‘জিয়া-মোশতাকের উত্তরসূরিরাই শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে’

প্রেস ওয়াচ রিপোর্টঃ

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান ও মোশতাকের প্রত্যক্ষ মদতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয় এবং তাদের উত্তরসূরিরাই বারবার বঙ্গবন্ধুর রক্তের ও আদর্শের উত্তরাধিকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে।’ তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধীরা মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে হত্যা করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।’

শুক্রবার (২০ আগস্ট) আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান (আমুস) আয়োজিত ‘১৫ আগস্টের ধারাবাহিকতায় ২১ আগস্ট’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতাবার্ষিকী উপলক্ষে এবং ২১ আগস্টে শতাব্দীর ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে এ সভার আয়োজন করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ জাতীয় জীবনে বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতিকে এগিয়ে নিতে হবে, তবেই জাতির পিতার প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।’

এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন সব দিকেই দক্ষ একজন রাষ্ট্রনায়ক। তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনামল এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু পৃথিবীতে একমাত্র নেতা, যিনি তাঁর জীবদ্দশায় একাধারে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন এবং স্বাধীনতা অর্জন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আজও হয়তো আমরা পরাধীন থাকতাম।’

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু অল্প দিনেই বিশ্বনেতায় পরিণত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্বসভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত। একদিকে শোষক আর একদিকে শোষিত, আমি শোষিতের পক্ষে। বিশ্বসভায় তিনি বাংলাদেশের নেতা হিসেবে কথা বলেননি, বিশ্বনেতা হিসেবে কথা বলেছেন। তিনি অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে এই পয়সা দিয়ে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের জন্য খরচ করতে বলেছিলেন। জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে তিনি উপদেশ দিতেন বিশ্বের নীতি কী হওয়া উচিত।’ বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত দেশে পরিণত হতো বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট দুটি ঘটনাই একসূত্রে গাঁথা। এটি নিছক কোনও হত্যাকাণ্ড নয়। এর পেছনে ছিল গভীর ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রের পেছনে বিএনপি-জামায়াত ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্র সরাসরি জড়িত। তাই এসব ষড়যন্ত্রকারীর মুখোশ উন্মোচন করা সময়ের দাবি।’ এ জন্য শিগগিরই একটি নিরপেক্ষ জাতীয় কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনের কুশীলবদের চিহ্নিত করে জাতির সামনে তা উপস্থাপন করা হবে বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সংগঠনের সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান শাহীনের পরিচালনায় ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. শাহাদাত হোসেন, পিএসসি’র সাবেক সদস্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আনোয়ারা বেগম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালুদ্দিন আহমেদ, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শাহিনুর রহমান, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলাম শোয়েব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা সামছুজ্জামান।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আফরিনা মুস্তারী, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান-সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও শহীদ এমপি নূরুল হক হাওলাদারের কন্যা জোবায়দা হক অজন্তা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন মৃদুল, আজহারুল ইসলাম অপু, আহমাদ রাসেল, প্রকৌশলী এনামুল হক মনির ও সিলেট জেলা শাখার সভাপতি আতাউর রহমান।

Share: