৫০ বছরে রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন হয়নি: মির্জা ফখরুল

দিপু সিদ্দিকী /প্রেসওয়াচ রিপোর্টঃ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘ দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৫০ বছর পরও আমাদের গণতন্ত্রে রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি। আমরা বারবার এটা বলেছি, আওয়ামী লীগ সরকার বেআইনিভাবে, জোর করে ক্ষমতায় রয়েছে। জনগণের সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে। এ জন্য দেশের মানুষ স্বাধীন, এ কথা বলতে পারি না। আমাদের স্বাধীনতা বিপন্ন। আমরা শৃঙ্খলিত হয়েছি।’

শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও মোনাজাত শেষে  সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এ সময় বক্তব্যের শুরুতে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানান।

‘ঢাকা শহরে অঘোষিত কারফিউ চলছে’ অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। আজকে ঢাকা শহরের যে অবস্থা, তা আমাদের কারও কাম্য নয়। সারা শহর দেখে মনে হচ্ছে অঘোষিত কারফিউ এর মতো অবস্থা। জনগণের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং জনগণকে বাদ দিয়েই সরকার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে।’

এ সময় হতাশা প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এখানে আজকে যারা আমরা দাঁড়িয়ে আছি, তারা প্রত্যেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। ৫০ বছর পর বাংলাদেশের এই চেহারা দেখতে হবে, তা আমরা ভাবিনি।’

‘কেউ আমাদের প্রভূ হোক, চাই না’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু দেশ সন্দেহ নেই। ১৯৭১ সালে সহযোগিতা করেছে সন্দেহ নেই। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দুই দেশের যে অমীমাংসিত বিষয়—বিশেষত কোটি মানুষের সঙ্গে সম্পর্কিত পানি, তিস্তানদীর পানি ও অভিন্ন নদী সমস্যার সমাধান হয়নি। বারবার বলা হয়েছে তিস্তার পানি নিয়ে, ১০ বছর আগেও তারা বলেছে সমাধান করবে, কিন্তু করেনি। অথচ, একতরফাভাবে ফেনী নদীর পানি দিয়ে দিয়েছে।’

সীমান্তে হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গ তুলে ফখরুল বলেন, ‘আজকে সীমান্তে হত্যা বন্ধ হয়নি। আমার জানা নেই, বিশ্বের আর কোনও দেশে সীমান্তে এভাবে মানুষ হত্যা করা হয়। একজন বা দুই জন নয়, বছরে একশ, দুইশ হত্যাকাণ্ড ঘটছে সীমান্তে। এটা কীভাবে জাস্টিফাই করা হয় আমি জানি না। কিছুদিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন, তিনি বলেছিলেন, নো ক্রাইম, নো ডেথ। ক্রাইম হলে এর ট্রায়াল হতে হবে তো।’

‘তারপরও আমরা আনন্দিত, কানেক্টিভিটি হচ্ছে’ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই কানেক্টিভিটিতে আমাদের লাভ কী হচ্ছে; এ বিষয়টি কিন্তু জনগণকে জানানো হয়নি। তারপরও আমরা বলতে চাই, আমরা সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। কিন্তু আমাদের প্রভূ হোক, এটা চাই না কখনও। আমাদের জনগণও চায় না।’

সরকার করোনা নিয়ে উদাসীন অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা করোনার কারণে বাইরের কর্মসূচিগুলো বাতিল করেছি। করোনা আগ্রাসী আচরণ করছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার উদাসীন। তারা বিদেশি মেহমানদের নিয়ে ব্যস্ত, দেশের মানুষের কী হবে—কী হবে না, তা নিয়ে তাদের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।’

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, জয়ন্তী কমিটির সদস্য আবদুস সালাম, চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান ও শামসুদ্দিন দিদার উপস্থিত ছিলেন।

Share: