন। এই মামলায় ওসি প্রদীপের ফাঁসি হলে তারা সান্ত্বনা পাবেন। তাদের দাবি, আজকে মামলার রায়ে প্রদীপ কুমার দাশের ফাঁসি হোক।

এদিকে সিনহা হত্যা মামলায় আসামিদের সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানিয়েছে সিনহার পরিবার।

সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস আসামিদের ফাঁসির প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমার ভাইকে যারা গুলি করে হত্যা করেছে, তাদের সবাইকে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হোক। আমার মতো আর কোনো বোনের বুক যেন খালি না হয়। অপরাধ করে কেউ যেন পার না পায়।’

তিনি বলেন, ‘মামলার আসামি ওসি প্রদীপ ও লিয়াকত হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত। আমরা প্রত্যাশা করছি, এই দু’জনের সর্বোচ্চ সাজা হবে। বাকি আসামিদের যেন অপরাধ অনুযায়ী সাজা দেওয়া হয়। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, এটাই যেন রায়ে প্রমাণ হয়।’

এই রায়ের মাধ্যমে দেশে ক্রসফায়ার বন্ধ হবে জানিয়ে শারমিন শাহরিয়া বলেন, ‘আমি মনে করি, এই রায়ের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ হবে। অপরাধীরা সতর্ক হবে। মানুষ সুবিচার পাওয়ার আশা রাখবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে।’

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় প্রদানের জন্য আজ সোমবার (৩১ জানুয়ারি) তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত। কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত এ রায় ঘোষণা করবেন।

প্রসঙ্গত, গত ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা দায়ের করে।


ঘটনার পাঁচ দিন পর ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এ চারটি মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় র‍্যাব।
Share: