ডেইলি প্রেসওয়াচ রিপোর্টঃ
হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির প্রয়াত শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আদালতে হত্যা মামলা দায়েরের করায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মামলার বাদী মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘মামলা দায়েরের পর মামুনুল হকের বাহিনী ফেসবুকে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। সেখানে তারা বলছে আমাকে মেরে ফেলবে, আমাকে হত্যা করবে। সামনে পেলে জুতাপেটা করে মারবে। আরও নানারকম হুমকি দিচ্ছে।’
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে একই ঘটনায় গত ১৭ ডিসেম্বর মাঈন উদ্দিন আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন। এরপর এই হত্যা মামলাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র দাবি করে গত ২৩ ডিসেম্বর হাটহাজারী মাদরাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন সংগঠনটির বর্তমান আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। ওই সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে শফীপন্থী হেফাজতে ইসলামের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে মাঈন উদ্দিন বলেন, সংবাদ সম্মেলনে শাহ আহমদ শফীর বড় ছেলে মাওলানা ইউছুপ উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু যখনই এই খবরটি জানাজানি হয়, তখন তার বাসা ঘেরাও করে রাখা হয়। সে সংবাদ সম্মেলনে আসলে তাকে লাঞ্চিত করা হবে, তাকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে তিনি সংবাদ সম্মেলনে আসতে পারেননি। শুধু মাওলানা ইউছুপ নয়, আমাদের সবাইকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমার ভগ্নিপতি (আহমদ শফী) যেদিন মারা যান, ওইদিন আজগর আলী হাসপাতালে আমার ভাগিনা আনাস মাদানীকে আমার সামনে মারধর করা হয়। তার বাবার মরদেহের সামনে তার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। জুনায়েদ বাবুনগরী নিজেই মোবাইল করে হুমকি দিয়েছেন, আনাস মাদানী যদি জানাজায় উপস্থিত হন তাহলে তখন একসঙ্গে দুই লাশ দাফন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাবুনগরীর সরাসরি হস্তক্ষেপে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্র শিবির, বিএনপি, নিষিদ্ধ ঘোষিত হুজি, হিযবুত তাহরীরসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা জানাজায় অংশ নিয়েছে।’সংবাদ সম্মেলনে গত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহীসহ হেফাজতে ইসলামের এই অংশের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মঈনুদ্দিন রুহী বলেন, আমাকেও ফেসবুকে মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছি।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মঈনুদ্দিন রুহী বলেন, ‘ময়নাতদন্তের জন্য হুজুরের লাশ তোলা হবে। যারা লাশ তোলার কথা বলছেন, তারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য এটি প্রচার করছে। জনগণের আবেগকে কাজে লাগিয়ে তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে।
শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার দ্রুত বিচার দাবি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক মামলা আছে পিবিআই তদন্তের পরেও বছরের পর বছর পড়ে থাকে। আমরা এই কারণে দ্রুত বিচার দাবি করছি।