প্রেস ওয়াচ ডেস্কঃ
তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই আতঙ্ক ভর করছে দেশটিতে বসবাসরত উইঘুর মুসলিমদের মধ্যে। তাদের উদ্বেগ বেইজিং-এর নতুন বন্ধু তালেবান হয়তো তাদেরকে চীনে ফেরত পাঠাতে পারে। সেক্ষেত্রে দেশে ফিরে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে তাদের। আর আফগানিস্তানে থেকে গেলেও বিপদের মুখে পড়তে হতে পারে।
অধিকার সংগঠনগুলো বলছে, তালেবান শাসনে আফগানিস্তানে বসবাসরত আনুমানিক দুই হাজার উইঘুরের জন্য বাজে পরিস্থিতির আশঙ্কা করছে তারা।
১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে স্বামীর সঙ্গে কাবুলে বসবাসকারী একজন উইঘুর নারীর সঙ্গে কথা বলেছে সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়া। তালেবানের দমনপীড়ন এবং নারীদের প্রতি তাদের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নিজের শঙ্কার কথা জানান এই নারী। একইসঙ্গে চীনে ফেরত পাঠানোর ভয়ও জেঁকে বসেছে তার মনে। তার ভাষায়, ‘তারা আমাকে হত্যা করতে পারে কিংবা চীনে ফেরত পাঠাতে পারে।’
১৯৬০-এর দশকে আফগানিস্তানে আশ্রয় নেওয়া এক উইঘুর দম্পতির সন্তান মামাত। তিনি জানান, তালেবান শাসনে আতঙ্ক ভর করেছে কাবুলের ৮০টির মতো উইঘুর পরিবারে।
কাবুলে নিজ পরিবারের সঙ্গে বসবাসরত মামাত জানান, রবিবার যখন তিনি তার সন্তানদের জন্য রুটি কিনতে গিয়েছিলেন তখন তালেবান সদস্যরা তাকে মারধর করে।
আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিমানবন্দরে মানুষের উপচেপড়া ভিড়ের কথাও উল্লেখ করেন মামাত। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, তুরস্কের মতো বিভিন্ন দেশ কাবুল থেকে বিমানযোগে তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে। আফগান নাগরিকরাও বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু কেউ উইঘুরদের খোঁজটুকুও নিচ্ছে না।
পশ্চিমা একটি গোয়েন্দা সূত্র বলছে, ভবিষ্যতে স্বাধীনতাকামী উইঘুরদের মোকাবিলায় সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েই চীন তালেবানকে সমর্থন জানাচ্ছে।
১৯৯০-এর দশকে উইঘুর জিহাদিদের সঙ্গে তালেবান একাধিক অস্ত্র চুক্তি করেছিল। কিন্তু এবার সে চিত্র বদলেছে। সুন্নি হিসেবে তালেবানের জন্য এটি সহজ ছিল না। কিন্তু তারা বাস্তবতা অনুধাবন করছে। ভবিষ্যৎ আফগানিস্তানে চীনের বড় ধরনের বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনসহ দেশ পুনর্গঠনে বেইজিং-এর কাছ থেকে বড় ধরনের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে তালেবান। কিন্তু এই জটিল রাজনীতির মারপ্যাঁচে আতঙ্ক ভর করছে আফগানিস্তানে বসবাসরত উইঘুর মুসলিমদের মধ্যে। সূত্র: রেডিও ফ্রি এশিয়া। জা/মা