নগরজুড়ে যত্রতত্র পশু জবাই

নগরজুড়ে কোরবানি দিয়েছেন ঢাকাবাসী। বাসাবাড়ির সামনে, অলিগলিতে সর্বত্রই পশু জবাই দেওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পশু জবাই দেওয়ার জন্য স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও সেসব স্থানে কোরবানি দেওয়া হয়নি। কেবল তা-ই নয়, কোরবানির পশুর বর্জ্য অনেকেই ড্রেনে ফেলেছেন। শনিবার (১ আগস্ট) নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সকালে খিলগাঁও ,বাসাব,নয়াবাগ,কুসুমবাগ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, গরুর মাথা গলির ড্রেনের কিনারায় রেখে জবাই দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি গরুর নাড়িভুঁড়ির ময়লা ড্রেনে ফেলা হয়। তবে কেউ কেউ সিটি করপোরেশনের দেওয়া পলিব্যাগে বর্জ্য রেখেছেন।

নগরজুড়ে যত্রতত্র পশু জবাই

কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা হাজি নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের ট্রাক বা কর্মীরা আসতে অনেক দেরি হয়। তাই ড্রেনের মধ্যে পশু জবাই দিয়েছি।’ পশুর বর্জ্য কেন ড্রেনে ফেললেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ঠিক হয়নি। সবাই ড্রেনে ফেলছে, সে জন্য আমরাও ফেলেছি।’

একই চিত্র দেখা গেছে মোহাম্মদপুর এলাকায়। সেখানে অলিগলিতে সর্বত্রই কোরবানির পশু জবাই দেওয়া হয়েছে। এই এলাকায় সড়কের বিভিন্ন অংশে কোরবানি পশুর রক্ত বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে সয়লাব হয়ে থাকতে দেখা যায়। তখনও সিটি করপোরেশন কর্মীদের দেখা যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই বাসার সামনের রাস্তায় পশু জবাই দিয়েছেন নগরবাসী।

পশু কোরবানির পশু 

জানা গেছে, এ বছর নগরীতে পশু জবাই দেওয়ার জন্য ৩৩১টি নির্ধারিত স্থান চিহ্নিত করে দিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। এরমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৫৬টি ও দক্ষিণ সিটিতে ৭৫টি স্থান রয়েছে। কিন্তু এসব স্থানে পশু জবাই দিতে যাননি অধিকাংশ নগরবাসী।

এ বিষয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এ বছর ২৫৬টি স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছি। আমি কয়েকটি স্থান ঘুরে এসেছি, কিন্তু সেসব জায়গায় কেউ আসেনি। আমাদের এই মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। এই শহরটাকে রক্ষা করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই নির্ধারিত স্থানে গরু কোরবানি দেই। এটি আমার-আপনার সবার শহর।’

এদিকে সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে দেখা গেছে। এতে কোরবানিদাতাদের বিপাকে পড়তে হয়েছে। তবে দুপুরের পর তীব্র রোদের কারণে রাস্তাঘাটে পশুর রক্ত তেমন একটা দেখা যায়নি। কোরবানিদাতারা নিজেরাই রক্তাক্ত জায়গা পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেলেছেন।

এদিকে দুপুর দুইটা থেকে বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু করেছে দুই সিটি করপোরেশন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম সংস্থার সাঈদনগর কোরবানি পশুর হাট থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু করেন।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ডিএসসিসি’র মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস সকালে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘কোরবানির পর পশুর যে বর্জ্য সৃষ্টি হবে, দুপুর ২টা থেকে আমরা সেই বর্জ্য সম্পূর্ণরূপে অপসারণের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। ইনশাআল্লাহ গতবারের মতো এবারও  ঢাকাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে পারবো। পরিচ্ছন্নতাকর্মী থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউ ছুটিতে নেই। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারিত হবে।’

ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করা হবে। আমাদের নতুন ওয়ার্ডগুলোতেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কার্যক্রম শুরু করেছি।’

Share: